বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যারা করে তাদের আমি প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করবো।যথা
১ আদর্শবান আওয়ামী লীগ
২ আদর্শহীন আওয়ামী লীগ
এখন এই দুই ভাগকে এবার একটু সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ করে দেখি
আদর্শবান আওয়ামী লীগঃ উনারা আওয়ামী লীগের মূলনীতি বিশ্বাস করেই আওয়ামী লীগ করে।রাজনৈতিকভাবে উনারা আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করে অথবা তারা চায় দেশটা আওয়ামী লীগের আদর্শে চলুক।আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত ভোটের মাঝে ১% ভোট পায় এই আদর্শবান আওয়ামী লীগদের দ্বারা।আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ভাবে ৪ টা মূলনীতিতে বিশ্বাস করে।নিম্মে ৪ টি মূলনীতির উধাহরন দেওয়া হল
১ বাঙালি জাতীয়তাবাদ
২ ধর্মনিরপেক্ষতা
৩ গনতন্ত্র
৪ সমাজতন্ত্র
এই ৪ টা মূলনীতি যে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে তাদেরকেই আমি আদর্শবান আওয়ামী লীগার বলি।এরা নিজেদের মন থেকেই আওয়ামী লীগ করে
আদর্শহীন আওয়ামী লীগঃবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনে যত ভোট পায় তার মাঝে ৯৯% ভোট হচ্ছে এই আদর্শহীন আওয়ামী লীগাররা।উনারা আওয়ামী লীগের ৪ টা মূলনীতি আছে এই ব্যাপারটাই জানে না।উনাদের কেউ বাঁচলে ও আওয়ামী লীগে ভোট দেয় কিংবা মরলেও আওয়ামী লীগেই ভোট দেয়।আবার কেউ কেউ এমনিতেই আওয়ামী লীগে ভোট দেয়।মোট কথা উনারা কোন আদর্শ ছাড়াই আওয়ামী লীগ করেন।এ ধরনের লোকদের আবার আমি কয়েকটি ঘটনা ভাবে ভাগ করেছি।যথা
১ পৈতৃকসূত্রে আওয়ামী লীগার
২ স্থায়ী ভোট ব্যাংক
৩ বঙ্গবন্ধুর এলাকার লোক
৪ দলীয় কর্মী
৫ ইসলাম বিদ্বেষী আওয়ামী লীগার
এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের মূলত দুই ভাগ।এই ২ ভাগকে আবার বিশ্লেষণ করলে মোট আওয়ামী লীগারদের ৫ ভাবে ভাগ করা যায়
নিম্মে তাদের উধাহরন
১ পৈতৃক সূত্রে আওয়ামী লীগার
২ হিন্দু আওয়ামী লীগার
৩ দলীয় কর্মী আওয়ামী লীগার
৪ বঙ্গবন্ধুর এলাকার লোক
৫ ইসলাম বিদ্বেষী আওয়ামী লীগার
৬ আদর্শগত আওয়ামী লীগার
১ পৈতৃক সূত্রে আওয়ামী লীগার:আমার বিশ্বাস আওয়ামী লীগের ৭৮% ভোটার এরাই।এ ধরনের লোক কোন আদর্শগত ভিত্তি ছাড়া আওয়ামী লীগ করে।তাদের যদি আপনি প্রশ্ন করেন কেন আওয়ামী লীগকে সাপোর্ট দেন অথবা কেন আওয়ামী লীগকে ভোট দেন?
