খালেদা জিয়া ৮০ এর দশকে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন, যখন তিনি জেনারেল এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন। তিনি ১৯৮৪ সালে বিএনপির প্রধান হন এবং ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনে দলকে বিজয়ী করার নেতৃত্ব দেন, বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হন।
খালেদা জিয়া দুইবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৫ আগস্ট, ১৯৪৫ সালে বাংলাদেশের দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার স্বামী, জেনারেল জিয়াউর রহমান, ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সালে তার হত্যার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। খালেদা জিয়া তার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে রাজনীতিতে জড়িত, এবং তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর বর্তমান চেয়ারপারসন।
তার প্রথম মেয়াদে খালেদা জিয়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি নীতি বাস্তবায়ন করেন। তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করেছেন এবং দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থায় (সার্ক) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
২০০১ সালে শুরু হওয়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মেয়াদ ছিল বিতর্ক ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভরা। তার সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছিল এবং বিরোধী দলগুলি তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার প্রয়াসে একের পর এক বিক্ষোভ ও ধর্মঘট শুরু করে। ২০০৬ সালে সামরিক বাহিনী সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং জরুরি অবস্থা জারি করে, যার ফলে খালেদা জিয়াকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন, তবে তার স্বাস্থ্য এবং আইনি সমস্যার কারণে তার সম্পৃক্ততা সীমিত। ২০১৪ সালে তাকে আত্মসাতের জন্য পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন, কিন্তু তারপর থেকে তার স্বাস্থ্য উদ্বেগজনক ছিল এবং তিনি বাংলাদেশই চিকিৎসা নিচ্ছেন। দুই দুইবারের প্রধানমন্ত্রীকে সামান্য কিছু টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দিয়ে জেল খাটানো আওয়ামিলীগের একটু কূটচাল।
তার রাজনৈতিক ও আইনি চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, খালেদা জিয়া বাংলাদেশে বিশেষ করে বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে একজন অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। দেশের উন্নয়নে তার অবদান, সেইসাথে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার মর্যাদা বাংলাদেশের ইতিহাসে তাকে স্থান দিয়েছে। যাইহোক, তার উত্তরাধিকার দুর্নীতি এবং নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগের কারণে কিছুটা কলঙ্কিত হয়েছে যা তার দ্বিতীয় মেয়াদকে ঘিরে ছিল।
খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, তিনি দুইবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বিভিন্ন সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে তার অবদানের পাশাপাশি আঞ্চলিক কূটনীতিতে তার ভূমিকা ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। যাইহোক, তার উত্তরাধিকারও দুর্নীতি এবং নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা বহু বছর ধরে বাংলাদেশে বিতর্ক এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণ ছিল।