সরকার কি নিরাপদ সড়ক চায় না?
২০১৮ সালে স্কুলের বাচ্চারা যখন রাস্তায় খুবই সামান্য একটা দাবি নিয়ে নেমেছিল, নিজেদের জীবন রক্ষার দাবিতে, সড়ক দূর্ঘটনা কমাতে আইনের যথাযথ ব্যবহারের দাবি নিয়ে বাচ্চারা রাস্তায় নেমেছিল। খুব সামান্য, আর জনসম্পৃক্ত একটা দাবি ছিল সেটি।
আমরা দেখেছি আন্দোলন চলাকালীন কয়েকটা দিন ঢাকার রাস্তায় কীভাবে সড়ক নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে সিস্টেম্যাটিক উপায়ে। ঢাকার বড় ছোট রাস্তায় কীভাবে ট্রাফিক কন্ট্রোল করা যায়, রিকশা লেন, এম্বুলেন্স লেন, আর গণপরিবহনের লেন আলাদা রেখে। আমরা আরোও দেখেছি অবৈধ সরকারের অবৈধ গাড়ির বহর। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের গাড়ির কাগজপত্র নাই, সেনাবাহিনীর গাড়ির কাগজপত্র নাই, পুলিশের হেলমেট নাই, ইত্যাদি ইত্যাদি।
এই আন্দোলনে আমরা দেখেছি দেশকে কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রনে রাখা শক্তিটি কত নাজুক, কত অবৈধ, এবং কত নিরুপায় হয়ে আছে একটা ছোট সিন্ডিকেটের হাতে!
তবে তাদের দূর্বলতার এই বহিঃপ্রকাশ বেশিদিন চলতে দেয় নি সরকার। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে পুলিশ, ছাত্রলীগের গুন্ডা আর ড্যান্ডিখোর টোকাইদের দিয়ে হামলার পর হামলা চালিয়েছে নিরস্ত্র শিশুদের উপর। চোখে রাবারবুলেট মেরে অন্ধ করে দিয়েছে অনেককেই।
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক চিকিৎসা বিভাগকে এত ব্যস্ত কখনো দেখিনি নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময়ে যখন দেখেছি। টিয়ারগ্যাসে চোখ জ্বালাপোড়া, রাবারবুলেটে শরীরে ক্ষত, দৌঁড়াতে গিয়ে হোচট খেয়ে রক্তাক্ত, লাঠির আঘাতে গা কালো হয়ে দাগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক চিকিৎসা বিভাগে এমন কেইস হয়ত আগে কখনো আসে নি, আর আসবেও না!
রাতের বেলা ২৫০০ লোককে আসামী করে মামলা করা হলো। মেসে মেসে গিয়ে গিয়ে গায়ের গেঞ্জি খুলে দেখা হল কারো গায়ে রাবারবুলেটের ক্ষত আছে কি না। ক্ষত থাকলেই গ্রেফতার! ঈদের ঠিক আগে আগে সরকার তাদের খড়গহস্ত নিয়ে নেমে পড়লো ছাত্রছাত্রীদের শায়েস্তা করতে! বাহ!
তবে কি সরকার নিরাপদ সড়ক চায় না?
কার স্বার্থ বাঁচাতে সরকার এত উদগ্রীব?
কে সেই সিন্ডিকেট?