বাংলাদেশে বর্তমানে মূর্তি আর ভাষ্কর্য নিয়ে তর্ক বিতর্ক চলছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দিচ্ছে হেফাজতের নেতারা। কারণ ইসলামে প্রতিমা বানানো নিষিদ্ধ।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ইসলামে মূর্তি নিষিদ্ধ, সুতরাং ভাষ্কর্য বানানো যাবে। কারণ ভাষ্কর্যকে কেউ পূজা করছে না।
সরকারের এমন কথা উগ্র মুসলমানদের জন্য এক প্রকার গ্রীন সিগন্যালই। পূজার মৌসুমে আসলে মূর্তি ভাঙচুরের বাম্পার ফলন হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব ঘটনার বিচার হয় না। প্রতি বছরকার ঘটনা এটা এখন।
এমন পরিস্থিতে সরকার যখন বলে ইসলামে মূর্তি নিষিদ্ধ, ভাষ্কর্য না, তারা ডি ফ্যাক্টো বলছে মূর্তি ভাঙ্গা যাবে। বিচারহীনতা তাদের এই ম্যাসেজকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে।
মোল্লারা ওয়াজে বসে হিন্দুদের প্রতি বিষোদগার করে। হিন্দু ধর্মের প্রতি বিষোদগার করা আর হিন্দুদের প্রতি বিষোদগার করা এক জিনিস না। হিন্দু ধর্মে গোমুত্র খাওয়ার অনুমতি নিয়ে সমালোচনা করা এক জিনিস, বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব যখন গোমুত্র খাওয়ার মতো একটা অস্বাস্থ্যকর জিনিসকে প্রচার করবে সেটার সমালোচনা হওয়া উচিত। কিন্তু আপনি হিন্দুদের গোমুত্রখোর বলবেন সেটা অনুচিত। কারণ হিন্দু ব্যক্তিদের আপনি আক্রমণ করছেন। তাদের কর্মকে বা ধর্মকে নয়।
মোল্লারা ওয়াজে বসে হিন্দুদের মূর্তি লাথি দিয়ে ভাঙ্গার কথা বলেন। বলেন তাদের ইমানী দায় এটা। এসব থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মুসলিমদের একটা দল মূর্তি ভাঙ্গে, এবং বাঙালি মুসলিম পুরুষদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের কোনো বিচার হয় না। ব্যাপারটা যেন স্বাভাবিক কিছু। সরকার যখন ভাষ্কর্য মূর্তিকে আলাদা করে মূর্তি ভাঙার লাইসেন্স দেবে তখন এই জিনিস আরো বাড়বে।
আর এই বানর ঘাড়ে উঠে শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ ভাঙ্গার ডাকও দেবে। তখন সরকার বাহাদুরের পরিণতি দেখার অপেক্ষায় আছে অনেকেই। কিন্তু সে সময়ে হয়তো বাংলাদেশে প্রগতিশীলদের বেঁচে থাকাটাই দায় হয়ে যাবে। মুহাম্মদের উম্মতেরা মেরে ফেলবে তাদের, আর নাহয় তারা নিজেরাই দ্বীনের পথে এসে ৭২ হুরের লোভে মত্ত হয়ে যাবে।