ঢাকার গুলশানের জঙ্গি হামলায় প্রথম থেকে যে টাকলা মাথাটার প্রতি সন্দেহ জোরদার হয়। আশ্চর্য জনক ব্যাপার হল এই টাক্কু মাথার লোকটা এবং তার পরিবার কে জঙ্গিরা এত তোষামোদ করে আপ্যায়ন করে খাওয়াল?আবার ছেড়েও দিল? ব্যাপারটা রীতিমত ভাবিয়ে তুলছে আমাকে। কিছু একটা গণ্ডগোল তো আছেই এইখানে।
আমার যে যে ব্যাপার গুলো খটকা লাগছে আমি একে একে করে সব বলছি। হয়ত একমত হবেন, হয়ত হবেন না। কিন্তু আমার চোখে যা ধরা পরেছে আমি অবশ্যই সেগুলো বলবো আমার নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে। এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল। অবশ্যই যেভাবে পারি সত্যটা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
প্রথমের বলি এই টাক্কু বেটার পরিচয় খুজচ্ছিলাম হন্যে হয়ে, ফেসবুক এর মাধ্যমে জানতে পারলাম এই লোকটির নাম হাসনাত করিম। অস্ত্রধারী জঙ্গিদের সাথে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে তাকে বন্দুক হাতেও দেখা গেছে ভিডিও তে। কেন বলছি এই কথা? আপনারা যদি কোরিয়ান ভদ্রলোক ডি কে হং এর গুলশানের আরটিজান বেকারির পাসের বাড়ি নিজ বাসার জানালার আড়ালে থেকে জঙ্গি হামলার ভিডিও দেখে থাকেন সেখানে অবশ্যই দেখতে পাবেন। ভিডিও থেকে স্ক্রিন সট নেয়া হয়েছে বোঝার সুবিধার্থে। এই হাসনাত নর্থ সাউথ এর শিক্ষক ছিল। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি নামটা শুনেই আঁতকে উঠলাম। কারন গুলশানের জঙ্গি নিব্রাস ইসলাম নর্থ সাউথে পড়ত। সন্দেহ বেশ প্রবল হচ্ছে। কেন জানি মনে হচ্ছে এই লোক এই হামলার সাথে অবশ্যই গুরুত্ব পূর্ণ ভাবে জড়িত। একে ধরলেই সব কিছু বের হয়ে আসবে। এর আগের ব্লগার হত্যার অনেক হামলাকারী নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পড়ত। অবশ্যই আমি হলপ করে বলতে পারি এই হামলায় এই লোকের সাথে বেশ গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। আসলে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সন্দেহের তালিকায় শীর্ষ স্থানে আছে।
আরও জানতে পারলাম এই হাসানাত হিজবুত তাহেরির সাথে যুক্ত ছিল। হিজবুত তাহেরি হল একটা জঙ্গি দল। টাক্লা কে জঙ্গিবাদ প্রচারণার জন্য এর আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই তথ্য পাওয়ার পর আমার কাছে বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে। ক্লু খোঁজার চেষ্টায় আছি। আমি হলপ করে বলছি এই লোক এই জঙ্গি হামলার সাথে অবশ্যই জড়িত। আমাদের সময় পত্রিকা আজকে একটা রিপোর্ট বের করল হাসানাত কে নিয়া( জুলাই ৩ ২০১৬ )। সেখানে এই টাক্কু বেটাকে হাসানাত করিম নামে অভিহিত করা হয়েছে। আরও বলেছে এই লোক প্রায় ২০ বছর দেশের বাইরে কাটিয়েছে। ইউকে থেকে ইঞ্জিনিয়ার পাস করে। আর আমেরিকা থেকে মাস্টার ডিগ্রী নেয়। দেশে ফিরে আসে বছর দের এক আগে। কিন্তু আমি জানি এখানেই শেষ না। আরও অনেক কিছু আসবে সামনে। আসতেই হবে। কারন অনেক কিছু এখন বাকি আছে সামনে আসার।
