আশি হাজার মামলায় বিএনপির বিশ লাখ নেতা ও কর্মী আসামী। এই কথা বলেছেন প্রবীন রাষ্ট্র বিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ। সংখ্যাটি বিস্ময়কর। পৃথিবীতে এতো ব্যাপক সংখ্যক রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কোন নজির আছে কিনা জানা নেই। অভিযোগ আছে বিএনপির কমিটির তালিকা ধরে ধরে মামলা দেয়া হয়। প্রথমে অজ্ঞাতনামাদের নামে মামলা করে পরে বিএনপির নেতা কর্মীদের নাম সেখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এমন গায়েবী মামলা হয়েছে যেখানে কথিত অপরাধ সংগঠিতই হয়নি বলে জানা গেছে। এমনকি অনেক আগে মৃত এবং অপরাধ সংগঠনের সময়ে বিদেশে ছিলেন এমন অনেকের নামেই নাশকতার মামলা দেয়ার ঘটনা জানা গেছে। এমনকি বজ্রপাতের শব্দকে বোমা বিস্ফোরণের শব্দ বলে দাবী করে পুলিশ বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এটা শুধু বিএনপির মামলার হিসাব। এর বাইরে জামায়াত ও হেফাজতের নামেও অসংখ্য মামলা আছে। সব মিলিয়ে বিরোধী নেতা কর্মিদের নামে কত মামলা আছে সেটা সম্ভবত কেউই জানেনা।
মামলার বাইরেও আছে বিরোধী নেতা কর্মিদের গুম এবং বিচারবহির্ভুত হত্যার সংখ্যা।
ঐক্য ফ্রন্ট দাবী জানাতে বাধ্য হয়েছে নির্বাচনের আগে নতুনভাবে যেন কাউকে গ্রেপ্তার না করা হয়। তবুও গত ২৪ তারিখ সিলেটে জনসভার আগে এবং পরে প্রায় বিশজন নেতা কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঐক্য ফ্রন্ট প্রথমে ২৩ তারিখ সিলেটে সমাবেশের ঘোষনা দেয়ার সাথে সাথেই সিলেটে আওয়ামী লীগ “নৌকার পক্ষে প্রচারণা” নামে এক কর্মসুচী ঘোষনা করে। এর পরে ২৪ তারিখ আবার সমাবেশের তারিখ দেয়ার পরে পুলিশ ঐক্য ফ্রন্টের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। হাইকোর্টে রিট করার পরে ঐক্য ফ্রন্ট সমাবেশের অনুমতি পায়। কিন্তু অদ্ভুতভাবে আবার আওয়ামী লীগ “সরকারের উন্নয়ন প্রচারপত্র বিলি” নামের আরেক নতুন কর্মসূচী ওই ২৪ তারিখেই ঘোষনা করে। এটা কৌতুহল উদ্দিপক ২৩ তারিখ তাদের আগে ঘোষিত “নৌকার পক্ষে প্রচারনা” কর্মসুচিটি পালিত হয়েছে বলে কোন সংবাদ পত্রিকাতে প্রকাশিত হতে দেখা যায়নি। সিলেট আওয়ামী লীগ তাদের কর্মসূচি সম্পর্কে বলেছে, “ঐক্য ফ্রন্টের সমাবেশেও আমাদের নজর থাকবে। তারা কোনো ধরনের উসকানিমূলক তথ্য ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি ”
ঐক্য ফ্রন্ট যেদিনই যেখানে কর্মসূচী দিবে সেখানেই কি আওয়ামী লীগ তাদের ভাষায় “উস্কানিমুলক তথ্য ও বিশৃংখল পরিবেশ সৃস্টির চেস্টা” প্রতিহত করার মিশনে থাকবে?
উস্কানি দেয়ার চেস্টা আসলে কারা করছে? এভাবে গণতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চা চলে? তবুও কি আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে আওয়ামী লীগ শাসিত সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে?