২০১৯ এর ২৬শে জুন সকালে বরগুনা জেলা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে তার স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে জখম করে একদল লোক। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ঐ ঘটনার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
ভিডিওতে দেখা যায় কয়েকজন অস্ত্রধারী রিফাতকে ধারাল অস্ত্রের উপর্যুপরি আঘাতে আহত করছে। আর ঘটনাস্থলে উপস্থিত মিন্নি তাদেরকে নিবৃত করার চেষ্টা করছে। মিন্নি ছাড়া ওইসময় আর কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি ভিডিওতে।
আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী। তিনিই এই মামলার প্রধান সাক্ষী। চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা মামলায় বরগুনার পুলিশ মিন্নিকে গত বছরের ১৬ই জুলাই গ্রেফতার দেখায়। যদিও এর আগে এই হত্যাকাণ্ডের একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবেই মামলায় নাম ছিল মিন্নির।
হত্যা মামলাটির বাদী, নিহত রিফাত শরীফের বাবা, আবদুল হালিম দুলাল শরীফ গত ১৩ই জুলাই এক সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, তার পুত্রবধূ (মিন্নি) এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে তিনি সন্দেহ করেন।
এরপর বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত৷ নিহতের স্ত্রী মিন্নিসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে মামলার প্রধান সন্দেহভাজন সাব্বির আহম্মেদ বা নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়৷
গণমাধ্যমে কথা বলা বা বক্তব্য না দেয়ার শর্তে বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার অভিযুক্ত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে জামিনে মুক্তি দেয় হাইকোর্ট। এ প্রসঙ্গে তার আইনজীবি জেড আই খান পান্না বলেন, “মিন্নির বয়স, সে একজন নারী, তার সংশ্লিষ্টতা কতটুকু আছে এবং যে পদ্ধতিতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়েছে, যেভাবে মিন্নিকে আদালতে পেশ করার সময় তার পক্ষে যে কোন আইনজীবি ছিলো না, এফআইআর এ তার নাম নেই এবং এ মামলার একমাত্র স্বাক্ষী- এসব বিবেচনায় নিয়ে তাকে মু্ক্তি দেয়া হয়েছে।”
আদালতের রায়ে বলা হয়, “তদন্ত প্রক্রিয়া যেহেতু শেষের দিকে এবং এ অবস্থায় তদন্ত প্রভাবিত করার কোন সুযোগ নেই, তাই আমরা জামিন মঞ্জুর করলাম।”
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, “আমরা যে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি তা আইনজীবিরা তুলে ধরতে পেরেছেন। আমরা সুবিচার পেয়েছি। আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ।”