কথায় কথায় মৃনাল কান্তি দাস হাসতে হাসতে বলতে থাকে,শেখ হাছিনার শরীরে কোথায় কি আছে, কতটুকু আছে আমি মৃনালের জানতে বাকি নেই……বঙ্গবন্ধু কন্যা আওমীলীগ সভানেত্রী শেখ হাছিনা ১৯৮১ সালের ১৭ই মে বাংলাদেশে আসার পর থেকে তার স্বামীডঃ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে কখনই
একটি দিন বা একটি রাত স্বামী –স্ত্রী হিসেবে কাটাননি। আগেই বলেছি শেখ হাছিনা বাংলাদেশে আসার পর প্রথমে তার স্বামীর মহাখালি সরকারী কোয়ার্টারে ওঠেন, পরে ধানমন্ডি বত্রিশে তার পিত্রালয় বঙ্গবন্ধু ভবন, তারপর ২৯ মিন্টু রোড় এবং তারও পরে ধানমন্ডি ৫ নাম্বারে স্বামী ও নিজের বাড়িতে এবং এখন প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে থাকেন। কিন্তু তার স্বামী ডঃ ওয়াজেদ প্রথম
থেকে এখন পর্যন্ত তার (ডঃ ওয়াজেদের) মহাখালির আণবিক শক্তি কমিশনের কোয়ার্টারেই রয়েছেন। তিনি কখনোই ধানমন্ডি বত্রিশে, ২৯ মিন্টু রোড়ে, ধানমন্ডি ৫ এবং গণভবনে আসেননি এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনাও তাকে আনেননি। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনা যখন তার স্বামীর মহাখালি কোয়ার্টারেথাকতেন তখন ডঃ ওয়াজেদ থাকতেন ঐ কোরার্টারের ভিতরের রেষ্ট
হাউজে। উভয়ের সাথে রাতে-দিনে দেখা সাক্ষাৎ তো দূরের কথা মুখোমুখিও হতেননা।
মহাখালি স্বামীর কোয়ার্টারে থাকতে এবং পরবর্তীতে ধানমন্ডি বত্রিশের পিত্রালায় বঙ্গবন্ধু ভবনে থাকতে ১৯৮৭ সালে মুন্সিগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজ ছাত্র সংসদের ভি পি মৃনাল কান্তি দাস নামের তরুণ যুবক আসার আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু কন্য শেখ হাছিনা নিয়মিত, রুটিন মাফিকভাবে প্রতিদিন সন্ধার ঠিক এক ঘন্টা আগে গোসল করে পাউডার, পারফিউম মেখে লম্বা চুলের একটা বেণী করে, চকচকে নতুন শাড়ী-ব্লাউজ পরে খুবই পরিপাটি হয়ে কাউকে সঙ্গে না নিয়ে শুধুমাত্র গাড়ির চালক ড্রাইভার জাললকে সঙ্গে নিয়ে অঞ্জাতস্থানে বেরিয়ে যেতেন এবং দু এক ঘন্টা পরে ফিরে আসতেন। শুধু এই সময়ে ঐ অজ্ঞাত স্থানে যাওয়াছাড়া বঙ্গবন্ধু কন্য শেখ হাছিনা আর কখনই একা শুধু জীপ গাড়ী আর চালক নিয়ে বাইরে যেতেননা। ঐ সময় এবং ঐ অজ্ঞাত স্থান ছাড়া যেখানেই যেতেন তার সাথে অবশ্যই সকলকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন। ১৯৮৭ সালে মুন্সিগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজ ছাত্র সংসদের ভি পি তরুণ যুবক মৃনাল
কান্তি দাসের সাথে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনার পরিচয় হয় এবং পরিচয়ের পর থেকেই মৃনাল কান্তি দাস ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে দিবা-রাত্রি
সার্বক্ষণিকভাবে থাকতে শুরু করলো। শেখ হাছিনা তখন ঐ বাড়িতেই থাকেন। শেখ হাছিনা ধীরে ধীরে রুটিন মাফিক সন্ধার আগে অজ্ঞাত স্থানে যাওয়া ছেড়ে দিলেন। অধিক রাত পর্যন্ত এমনকি গভীর রাত পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ভবনের লাইব্রেরী কক্ষে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে মৃনাল কান্তি দাস আর শেখ হাছিনা কুট কুট করে কথা বলতেন আর খিল খিল করে হাসাহাসি করতেন। হ্যাংলা পাতলা তরুণ মৃনাল কান্তি দাস অচিরেই ফুলে ফেঁপে এমন নাদুস নুদুস হলো যে, মৃনালের পাছার (নিতেস্বর) আয়তন হল প্রায় সত্তর ইঞ্চি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনার কাছে মৃনালের গ্রহণ যোগ্যতা এতোই বেড়ে গেল যে, তা সকলের কাছে ঈর্ষার ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালো। মৃনাল কান্তি দাস হল শেখ হাছিনার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ব্যাক্তি। বঙ্গবন্ধু কন্য শেখ হাছিনার উপর মৃনাল কান্তি দাসের প্রভাব এতোই বেশি হলো যে, আওয়ামী রাজনীতির সকলেই মৃনাল কান্তি দাসকে শেখ হাছিনা রাজ্যের সম্রাট বলে, কুর্নিশ করতে কুণ্ঠিত হতো না। মৃনাল এতোই ক্ষমতাবান হলো যে, ১৯৯০ সালে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির জেনারেল সেক্রেটারী বর্তমান পরিবেশ ও বনমন্ত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে অপমান-অপদস্থ করে বঙ্গবন্ধু ভবন থেকে বের করে দিল। আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আওয়ামীলীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনার কাছে এর বিচার ও প্রতিকার না পেয়ে, দলের ওয়ার্কিং সভায় পর্যন্ত এই ঘটনা তুলেছিলেন। এরপরে মৃনাল কান্তি দাস সর্বেসর্বাহয়ে পড়লো। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনার পোষ্য আত্নীয় বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর এ পি এস বাহাউদ্দিন নাসিম এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাছিনার চীফ সিকিউরিটি নজিব আহাম্মেদরা মৃনালের হুকুমে, মৃনালকে সিগারেট এনে দিয়ে ধন্য হত। বঙ্গবন্ধু ভবনে একদিন মৃনাল সহ চার পাঁচজন তাস খেলছে, বেলা তখন তিনটা সাড়ে তিনটা।