আমি আবার ভিডিও প্রসঙ্গে ফিরে আসি, ভিডিও তে দেখতে পাবেন সকাল বেলা ওই টাক্লা বেটাকে সবার আগে কিছু মহিলা আর বাচ্চা সহ ছেড়ে দিচ্ছে। সারা রাত ধরে টিভি খবর গুলো দেখছিলাম গণমাধ্যমে। কোথাও জিম্মি করা বন্দিদের ছেড়ে দেবার কথা আসেই নি। এই হং নামের লোকটা যদি ভিডিও না করত তাহলে তো কোন ভাবেই জানতে পারতাম না কি গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আমি ফেসবুকের কোন রকম আজাইরা কথা শুনতে রাজি না। প্রমাণ দিতে পারলে কথা বলেন না পারলে আমার যুক্তি আর প্রমাণ খণ্ডন করেন। আমাকে অযথা গালাগালি করবেন না বা বয়ান দিতে আসবেন না। ভুং চুং বুঝানোর দিন শেষ।
ভিডিও তে আর একটা জিনিস লক্ষ্য করার মতো, সেটা হল জঙ্গিরা যখন হাসানাতকে ছেড়ে দিল সে তার স্ত্রী এর সাথে বেরিয়ে যাচ্ছে আর পিছনে যাচ্ছে হাসানাত এর সন্তান। আবারো খটকা লাগলো। চোখের সামনে যদি ২০ তার উপরে মানুষকে গলা কেটে হত্যা করা হয় সেই অবস্থা দেখার পর সবার আগে মানুষ তার ছেলে মেয়েকে বুকে আগলিয়ে রাখবে। কি রাখবে না? সন্তানের নিরাপত্তার কথা সবার আগে ভাববে সে যে কোন সুস্থ মস্তিষ্কের বাবা মা হোক না কেন। কথাটা মানুষের সহজাত স্বভাবের দরুন থেকে বলছি। এবং এটাই তো হওয়া স্বাভাবিক। কি স্বাভাবিক নয়? তাহলে ওই মুহূর্তে ভিডিও তে দেখলাম হাসানাত খুব স্বাভাবিক ভাবে তার পরিবার নিয়ে সন্তানকে সবার পিছনে ফেলে আগে আগে হেঁটে যাচ্ছে স্বাভাবিক মানুষের মতো। ব্যাপারটা খুব অস্বাভাবিক মনে হয়েছে আমার। আমি কোন ধান্দাবাজিতে যাবই না। আজাইরা গেসিং গেম খেলার দিন শেষ। আমার বিচার বিশ্লেষণ আমাকে এমন করেই পুরো ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিচ্ছে। যুক্তিযুক্ত যুক্তি যদি কিছু থাকে, পারলে আমাকে ভুল প্রমাণ করেন।
এরপর আসি হাসানাত টাক্কু বেটার স্ত্রী প্রসঙ্গে, এই মহিলা প্রথম আলোকেই বলল, ‘‘জঙ্গিরা শুধু তাদেরকেই ছেড়ে দিয়েছে যারা পবিত্র কোরআন থেকে কলেমা আর সূরা বলতে পেরেছে।’’ জঙ্গিরা তাদেরকে সূরা কলেমা বলতে পারায় তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করেছে। সেহেরীর সময় রোজা রাখবে বলে খেতেও দিয়েছে। তারা গলদা চিংড়ি দিয়ে ভাত মাখিয়ে খেয়েছে।
হইছে, অনেক ধান্দাবাজির গল্প শুনিয়েছেন। আর কত পাপ ঢাকবেন আপনারা? আমাকে একটা প্রশ্নের উত্তর বলেন, চোখের সামনে ২০ টা মানুষকে জবাই হতে দেখলেন, ওই অবস্থায় কি করে আপনাদের খাবার খাওয়ার রুচি আসে, আমার বোধগম্যে আসে না। গলা দিয়ে তো খাবার নামার কথাই না আপনাদের। রক্তে ভেসে যাওয়া রক্তাক্ত মেঝে আর গলাকাটা লাশ গুলো এভাবে পড়ে থাকতে দেখে আপনারা গলদা চিংড়ি দিয়ে ভাত খাইছেন? ফাজলামির একটা সীমা থাকা উচিৎ নয় কি? আবার বলেন যারা কলেমা পড়তে পারছে তাদেরকেই জঙ্গিরা ছাড়ছে। ভাঁওতাবাজির একটা সীমা থাকা দরকার। আবার আরও বলেছেন যে বোরখা না পরায় ইসরাত আকন্দকে মেরে ফেলছে। Are you out of your mind? এদের যুক্তি দেখলেই মনে হয় সব কিছু বানোয়াট। মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার ধান্দা ছাড়া আর কিছুই না। যদি রোজা রেখেই থাকে তাহলে সূর্য ওঠার পর তো কিছু খাওয়ার নিয়ম নেই। তাহলে হাস্নাত টাক্লা কি কারনে ছাদে উঠেছিল সকাল বেলায়? সেখানে ২ই জন জঙ্গি নিয়ে মনের সুখে সিগারেট খেয়েছিল। তাহলে কি সে রোজা ছিল না? ভিডিও তে স্পষ্ট দেখা গেছে সে ধুম পান করেছে। এই একটা প্রমাণ এ তো হাসানাত এর স্ত্রীর উপরের বলা প্রত্যেকটি কথা সন্দেহহীন ভাবে নাকচ করে দেয়।
