নাসির নগরে হিন্দুদের উপর আওয়ামীলীগের হামলা

এখন তো এক কথাতেই পরিষ্কার যে আওয়ামী পশু ও মৎস মন্ত্রী ছায়েদুল হকের উষ্কানীতেই আহলে সুন্নাতের দলবল নাসির নগরে হিন্দুদের উপর এই পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছে, তাদের ঘর বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে এবং তাদের উপাসনালয়ে হামলা করেছে। ২০০১ সালে আওয়ামীলীগ ইলেকশনে গো হারার পর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হিন্দুদের উপর অত্যাচার করে সেই অপঃকর্মের ভার বি এন পি’র উপর চাপিয়ে দিয়েছিলো কোনো কারন ছাড়াই। আর মিডিয়া সন্ত্রাসীরা এবং পশ্চিমারা সেটা লুফে নিয়ে বি এন পি নিন্দা শুরু করেছিলো। যুগের পর যুগ একটা কথা এই আওয়ামী মিডিয়া সন্ত্রাসীরা তৈরী করেছিলো যে বি এন পি সামপ্রাদ্যিক দল, তারা হিন্দুদের উপর অত্যাচার করে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু গত ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় হিন্দুদের উপির অত্যাচার করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা খেয়েছিলো আওয়ামীলীগের প্রাক্তন এম্পি। জানা গিয়েছিলো যে সেখানে দুই আওয়ামী গ্রুপের সন্ত্রাসের কারনে মাঝে দিয়ে চাপা পড়েছিলো হিন্দুরা।

এইবার নাসির নগরে হামলার পেছনে প্রধান ব্যাক্তি হিসেবেই চলে এসেছে মন্ত্রী সায়েদুল হকের নাম। হিন্দুদের মালাউনের বাচ্চা বলে গালি দিয়ে তার সাঙ্গ পাঙ্গদের উষ্কে দিয়ে এখনও এই আওয়ামী নেতা মন্ত্রী পদে বহাল রয়েছে। আর আওয়ামীলীগের সবচাইতে বড় সন্ত্রাসী মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন ছায়েদুল হক এই কথা বলেছে এটা তারা বিশ্বাস করেনা, পারলে যেন প্রমাণ দেখায়। কিন্তু বিধি বাম। চারিদিক থেকেই এখন মানুষ সত্যটা জানে। এই ফেসবুক ও সামাজিক মাধ্যমের যুগে কিছুই লুকিয়ে রাখা যাবে না। সবাই জেনে গেছে যে ব্রাক্ষনবাড়িয়ার এই হিন্দুদের উপর হামলা করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এবং তারাই হচ্ছে আসলে মূল সাম্প্রদায়িক শক্তি বাংলাদেশে।

মতিঝিলে যখন কুরআন পুড়লো তখন গভীর বিশ্লেষণী প্রশ্নগুলা আসে না না, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যখন একের পর মানুষ মারা যায় তখন স্বাভাবিক প্রশ্নগুলাও আসে না কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নাসিরনগরের ঘটনার পর বুইড়া মুতা-মামুন থেকে কচি ইমরান শুদ্ধা সব শাহবাগিরা সেই হিন্দু ছেলে একজন সাধারণ জেলে সুতরাং ছবি আপলোড হইছে অন্য আইপি থেকে ব্লা ব্লা ব্লা এইসব গভীর ফরেনসিক এনালিসিস মার্কা প্রশ্ন শুরু কইরা দেয় তখন পরিস্কার বুঝা যায় এইটা একটা চৌদ্দ নম্বর দেশ। এ দেশেই সম্ভব বডি ল্যাঙ্গুয়েজ থেকে শুরু করে আইপি এড্রেস ইত্যাদি ইত্যাদি ফেইসবুক ক্রাইম সিন ইনভেস্টিগেশন দিয়া যার যার তালগাছ উঁচুতে তুইলা ধরা। যখন সুবিধা তখন কনস্পিরেসি থিওরি আর যখন অসুবিধা তখন কিছু বুঝিনা বাল তলা দিয়া খায়া যাওগা আমি একটা নিষ্পাপ বাবু এইরকম চৌদ্দ নম্বর মানুষে ভর্তি দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা থেকে শুরু করে দুনিয়ার সমস্ত গ্যাঞ্জাম যদি না হয় তাইলে তাই হবে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য। নাসিরনগরে হিন্দুদের উপর আক্রমণ মন্দির/মুর্তি এসব ভাঙচুরের ঘটনাগুলো আসলে আওয়ামী লীগের জেলা কমিটি বনাম মন্ত্রীর অনুসারী এ দুই গ্রুপের মারামারির কারণে ঘটতেছে/ সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে দিয়ে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে ঘায়েল করতেছে/ এই ধরণের একটা কথা অনেকের কাছে দেখতেছিলাম। আওয়ামী লীগের যা ট্র্যাক রেকর্ড এবং অভ্যাস, এমন হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে যেহেতু নির্ভরযোগ্য অথবা ব্যাক্তিগত কোন সূত্রে কিছু জানিনাই তাই কোন মতামত পুরোপুরি গ্রহণ করিনাই।