এমন সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনার একমাত্র মামা আকরাম মামা এসে কুভঙ্গিতে, কুইঙ্গিত করে মৃনালকে বললেন, ‘এই মৃনাল যাও না, তোমার জন্য না খেয়ে বসে আছে’। মৃনাল বলল, ‘আরে থাক, থাকতে দেন কিছুক্ষণ না খেয়ে’। মৃনাল খেতে যাচ্ছেনা, তাই শেখ হাছিনা না খেয়ে মৃনালের প্রতীক্ষা করছে। আকরাম মামা সেই কথাই মৃনাল কান্তি দাসকে বললেন। কিন্তু আকরাম মামার এই কথা বলার বাচনভঙ্গি খুবই খারাপ এবং খুবই আপত্তিকর। আর মৃনাল কান্তি দাস যাদের সাথে বসে তাস খেলছিল, তাদের কাছে আরো ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য, আরো ডাট করে জবাব দিল, ‘আরে থাক, থাকতে দেন কিছুক্ষণ না খেয়ে’। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনাকে না খেয়ে তার (মৃনালের) জন্য আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে দেন। মৃনাল কান্তি দাস হয়ে উঠল বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনা রাজ্যের একক অধিপতি। মৃনালের কথা-বার্তায়, চাল-চলনে, আচার-ব্যাবহারে একক অধিপতির ছাপ পরিস্ফুটিত হতে লাগলো। একদিন মৃনাল কান্তি দাস বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনার উপর রাগ করে চলে গেল। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনা নিজে গিয়ে রাগ ভাঙ্গিয়ে মৃনাল কান্তি দাসকে সঙ্গে করে বঙ্গবন্ধু ভবনে নিয়ে এলেন। এর কিছুদিন পর মৃনাল আবারো রাগ করে বঙ্গবন্ধু ভবন ত্যাগ করে চলে গেলে শেখ হাছিনা অন্যন্যোপায় হয়ে মৃনালকে আবারো বঙ্গবন্ধু ভবনে ফিরিয়ে আনলেন।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে হেরে গিয়ে ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবন ত্যাগ করে বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনা মৃনাল কান্তি দাস ও তার তিন পৌষ্য-অত্নীয় নজিব, নাসিম ও নকিবকে সঙ্গে নিয়ে ২৯ নম্বর মিন্টু রোড়ের সরকারী বাসায় উঠলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনা তার তিন পৌষ্য আত্নীয় নজিব, নাসিম ও নকিবকে নিয়ে মিন্টু রোড়ের বাসায় উঠায় যার পরনাই অসন্তুষ্ট হলো মৃনাল। এই অসন্তুষ্টির এক পর্যায়ে মৃনাল কান্তি দাস বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনার মিন্টু রোড়ের সরকারী বাসা ত্যাগ করে চলে গেল। মৃনাল চলে যাওয়ার পর শেখ হাছিনা তিন তিনবার নিজে স্বয়ং মৃনালকে ফিরিয়ে আনতে যান। মৃনাল কান্তি দাস ফিরে না এসে, লোকের কাছে পরোক্ষভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনার সাথে তার ‘দৈহিক’ সম্পর্কের কথা প্রচার করতে থাকে, শেখ হাছিনার শরীরে কোথায় কি আছে, কতটুকু আছে আমি মৃনালের জানতে বাকি নেই। মৃনালের এসব কথা লোকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনার কানে পৌছাতে লাগল। বছর কয়েক পর বাংলা নতুন শতাব্দী ১৪০১ সালের ১লা বৈশাখ প্রত্যুষে অন্য কেউ আসার আগেই মৃনাল কান্তি দাস ২৯ নম্বর মিন্টু রোড়ের বাসার দোতলার বারান্দায় এসে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনার সাথে দেখা করলে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনা দূরে ঘাস খেতে থাকা একটি ছাগল দেখিয়ে মৃনালকে বলেন, দেখ, দেখ ঐটা হলো তুই। এর বছর খানেক পর মৃনাল কান্তি দাস পুনরায় নিয়মিত ভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনার সাথে যোগ দিলেও পূর্বের অবস্থানে যেতে পারেনি। শেখ হাছিনা ১৯৯৬ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারী সন্ধাবেলা ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনের ভেতরের গেটের সামনে-পিছন দিক থেকে মৃনাল কান্তি দাস-এর ভুঁড়ি (পেট) জড়িয়ে ধরা ছাড়া আর তেমন কোন পাত্তা দেননি। (লেখাটি আমার ফাঁসি চাই বই থেকে হুবহু তুলে ধরা হল)