পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু, পেয়ারা তুমি খাও?

আওয়ামীলীগ সরকারের স্বপ্নের প্রজেক্ট হচ্ছে পদ্মা সেতু। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এরা কুমিরের একমাত্র বাচ্চার মত আমাদের পদ্মা সেতু দেখাচ্ছে। এই পদ্মা সেতু হয়, হবে, হচ্ছে করে করে আওয়ামীলীগ তৃতীয় মেয়াদে পা দিয়েছে।

এই পদ্মা সেতু নিয়ে যত বিড়ম্বনা, বিলম্ব, বিলোপ তার সবকিছুই হয়েছে শেখ হাসিনার একগুয়েমির জন্য। পদ্মা সেতুর জন্য ঋণ হিসাবে বিশ্বব্যাংকের ১২০ কোটি ডলার দেয়ার কথা ছিল। তবে পরবর্তীতে দূর্নীতির অভিযোগে তারা এই ঋণ বাতিল করে দেয়। 

বিশ্বব্যাংক দূর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পর সরকারের কাছে এর অভিযোগ জানিয়ে প্রতিকার চেয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের প্রথম দাবী ছিল যেসব সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের সরিয়ে দেয়া।

দ্বিতীয়ত , এই অভিযোগ তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি বিশেষ তদন্ত দল নিয়োগ করা।

বিশ্বব্যাংক বলছে এমন প্রেক্ষাপটে সংস্থাটির অবস্থান ব্যাখা করা এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে উত্তর জানার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের দল ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল।

কিন্তু সরকারের প্রতিক্রিয়া বা উত্তর সন্তোষজনক ছিলনা বলে বিশ্বব্যাংক বলছে।এমন অবস্থায় দূর্নীতির প্রমান থাকা স্বত্তেও বিশ্বব্যাংক বিষয়টিতে চোখ বুজে থাকতে পারে না বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

দূর্নীতির অভিযোগে জড়িত থাকা তৎকালীন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে পদত্যাগ করতে বাধ্য না করে শেখ হাসিনা এবং আওয়ামীলীগ সরকার বিশ্বব্যাংকের ঋণের টাকা হাতছাড়া করেছিল। তাদের কাছে এটা ছিল ইগোর লড়াই। পদ্মার দু-পাড়ের কোটি কোটি মানুষের দাবীর চেয়ে বড় হয়ে গেছিল তাদের এক মন্ত্রীর সম্মান, বিশ্বের দরবারে দেশের ভাবমূর্তির চেয়ে বড় হয়ে গেছিল তাদের এক মন্ত্রীর সম্মান। তারা তদন্তের স্বার্থেও চাইলে আবুল হোসেনকে বাদ দিতে পারতো, দূর্নীতি প্রমাণিত না হলে আবুল হোসেনকে আবার স্বপদে বহাল করতে পারতো। কিন্তু তারা সেটা করে নি।

বিশ্বব্যাংক ঋণ সুবিধা বাতিল করার পর ঠিকই আবুল হোসেন পদত্যাগ করেছিল। এই কাজটা আগে করলে হয়ত পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন ২০২২ সাল পর্যন্ত আটকে যেত না। ২০২২ সালেও পদ্মা সেতু হবে কি না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

পদ্মা সেতুর বাজেটঃ

২০০৭ সালে পদ্মা সেতুর বাজেট ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে কয়েক দফা নকশা পরিবর্তনে এর দৈর্ঘ্য ও ব্যয় বাড়তে থাকে। ২০১১ সালে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকার উন্নীত করে এর সংশোধিত প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৬ সালে আবারও ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ে। প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সর্বশেষ আরও ১৪শ কোটি টাকা বেড়ে তা ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

১০ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট এখন ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট। সময়ের ব্যয়, টাকার ব্যয় আর সম্মানের ব্যয়ে আমাদের ভাবমূর্তি শুন্য।

You may also like...

Read previous post:
আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দেশটাকে লুটে চলেছে প্রতিনিয়ত

আওয়ামী সন্ত্রাসী ও লুটারেদের মাধ্যমে দেশে কি চলছে সেটা সকলেই জানে। নতুন করে আর কি বলব?সাম্প্রতিক সময়ে আশুগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট...

Close