তাদের স্বাভাবিক উত্তর হবে এ রকম
১ আব্বা-আম্মা আওয়ামী লীগ করে তাই আমরাও আওয়ামী লীগ করি
২ বঙ্গবন্ধু আমাদের এলাকার লোক তাই আওয়ামী লীগ করি
৩ ফ্যামিলির সবাই আওয়ামী লীগ করে ব্যাটা তাইলে আমি অন্য কুনু দল করুম কে।তাই আমিও আওয়ামী লীগ করি
৪ আওয়ামী লীগে ভোট দেই আমার বাপের ইচ্ছা তরে কউয়া লাগবো কেন আওয়ামী লীগ করি
৫ আমার বাড়ির পাশের বাড়ি বঙ্গবন্ধুর বাড়ি তাই আম্লিগ করি।
২ স্থায়ী ভোট ব্যাংকঃবাংলাদেশে জনসংখ্যার প্রায় ১০% জনগোষ্ঠী হিন্দু।এই ১০% লোকের সবার ভোট আওয়ামী লীগ পায়।আওয়ামী লীগে তাদের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১৫%(আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত ভোট হিসেবে)।এমনকি যারা গা বাঁচানোর বিএনপি করে তারাও লুকিয়ে ভোটটা আওয়ামী লীগেই দেয়।কারন আওয়ামী লীগ আসলে তাদের সবচেয়ে বড় সুবিধা।উনারা বাঁচুক আর মরুক ভোট আওয়ামী লীগই পাবে।হিসেবে দেখা গেছে হিন্দুদের ৮৫% সম্পত্তি আওয়ামী লীগেই দখলে কিন্তু তারপরও উনারা আওয়ামী লীগে ভোট দেয়।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শক্তি এরা।অনলাইন কিংবা অফলাইনে উনারাই আওয়ামী লীগের জন্য জান-প্রান দিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন।আওয়ামী বিরোধীদের দমনে ফেসবুক এ যে নতুন নতুন গ্যাং তৈরি হচ্ছে তার নেত্রিত্ত পর্যায়েও তারা আছে।প্রশাসনিক কাজেও তাদের ব্যাবহার করা হচ্ছে।এই সরকারের আমলে উনাদের প্রচুর সংখ্যক লোককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।এক পত্রিকায় দেখলাম শুধুমাত্র ২০১৩ সালেই ২২ হাজার হিন্দুকে পুলিশ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।চট্টগ্রাম এলাকার প্রায় সবাই হিন্দু এবং খবর এসেছে যত পুলিশ দ্বারা মসজিদে হামলা হয়েছে এবং মুসল্লিদের গুলি করা হয়েছে তা সব আওয়ামী হিন্দু পুলিশ লীগের আন্ডারে।উনাদের সম্প্রদায়ের অনেকেই সাংবাদিকতাকে তাদের পেশা হিসেবে নেন।যার ফলশ্রুতিতে আমরা হলুদ সাংবাদিকতা দেখতে পাচ্ছি।বিখ্যাত হলুদ সাংবাদিক মুন্নী সাহা এর বড় একটি উধাহরন।খুনী হিসেবেও উনাদের বেশ কিছু লোক জড়িত যারা আওয়ামী বিরোধীদের খুন করে।খুনী বাপ্পাদিত্ত,খুনী প্রকাশ-বিকাশ এ দলের লোক
৩ দলীয় কর্মী আওয়ামী লীগারঃ আওয়ামী লীগের সরাসরি কর্মী এরা।এরা ছাত্রলীগ,যুবলীগ,মহিলা লীগের,শিশুলীগের সদস্য।উনারা স্রেফ ক্ষমতার জন্য আওয়ামী লীগ করেন।উনাদের দল যদি ক্ষমতায় যেতে পারে তাহলে ৫ বছর তারা আরামে থাকতে পারবেন এইটা তাদের আশা।এদের বেশীরভাগই সন্ত্রাসী টাইপের লোক।ঢাকার প্রায় ৯০% সন্তাসি তাদের কাজেই সুবিধার্থে আওয়ামী লীগ করে।আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত ভোটের শতকরা ৫%
৪ বঙ্গবন্ধুর এলাকার লোকঃউনারা বঙ্গবন্ধুর এলাকার আশেপাশে থাকেন।আবার কারো কারো বাড়ি একদম বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সাথে একদম ঘেসানো।জানালা দিয়ে তাকালেই দেশনেত্রীকে দেখতে পায় ।উনারা শুধু বঙ্গবন্ধুর আশাপাশে বাড়ি বলেই আওয়ামী লীগে ভোট দেয়।অন্য কোন কারনে নয়