রমজান মাসে রোজা না রেখে হাস্নাতকে ধূমপান করতে দেখা যাচ্ছে ভিডিওতে। তার স্ত্রী বলে কলেমা, সূরা পড়তে না পারায় জঙ্গিরা সবাইকে জবাই করে, বোরখা পড়ে নি বলে জবাই করে। তারা সবকিছু বলতে পেরেছিল বলে বোরখা পরেছিল বলে জঙ্গিরা তাদের উপর খুশি হয়। তাদেরকে রোজা রাখার জন্য আবার গলদা চিংড়ি আর ভাত দিয়ে সেহেরী খেতে দেয়। কিন্তু আমি যদি তর্কের খাতিরে সব কিছু মেনেও নেই, একটা প্রশ্ন তো জিজ্ঞেস করতেই পারি? আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, ভাল মুসলিম বলে সব কিছু মাফ হয়ে গেল, কিন্তু সেই রমজান মাসেই ছাদে উঠে দুইজন জঙ্গি সাথে নিয়ে রোজা না রেখে হাস্নাত টাক্লা সিগারেট ফুকাইতেছিল? রোজা রাখার জন্য তাহলে এত ঘটা করে ২০ টা গলা কাটা লাশ কে সামনে রেখে গলদা চিংড়ি মাখিয়ে ভাত খাওয়ার যুক্তিটা কি গ্রহণযোগ্য? শিয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেয়ার মতো হয়ে গেল না?
হাস্নাত বলেছিল যেদিন হামলা হয়েছে সেদিন রাতে সন্তানের জন্মদিন পালন করতে সপরিবারে গিয়েছিল ওই রেস্টুরেন্ট এ। এদের ভাষ্য মতে,আপাত দৃষ্টিতে এদেরকে ধর্ম নিয়ম বেশ ভাল করে মানে সেটা ধরে নিচ্ছি। ইসলামের ধর্ম মতে মদ পান করা, শুকরের মাংস খাওয়া হারাম। তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে, তাদের এত রাতে একটা স্পানিশ রেস্টুরেন্ট, যেখানে বেশিরভাগ কাস্টমার বিদেশী, তাই হারাম হালালের বাছ বিচার নাই। ধরে নিচ্ছি সেখানে বেশির ভাগ মানুষ মদ আর শুকরের মাংস খেয়ে অভ্যস্ত এবং রেস্টুরেন্ট এর মধ্যেও খাওয়া হয়।( আমি বোঝানোর সুবিধার্থে এত পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বলছি, দয়া করে বাজে ভাবে নেবেন না, প্রমানের ক্ষেত্রে এরকম করে বলা ছাড়া অন্য উপায় আপাত দৃষ্টিতে চোখে পরছে না) এরকম একটা রেস্টুরেন্ট যেখানে বিদেশী মদের ছড়াছড়ি, শুকরের মাংসের অনেক আইটেম আছে, এরকম একটা জায়গায় পরিবার নিয়ে জন্মদিন পালন করতে এসেছিলেন হাসানাত? তাও বোরখা হিজাব পরিয়ে? ব্যাপারটা ঠিক আমার বোধগম্য হয়ে উঠছে না।
আমি অবশ্যই জানতে চাই এও মহব্বত জঙ্গি ভাইদের সাথে হাসানাত পরিবারের কেন? কিসের জন্য এত মহব্বত? আরও তো বাঙ্গালী ছিল কই ওরা তো কেউ রক্ষা পাইল না। জবাই করে মারল। আমি আবারো হলপ করে বলছি। এই হাসানাত কেই আমার জঙ্গিদের অংশ বলে মনে হচ্ছে। সে অবশ্যই আর একটা কালপ্রিট বলে আমার মনে হচ্ছে। সব কিছু বানোয়াট লাগছে হাস্নাতের পরিবার থেকে যা কথা বলা হয়েছে। কেন জানি মনে কু ডাকছে যে এই হাসানাতই আসল শয়তান।