প্রথম আলোর মালিক লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেন। গুলশানের জঙ্গি হামলায় আরটিজান রেস্টুরেন্ট এ সে ও তার বন্ধুরা উপস্থিত ছিল। হাসনাত এর বাবার কথার উপর ভিত্তি করে ফারাজ কে বানান হল দেশের বীর, হিরো। ঘটনার সময় হাসনাতের বাবা সেখানে উপস্থিত ছিল না। তিনি এই খবর জানতে পারেন হাসনাতের স্ত্রী এর কাছ থেকে। এর আগে কে এই টাকলা হাসনাত আর্টিকেলে আমি আমার দৃষ্টিতে যা যা অসংগতি ছিল তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছ। এই লিঙ্কে ক্লিক করলে পাবেন, http://wp.me/p7Cy1w-44
সব কিছুই এখন রহস্যময়। এই প্রথমবার বাংলাদেশে এমন একটা জঙ্গি হামলায় পুরো জাতি এখন স্তম্ভিত হয়ে আছি। যাই হোক, আমি সরাসরি আজকের লেখার বিষয়বস্তুর দিকে চলে যাচ্ছি। ফারাজ আইয়াজ হোসেন। অন্যায় যেখানে হয়, অন্যায় প্রমানের জন্য, অন্যায়কারী কিছুনা কিছু ক্লু তো রেখেই যায়। এখানেও ব্যাতিক্রম দেখি নাই। ডি কে হোয়াং কোরিয়ান ভদ্রলোকের গোপনে করা ভিডিও ফুটেজ অনেক কিছুই পরিষ্কার করে বুঝতে সাহায্য করছে। শোনা কথার চেয়ে নিজের চোখে দেখা সত্যর উপর আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকবো স্থির করেছি।
প্রথমের ফারাজের হিরো হওয়ার ব্যাপারটা বেশ ভাবিয়ে তুললো। প্রথমে শুনে একটু গর্ব বোধ করলেও ভিডিও ফুটেজ দেখার পর গর্ব বোধের ব্যাপারটা উবে গেল। আমি এও জানি আমার এই লেখাটি পড়ে আমার উপর ঘৃণা আর আক্রোশের জন্ম দেবে। জঙ্গি মাস্টার মাইন্ড আর প্রথম আলো পরিবারের কাছে পরিণত হব ঘোর শত্রুতে। আফসোস নেই। এরকম জলজ্যান্ত প্রমাণ হাতছাড়া করে একজন জঙ্গিকে হিরো বলে দেশদ্রোহিতা করার কোন অভিপ্রায় নেই আমার।
আমি একটা একটা করে প্রমাণ আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। বিবেক, বুদ্ধিমত্তার মানুষ যারা আছেন আশাকরি আমার মতো আপনাদের মনের মধ্যে জেগে উঠবে সন্দেহ। আজকে প্রথম আলো যেভাবে ফারাজ কে হিরো বানাচ্ছে, ডি কে হোয়াং এর ভিডিও দেখে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে আসলে ফারাজ গুলশানের হামলাকারী জঙ্গি যারা কিনা ২২ জন মানুষকে জবাই করে মেরে ফেলল, সেই ফারাজ ওই জঙ্গিদেরি একজন। বিশ্বাস হচ্ছে না? দাঁড়ান, প্রমাণ সহ বুঝিয়ে বলছি।
হোয়াং সাহেবের ভিডিওতে একটি অংশে দেখা যাচ্ছে যে একটি জঙ্গী রেস্টুরেন্টের মূল ঢুকবার কাঁচের দরজার পাশে অবস্থান নিয়েছে এবং কয়েক সেকেন্ডের জন্য সে দরজা দিয়ে উঁকি মারছে। তার পিঠে রয়েছে পেছনে “উইলসন” নামের একটি ব্যাগ।(র্যাকস্যাক)
নিচের ছবিগুলোর ভিডিও থেকে স্ক্রীনসট নেয়া হয়েছে। ছবিগুলোর মধ্যে যে ছেলেটি দেখতে পাচ্ছেন তার সাথে ফারাজ এর ফেসবুক থেকে নেয়া ছবিটির সাথে একটু মিলুয়ে দেখুন। চুলের ছাঁট থেকে শুরু করে, মুখের ধরন, গড়ন, এমন কি একপাশ থেকে দেখতে কেমন লাগবে সেটাও মিলিয়ে নিন।
কি! চমকে গেলেন? নাকি স্তম্ভিত হয়ে গেছেন আমার মতো?আচ্ছা এবার ভিডিও থেকে আপনাদের কিছু দেখাতে চাই।
প্রথমে হোয়াং সাহেবের করা ভিডিও টিতে এই জঙীটির উঁকি দেয়ার ভিডিও আপনাদের প্রথমে নরমাল মোশনে দেখাব। পর্যায়ক্রমে ভিডিওতি আমি একটু একটু করে স্লো করে নিচ্ছি। আপনারা দয়া করে ভাল করে ভিডিওটি লক্ষ্য করুন। আস্তে আস্তে জঙ্গির মুকটা ক্লিয়ার হবে এবং স্পষ্ট হয়ে উঠবে। যে মুখটা দেখবেন আপনারা সেই মুখটার সাথে ফারাজ আইয়াজ হোসেনের ফেসবুকের ছবিটি একটু মিলিয়ে দেখবেন কি? কি! আবারো চমকে উঠলেন? ফারাজাকেই দেখছেন তো? সেরকম লম্বা, চুলের ছাঁটও এক, আর মুখের স্পষ্ট ফারাজের প্রতিচ্ছবি এইতো?