তারপর এখন যখন দেখলাম আওয়ামী লীগের স্থানীয় তিন নেতাকে দল থেকে বহিস্কার করা হইছে তখন আর কোন সন্দেহ থাকলো না। আসলে আর কোন প্রমাণের দরকার নাই আমার বিশ্বাস করার জন্য। ঘটনা তাইলে সত্য। নিজেদের গ্রুপিং এর বিষয়টা না থাকলে হিন্দু-বৌদ্ধদের উপর আক্রমণকারী স্থানীয় লীগারগুলা মানসিক রোগী হয়ে যায়, অথবা বেশিরভাগ সময় বিএনপি জামায়াতের কর্মী হয়ে যায়। সবসময় সব জায়গায় এইরকমই হইয়া আসতেছিলো। কিন্তু এখন দল থেকে বহিস্কার হইছে। তার মানে গ্রুপিং। দুই গ্রুপের একটা গ্রুপ আপারহ্যান্ড পাইয়া গেছে খুব দ্রুতই। মন্ত্রী সাবকেও এখন একটা বেমক্কা শব্দ দিয়া ফাঁসানো হইছে, পুরাই ক্লাসিকাল বাংলাদেশি প্রগিতিশীল কোঅর্ডিনেটেড অর্কেস্ট্রা।

হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগকে অভিনন্দন জানাই ধর্মীয় এবং সাম্প্রদায়িক হানাহানিকে নিজেদের আভ্যন্তরীণ মারামারির রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহার করে পুরা বিষয়টাকে অন্য একটা মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। এইটা খুব উন্নত একটা জয় বাংলা হচ্ছে। আমরা সবাই অনেক ব্যস্ত। বাংলাদেশের নামও অনেক রৌশন হবে।

১/ তুমি মালাউন, আমি ম্লেচ্ছ। আসো খেলবো, খেলা হবে।

দিদি তো এইটাই চায়/ গল্পের নাম জয় বাংলা।

২/ সরকারের যারা স্কৃপ্ট লেখে তাদের জন্য মাঝে মাঝে আমার খারাপ লাগে। এরা এতো বলদা কেন? জঙ্গি ঘটনার সময় সব অখাদ্য খিচুড়ি বানাইছে। এখন সাম্প্রদায়িক ঘটনার সময়ও আউলা ঝাউলা করে ফেলতেছে। মসজিদে গিয়ে মুর্তি লুকায়া রাখবে কোন মুসলমান, এইটা কেউ বিশ্বাসই করতো না। তবে এদের ভাগ্য ভালো যে সাংবাদিক ভাইয়েরা স্কৃপ্টের সমস্যাগুলা পোষায়া দেয়। নাইলে যে কি হতো!

৩/ মাননীয় অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার চাকা চালু রাখার জন্য নতুন যে পর্যায় শুরু হইতেছে এইটাকে আমি ভয় করি। এ ভয়ের শুরুতে একটা ভূমিকা ছিলো খুশবন্ত সিং এর। খুশবন্ত সিং এর সেরা অনুবাদক হলেন আনোয়ার হোসেন মনজু। তার অনুবাদ করা দিল্লী বইটার শেষ কিছু বাক্য পড়া যাক, যদিও পুরো বইটা না পড়লে এ উপসংহারের রস আস্বাদন হয় না।

“ঘুমিয়ে পড়েছিলাম চেয়ারে বসেই। গুরুদুয়ারার দিক থেকে হট্টগোল ভেসে আসায় ঘুম ভেঙে গেলো। দৌড়ে বাগানে এলাম। তখনো ভোরের অন্ধকার। কিন্তু সবাই মনে হলো ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। কিংবা জানালা দিয়ে গুরুদুয়ারার দিকে দেখছে। ভাগমতী টের পেয়ে দৌড়ে এসে চিৎকার করছে ‘শীগগীর ঘরে চলো’। আমি ওর কথায় কান দেই না। ঝোপের মাঝ দিয়ে দেখতে থাকি।
বুধ সিংকে গুরুদুয়ারার চত্বরে দেখলাম খোলা কৃপাণ হাতে গ্রন্থ সাহিব ও গুরু ভাই এর দেহভস্মের পাশে। উন্মত্ত দরবেশের মতো সে নাচছে। সমবেত লোহার রডধারী হিন্দু যুবকদের উদ্দেশ্যে গালি ছুঁড়ে দিচ্ছে। শালা মাদারচোত বানচোৎ তোমরা আমাদের পবিত্র গ্রন্থ জ্বালিয়েছো। তোমাদের বেদ ও শাস্ত্র এভাবে পুড়বে।

যুবকরা তাকে নিয়ে ইঁদুর বিড়াল খেলে। রড দিয়ে তার পেছনে খোচা দেয়। আবার সামনে গেলে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে। বৃদ্ধ বুধ সিং ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। এতোগুলো মানুষের সাথে সে কি করে লড়বে? একজন তার কাঁধে রডের আঘাত করতেই সে শেষবারের মতো ভূপাতিত হয়। হাত থেকে কৃপান খসে পড়ে। একজন কৃপান তুলে নিয়ে বুধ সিং এর পশ্চাতদেশে ঢুকিয়ে দেয়। দু’জন গিয়ে তার হাত পেছনে বেঁধে ফেলে। একজন কাঁচি এনে বুধ সিং এর দাড়ি কেটে দেয়। বুধ সিং যুবকের মুখে থুথু ছিটিয়ে দেয়। যুবক তাকে থাপ্পড় মারে। চুলের গোছা ধরে তাও কেটে নেয়। তারা আরো মজা করবে। একজন একটি টায়ার নিয়ে আসে। পেট্রোল দিয়ে টায়ারের ফাঁকা স্থান পূর্ণ করে আগুন জ্বালিয়ে অগ্নিগোলক বুধ সিং এর গলায় পরিয়ে দেয়। যেন আগুনের মালা। বুধ সিং আর্তনাদ করে মাটিতে গড়াগড়ি দেয়। যুবকরা অট্টহাসি হাসে আর শিখ বিজয়ের স্লোগান দেয় ব্যঙ্গ করে: বোলে সো নিহাল- সত শ্রী আকাল।”

You may also like...

Read previous post:
আবুল মাল কথন

বিভিন্ন সময় মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবাল মুহিত অকপটে তার মনের কথা প্রকাশ করেন। একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি, তার...

Close