অর্থমন্ত্রীর প্রলাপ শোনা যাচ্ছে, কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী চুপ কেন?

প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ওপর ভ্যাট আরোপের বিরুদ্ধে চলমান ছাত্র আন্দোলন এবং এ নিয়ে নানামুখী বিভ্রান্তির জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে সরাসরি দায়ী করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি।

পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন করেছেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিয়ন্ত্রণ আসলে কে করেÑ শিক্ষা মন্ত্রণালয় নাকি অর্থ মন্ত্রণালয়? চলমান ছাত্র আন্দোলন ও ভ্যাটসংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিদিন অর্থমন্ত্রীর প্রলাপ শোনা যাচ্ছে, কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ বিষয়ে চুপ কেন? শিক্ষামন্ত্রী এর সমাধান টানার যৌক্তিক কর্তৃপক্ষ হলেও তার তরফ থেকে এ নিয়ে কোনো কথা শোনা যাচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকা স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন বলে বাদশা বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী উচ্চশিক্ষায় ভ্যাট আরোপ করা যৌক্তিক কি না তার ব্যাখ্যা শিক্ষামন্ত্রীকেই দিতে হবে। রোববার এক বিবৃতিতে ফজলে হোসেন বাদশা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার এবং বাংলাদেশের সংবিধানস্বীকৃত অধিকার। অথচ শিক্ষাকে পণ্যে পরিণত করে এর ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। কার্যত এর মধ্য দিয়ে গোটা শিক্ষাব্যবস্থার বাণিজ্যিকীকরণ প্রক্রিয়াকেই আরো উৎসাহিত করা হলো।

যেহেতু শিক্ষা কোনো পণ্য নয়, মানুষের জন্মগত অধিকার, তাই এর ওপর ভ্যাট আরোপ সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী পদক্ষেপ।
ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, অর্থমন্ত্রীর প্রলাপবাক্য দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সময়ে সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। ভ্যাট আরোপ নিয়েও তিনি একেক দিন একেক ধরনের কথা বলে সঙ্কটকে আরো উসকে দিয়েছেন। পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে যারা বাণিজ্যিকীকরণ করতে চায়, তারাই ছাত্রদের ওপর ভ্যাট আরোপের চিন্তা করে।
‘অর্থমন্ত্রীর মৌলিক চিন্তাতেই বিভ্রান্তি আছে’ মন্তব্য করে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, এ সঙ্কট অবিলম্বে সমাধান হওয়া দরকার। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

রাকসুর সাবেক এই ভিপি আরো বলেন, দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থাকে বাণিজ্যিকীকরণের গভীর চক্রান্ত চলছে।
প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের খামখেয়ালি অনুযায়ী লাভজনক ব্যবসা ক্ষেত্রে পরিণত করার লক্ষ্যে ইচ্ছামতো বেতন-ফি নির্ধারণের আইনি সুযোগ রাখা হয়েছে বলেই আজ এ অবস্থা।

তিনি অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সব প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিন্ন বেতন-ফি নির্ধারণের নীতিমালা প্রণয়ন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক কঠোরভাবে তা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান।

You may also like...

Read previous post:
ডানপন্থীর বামে বামপন্থীর ডানে : বেগম খালেদা জিয়া

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে জিয়াউর রহমান এসেছিলেন আকস্মিকভাবে। কিন্তু তাঁর আগমন ছিল অবশ্যম্ভাবী। নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণ করতে সময়ের চাহিদা এবং দেশের...

Close