উঁকি মারা জঙ্গিটির বা দিকের চুলের ছাঁট( একটু ছাঁটা) আর ডানের দিকের(একটু কম চুল) চুলের ছাঁট একটু খেয়াল করুন। এরকম ই দেখতে পাচ্ছেন ভিডিও ফুটেজে। এবার ছবির ফারাজের সাথে একটু মিলিয়ে নিন। কি? মিলে গেছে তাইতো?
এবার ভিডিওতে জঙ্গির উচ্চতা নিয়ে একটু বলি , অনুমানে বলে এই উচ্চতা হবে কমপক্ষে, ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি থেকে ৬ ফুটের মতো।একটু কম বেশি হতে পারে। এবার ফারাজের নিচের ছবিটা একটু লক্ষ্য করুন, ফারাজের উচ্চতা দেখে অনুমান করুন। আপনিও আন্দাজ করতে পারবেন।
যে ভারতীও মেয়েটি তারাশি জৈন ফারাজের বন্ধু ছিল, তার সঙ্গে ফারাজের ছবিটা দেখুন। উচ্চতা কি বলে আপনাদের কাছে? কি মিলে গেছে উঁকি মারা জঙ্গির সাথে ফারাজের উচ্চতা? ফারাজের বন্ধু ছিল অবন্তি আর তারাশি, এই বেচারিদের কে মরতেই হতো। কারন ফারাজ যে জঙ্গিদের একজন, এদেরকে মুক্ত করে দিলে ব্যাপারটা ফাঁস হয়ে যেত। ফারাজ কি এত বড় রিস্ক টা নিত বন্ধুদের ছেড়ে দিয়ে? তাহলে হাসনাত স্ত্রী আর বাবার বলা কথা, “ফারাজকে জঙ্গিরা ছেড়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু ফারাজের বন্ধুদের ছেড়ে দিতে চায়নি জঙ্গিরা তাই ফারাজ বন্ধুদের সাথে থেকে গেছে।” এই কথার কোন মিল আদৌ আছে কি? চোখের সামনে ২০ টা মানুষকে জবাই হতে দেখলে কি ১৯/২০ বছরের কোন যুবক বন্ধুত্ব রক্ষা আর টানে কি নিজ ইচ্ছায় মরার জন্য প্রস্তুত থাকবে? আজকালকার ১৯/২০ বছরের ছেলে মেয়েরা কি এই চিন্তা করে? আপনি ওখানে থাকলে আপনি কি করতেন? চোখের সামনে মানুষ জবাই করা দেখতেন? বন্ধুত্ব রক্ষা করতেন? নাকি জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ছটফট করতেন? কথায়-ই তো বলে “নিজে বাঁচলে বাপের নাম।”
ফারাজ যেহেতু জঙ্গি ছিল তাই এই খবরটা যেন ফাঁস করতে না পারে তাই ওর বন্ধুদের তো মরতেই হতো। এদের মুক্তি মানেই ফারাজ যে জঙ্গি এটাই প্রমানিত হতো। ওর বন্ধুরা বলে দিত। তাই এই নিশ্চিত ব্যাপারটা জেনে ফারাজ ওদেরকে কি বাঁচিয়ে রাখত? হিসাব কি মিলাতে পারলেন, পাঠকবৃন্দ?
আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হত্যা করেছে ৬ জনকে, একজনকে গ্রেফতার করেছে। নিচের ছবিটা লক্ষ্য করুন এখানে কিন্তু সেফ এর ছবিটা নেই। সাদা জুতা পায়ে জঙ্গির মুখটা দেখা যাচ্ছে না। অন্য জঙ্গিদের শনাক্ত করা গেলেও কিন্তু শেষের সাদা জুতা পরা জঙ্গির মুখটা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু মুখের এক পাশ দেখা যাচ্ছে । আর এটার এক পাশ এর মুখের ছাঁট ধাঁচ দেখে ফারাজের সাথে মিল পাচ্ছেন কি? আমি কিন্তু পাচ্ছি। পরিবর্তিতে এই লাশটা সরিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু কেন নেয়া হল? এর পিছনে রহস্য কি? কি লুকানোর চেষ্টা চলছে?
