পদ্মা সেতু বাংলাদেশের একটি বিশাল অবকাঠামো প্রকল্প, যার লক্ষ্য দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকার সাথে সংযুক্ত করা। সেতুটি পদ্মা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত হবে, যা বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী, এবং এটি দেশের জন্য উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক সুবিধা বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে পদ্মা সেতু প্রকল্প দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত, যার কারণে বিলম্ব ও ব্যয় বেড়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পকে ঘিরে দুর্নীতির কেলেঙ্কারি প্রথম 2011 সালে প্রকাশ্যে আসে যখন প্রকল্পের অন্যতম প্রধান অর্থদাতা বিশ্বব্যাংক দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়ম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পের জন্য $1.2 বিলিয়ন তহবিল প্রদানের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল, কিন্তু দুর্নীতির উদ্বেগের কারণে এটি তহবিল বিতরণ স্থগিত করে। বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের ফলে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক সহ অন্যান্য তহবিলদাতারা প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিলম্ব করে, অনুসরণ করতে বাধ্য হয়।
দুর্নীতির অভিযোগ কানাডিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম এসএনসি-লাভালিনকে কেন্দ্র করে, যা প্রকল্পের জন্য পরামর্শ পরিষেবা প্রদানের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। অভিযোগ করা হয় যে SNC-Lavalin চুক্তিটি নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশী কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়েছে এবং প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ সরকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
পদ্মা সেতু দুর্নীতি কেলেঙ্কারির তদন্ত কয়েক বছর ধরে চলে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) সহ একাধিক সংস্থা জড়িত ছিল। তদন্তে জানা গেছে যে SNC-Lavalin প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিল এবং চুক্তিটি নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশী কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়েছিল। কোম্পানিটিকে বাংলাদেশে ব্যবসা করা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, এবং বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
পদ্মা সেতু দুর্নীতি কেলেঙ্কারি বাংলাদেশের জন্য উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিলম্বের ফলে ব্যয় বেড়েছে, যা বাংলাদেশ সরকার এবং করদাতাদের দ্বারা বহন করা হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে এর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় দেশের সুনামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।