আওয়ামী লীগের খপ্পর থেকে দেশকে কে বাঁচাবে?

মুক্তিযুদ্ধের আগে শেখ মুজিব বামপন্থীদের হাত থেকে পুর্ব পাকিস্তান রক্ষার অঙ্গীকার করেছিলো যেন তার হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তান ও পশ্চিমা শক্তি পুর্ব পাকিস্তানে সম্ভাব্য কমিউনিস্ট শাসন ঠেকিয়ে দিতে পারে।

তিনি বলেছিলেন যে তিনিই এই অঞ্চলে কমিউনিজমের প্রসারের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ, তাই তাকে পশ্চিম পাকিস্তান তথা পশ্চিমের সহায়তা করা উচিত। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের আগে ফ্রান্সের বিখ্যাত পত্রিকা লু মুন্দ-কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে শেখ মুজিব বলেন:

“পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার কি জানেনা যে একমাত্র আমিই পুর্ব পাকিস্তানকে কমিউনিজমের হাত থেকে রক্ষা করতে পারি? তারা (পশ্চিম পাকিস্তানি) যদি যুদ্ধ করার প্রস্তুতি নিয়ে থাকে তবে আমি ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়বো এবং আমার নামেই নকশালেরা ঢুকে পড়বে। আমি যদি অনেক ছাড় দেই তাহলে আমি আমার কর্তৃত্ব হারাবো। আমি একটা জটিল অবস্থার মধ্যে আছি।”

এই সাক্ষাতকারটা প্রকাশিত হয় ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ।

শেখ মুজিব পশ্চিমকে দেয়া কথা রেখেছিলেন। স্বাধীনতার পরে কমপক্ষে ২৫ হাজার ভিন্ন মতাবলম্বী বাম নেতা কর্মী রক্ষীবাহিনী, লাল বাহিনী সহ বিভিন্ন বাহিনীর হাতে নিহত হয় বলে নির্যাতিত দলগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। পরবর্তিতে এই সম্পর্কে কোন জরিপ হয়নি তাই এই সংখ্যাকে নিশ্চিত করা না গেলেও যে কয়টি হত্যাকান্ডের ডকুমেন্টেশন হয়েছে তা থেকে অনুমান করা যায় বিপুল সংখ্যক ভিন্ন মতাবলম্বীকে হত্যা করা হয়েছিলো।

১৯৭৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলার তানোর থানার গোল্লাপাড়া বাজারের গোডাউনের পাশে একই রাতে সাম্যবাদী দলের কৃষক আন্দোলনের ৪৪ নেতা-কর্মীকে সরকারি বাহিনী অমানবিক নির্মম নির্যাতনে হত্যা করে গণকবর দেয়।

সেই সময়ে শেখ মুজিবকে সমর্থন করা গৃহপালিত বাম দল ছিলো সিপিবি ও ন্যাপ। সিপিবি নেতা মনি সিংহ পল্টনে হুংকার ছেড়ে বলেছিলেন মওলানা ভাসানিকে টুকরো টুকরো করে ফেলা হবে।

শেখ হাসিনাও একইভাবে তার ক্ষমতা ধরে রেখেছে এই বলে যে, তিনিই হচ্ছেন ইসলামী জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একমাত্র প্রতিরোধ। তিনি ক্ষমতা থেকে চলে গেলে ইসলামি জঙ্গিবাদি গোষ্ঠি বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করবে। তিনি কথিত জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এক কল্পিত যুদ্ধ অব্যাহত রেখেছেন। ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের ঢাকা অবরোধের সময়ে সরকারী বাহিনীর সদস্যসহ ২২ জন নিহত হয় বলে সরকার নিজেই প্রেস নোট দিয়ে স্বীকার করেছে। সেদিন কতজন নিহত হয়েছিলো তার সঠিক বিশ্বাসযোগ্য পরিসংখ্যান তৈরি করার কাজটাও আওয়ামী লীগ ভয়ভীতি দেখিয়ে বন্ধ করে রেখেছে। এখনও আওয়ামী লীগের সাথে কিছু গৃহপালিত ইসলামী দল আছে।

আওয়ামী লীগ একবার কমিউনিজম থেকে দেশকে বাঁচাতে ফ্যাসিবাদ কায়েম করে আরেকবার ইসলামপন্থা থেকে দেশকে বাচাতে ফ্যাসিবাদ কায়েম করে। কিন্তু এই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের কবল থেকে দেশকে বাঁচাবে কে?

You may also like...

Read previous post:
লানত মহারানী

পুরোনো ডকুমেন্ট গুছাইতে গিয়ে ফাইলটা পাইলাম। ২০০৫ সালের মে মাসে যুবলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ সুমনকে টর্চার করে মেরে ফেলছিলো...

Close