লাশ দেখেছি ৫ জনের আর সেখানে আরও একজনের লাশ আছে সেটা শেফের পোশাক পরা হলি আরটিজান বেকারিরএকজন শেফ। এই শেফ জঙ্গি নয় এই লোককে খামখাই মিডিয়া জঙ্গি বানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। এই শেফ এর পোশাক পরা শেফ এর লাশটা পরে ওই সাদা জুতা পরা লাশটার বদলে ব্যাবহার করা হচ্ছে। ভাল করে দেখুন আপনারা।
উপরে ৫ জন লাশের মধ্যে শেফ এর পোশাক পরা শেফ এর লাশ দেখতে পাচ্ছেন কি? একটা লাশ সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যে লাশটা সরিয়ে নেয়া হয়েছে সেখানে প্রকাশিত জঙ্গিদের কোন ছবির সাথে ওই লাশের বিন্দু পরিমান মিল নেই।ভাল করে খেয়াল করে দেখেন। নিজের চোখকে অবিশ্বাস করার প্রশ্নই আসে না। দেখুন, যে লাশটার কথা আগে বলেছি সে লাশের কোন ছবি প্রকাশিত হয় নি। তার বদলে শেফ এর লাশটা রাখা হয়েছে। কিন্তু কেন? ছবিতে দেখুন। ছবিতে মার্ক করা আছে নীল কালি দিয়ে।
লতিফুর রহমানের মান সম্মান রক্ষার জন্য এখন কোনো না কোনো ভাবে এইটুকু ম্যানেজ হয়েছে যে ফারাজ এর নাম যাতে জঙ্গীর তালিকায় না আসে। আর প্রথম আলো তো প্রচার করে যাচ্ছেই যে ফারাজ কত মহান ছিলো।ফারাজ আমেরিকায় পড়াশোনা করে। আমেরিকা থেকে দেশেও এসেছে। জঙ্গি ফারাজের পিঠে যে ব্যাগটি দেখতে পাচ্ছেন আপনারা, এটা আমেরিকান একটা ব্র্যান্ড “উইলসন” ব্র্যান্ডের ব্যাগ। হয়ত এই রকম ব্যাগ বাংলাদেশেও পাওয়া যেতে পারে সেটা নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই। শুধু একটু জানিয়ে রাখলাম আপনাদের যদি ভাবার বিষয়ে সাহায্য করে।
কিন্তু ঐযে লাশের গায়েবের ব্যাপারটা ওটা ঠিক এখনও পরিষ্কার হল না কিন্তু। জঙ্গির কথা বলা হয়েছে ৭ জনের। মিডিয়াও বলল। পুলিশও বলল। লাশ পেলাম মাত্র ৪ জনেরতাহলে বাকি ৩ টা লাশ কোথায় গেল? সেটার ছবি কেন পেলাম না? উল্টা একজন বেচারা একজন শেফ এর লাশ বসিয়ে দিয়ে আম জনতাকে বুঝ দিচ্ছে।
আই এস ৫ জনের ছবি প্রকাশ করেছে যাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মেরে ফেলেছে। তাহলে কি ধরে নেব যারা মারা গেছে শুধু ওদের ছবি আই এস পাবলিশ করেছে? আর যে দুজন ধরা পরেছে ওদের ছবি প্রকাশ করে নাই। তাহলে প্রকাশিত ছবির মধ্যে ফারাজের ছবি নাই কেন? তাহলে আই এস কি ভেবে বসে আছে ফারাজ ধরা পরেছে? আর এই জন্য কি ফারাজের ছবি প্রকাশ করে নাই? কারন আই এস এর প্রকাশিত ছবির মধ্যে একজনের ছবির সাথে তো কোন লাশের ছবির সাথেই মিল পাচ্ছি না। নাকি লতিফুর পরিবার মোটা অঙ্গের টাকা দিয়ে পুরো ব্যাপারটাকে উল্টে দিয়েছে? প্রথম আলো পত্রিকার মালিকের নাতি যদি হয় জঙ্গি, ব্যাপারটা কি ভয়াবহ নয়? আর প্রথম আলোতো আওয়ামীলীগ পন্থী। চিন্তা করে দেখেছেন তাহলে ব্যাপারটা আসলে কি দাঁড়াচ্ছে? এবং কতটা ভয়াবহ? তাই এসকল ঢাকতেই কি এই হিরো বানানোর চক্রান্ত? আর এক বীভৎস নোংরা রাজনৈতিক চাল?