বর্তমানে বাংলাদেশে দুঃশ্বাসন চুড়ান্ত রূপ ধারণ করেছে। আর এর মূল হোতা আওয়ামী লীগ। তাদের হাত ধরে বাংলাদেশে রচিত হচ্ছে নানান অপকর্মের নজিরবিহীন ইতিহাস। আওয়ামী লীগ ও তাদের ঘনিষ্ঠজনদের হাতে নিষ্পেষিত এদেশের রাষ্ট্রযন্ত্র। যদি কেউ কোনভাবে আওয়ামী লীগের সাথে সংশ্লিষ্টতা বা ঘনিষ্টতা প্রমাণ করতে পারে তবে তার জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা প্রকাশিত হয়ে গেছে বিধায় ঘুম হারাম ব্যর্থ বাংলাদেশ প্রশাসনের।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারি বেসিক ব্যাংকের সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আওয়ামী মদদপুষ্ট হলমার্ক চেয়ারম্যান তানভির এবং তার সম্পর্কে ভায়রা ও কোম্পানির জিএম তুষার আহমেদ বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে অন্তরীণ। জেলের কয়েদি হলেও তারা সেখানে রয়েছেন জামাই আদরে। কারন তাদের কদরে ঘাটতি হলে তারা যদি তাদের চক্রে সরকারি সংশ্লিষ্টতা প্রকাশ করে দেন? তাই তাদের সকল আবদারই রক্ষা করতে হচ্ছে। তাই বলে জেলখানার কয়েদি জেল সুপারের অফিসকক্ষে একজন নারীর সাথে সময় কাটাবে?
কাশিমপুর কারাগারের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সম্প্রতি কারাগারের কয়েদির রঙ্গলীলা ফাঁস হলে তা নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ওই ফুটেজে দেখা গেছে, গত ৬ জানুয়ারি কারাগারের কর্মকর্তাদের অফিস এলাকায় হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদ ঘোরাফেরা করছেন। কিছুক্ষণ পরই বাইরে থেকে এক নারী সেখানে প্রবেশ করেন। কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইন এ সময় সেখানে ছিলেন। ওই নারী দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে কারাগারের কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় প্রবেশ করেন। সে সময় তার সঙ্গে দুই যুবক ছিল। ডেপুটি জেলার সাকলায়েন তাকে সেখানে রিসিভ করেন। ওই নারী সেখানে প্রবেশ করার পর অফিস থেকে বেরিয়ে যান ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। এর আনুমানিক ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দি তুষার আহমদকে ওই অফিসে নিয়ে আসা হয়। এরপর দুজন একে একে একটি রুমে যান। সেখানে তারা ৪৫ মিনিট অবস্থান করেন।
ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরে নিয়মমাফিক প্রত্যাহার করা হয়েছে সেখানে কর্মরত ৫ জন কর্মকর্তা আর গঠন করা হয়েছে লোক দেখানো দুটি তদন্ত কমিটি। কিন্তু কারাগারে এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। বিভিন্ন অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কারা অধিদপ্তরের বিভিন্ন অপকর্মের ইতিহাস। দেখা যাচ্ছে প্রায়ই ঘটে থাকে এসব ঘটনা। কিন্তু এগুলো নিয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না সাধারণ কেউ। সরকারি মদদপুষ্টদের এহেন অপকর্ম দেখেও তাই না দেখার ভাণ করতে হয় সবাইকে।
অপরাধীদের সমর্থিত কিছু সূত্র থেকে ছড়ানো হচ্ছে যে, ঐ নারী নাকি অভিযুক্ত তুষার আহমেদের স্ত্রী। কিন্তু এখানে ঐ নারীর পরিচয় নিয়ে কোন প্রশ্নের দরকার নেই। যদি সে স্ত্রী হয়েও থাকে তবুও কেন তার সাথে কয়েদি এভাবে গোপনে মেলামেশা করার সুযোগ পেল সেটাই প্রশ্ন। কয়েদির নিকট একজন নারী এসেছেন শুনেই একটি কারাগারের জেল সুপার অন্য অযুহাতে কারাগার থেকে বেড়িয়ে গিয়ে তার নিজেরই অফিসকক্ষে কয়েদিকে নারীসঙ্গ উপভোগ করার সুযোগ করে দিবেন? বাংলাদেশের বিভিন্ন কারাগারের ভেতর আওয়ামী মদদপুষ্টদের হেরেম খানাও আছে হলমার্কের ঘটনা তাই জানান দিল। বাইরে থেকে নারী এনে একান্তে সময় কাটানো, কারাগারে এমন আমুদে জীবন কাটানো কয়েদির বাইরে আসার প্রয়োজন কি? যেখানে সরকারি কর্মকর্তারা থাকেন তার পাইক পেয়াদা, পাহারাধার। এমন রাজকীয় জীবন ছেড়ে আসতে কার মন চায়?
কারাগারের কঠোর নিয়মকানুন শুধু বিরোধী দলের আসামিদের জন্য। এদেশে তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রীর কারাগারের সুযোগ-সুবিধা নিয়েও আছে হাজারো অভিযোগ। সেখানে হলমার্ক কেলেঙ্কারির মুল হোতাদের আমুদে কারাবাস সত্যিই প্রমাণ করে দেশে আইনের শ্বাসন কোথায় গিয়ে ঠেকেছে।