৫ ইসলাম বিদ্বেষী আওয়ামী লীগারঃযাবতীয় ইসলাম বিদ্বেষী দলের লোকেরা এইভাগে পড়ে।তারা আওয়ামী লীগ করে শুধুমাত্র ইসলামকে অপমান করার সুবিধার্থে।ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগারচক্র এই ভাগে পড়ে।বাংলাদেশের যাবতীয় নাস্তিক চক্রের লোকেরাও এই দলভুক্ত।আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত ভোটে এদের শতকরা হার ১%
৬ আদর্শগত আওয়ামী লীগারঃআগেও যেমন বলা হয়েছিলো উনারা আওয়ামী লীগের মূলনীতি বিশ্বাস করেই আওয়ামী লীগ করে।রাজনৈতিকভাবে উনারা আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করে অথবা তারা চায় দেশটা আওয়ামী লীগের আদর্শে চলুক।আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত ভোটের মাঝে ১% ভোট পায় এই আদর্শবান আওয়ামী লীগদের দ্বারা।এরা আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র জেনেই আওয়ামী লীগ করে।আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আদর্শে তারা বিশ্বাস করে।লীগের কমিউনিস্ট আদর্শ অথবা সামান্য বামপন্থী ধারা তারা মানে।তারা চায় ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার,ধর্ম নিরপেক্ষতা,সমাজতন্ত্র।কোথাও কোন অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে যেন কোন ধর্মীয় আচার পালন না হয় (যেমন বিসমিল্লাহ্ বলা)।তারা মনে করে দেশ থিকা ধর্মের শেষ চিনহটুকু মুছে ফেললে দেশ আধুনিক হবে।আই মিন এক কথায় বলা যায় যারা আদর্শগতভাবে বামপন্থী।আসিফ মহিউদ্দীন,আরিফ জেবাতিক,অমি পিয়াল,আইজুদ্দিন এদের উধাহরন
এই হচ্ছে আমার দৃষ্টিতে যারা যারা আওয়ামী লীগ করে তাদের শ্রেণীবিভাগ।এখন আমি উপসংহারে কিছু কথা বলে নিতে চাই।আমারা সবাই বাংলাদেশের মানুষ।আমাদের সবার লক্ষ্য হওয়া উচিৎ আগে দেশ পরে দল।কিন্তু বর্তমানে এ ধরনের লক্ষ্য আমাদের দেশে আমি দেখতে পারচ্ছি না।আমরা যারা ফেসবুক এ আছি তারা বেশীরভাগই বিনোদন কিংবা যোগাযোগ রাখার জন্যই ফেসবুক এইডি খুলেছি।মারামারি কিংবা গালাগালি করতে অনলাইনে আসি নি।কিন্তু একদল লোক ২০০৮ এর শেষের দিকে এবং ২০০৯ এর শুরুর দিয়ে মারামারি,গালাগালি করতেই অনলাইনে এসেছে।তাদের লক্ষ্য হচ্ছে তাদের মতবাদ জোড় করে অন্য মানুষদের গিলাবে।সেই লক্ষেই তারা বিগত ৪ বছর ধরে কাজ করেছে।তারা তাদের নিজেদের দল ভারি করতে চেয়েছিলো।দুই ধরনের লোক এই ধরনের লক্ষ্য নিয়ে অনলাইন জগত এ নামে।তাদের এক পক্ষে হচ্ছে নাস্তিক এবং আরেক পক্ষে হচ্ছে আওয়ামী সমর্থক ব্লগাররা
রাজনীতি নিয়ে আমার তেমন একটা আগ্রহ কখনও ছিলো না।কিন্তু একজন দেশপেমিক হিসেবে যখন দেখলাম এরা এদের ক্ষমতার জন্য দেশকে বিভক্ত করে ফেলছে তখন আর চুপ করে থাকতে পারলাম না,যখন দেখলাম এরা ক্ষমতার জন্য এরা দেশের বিরোধী পক্ষকে মেরে ফেলতে চাইছে তখন আর চুপ করে থাকতে পারলাম না,যখন দেখলাম দেশের সিংহভাগ মানুষের সমর্থন থাকা সত্তেও এরা জামাতকে নিষিদ্ধ করছে না তখন আর চুপ করে থাকতে পারলাম না(জামাত নিষিদ্ধ হলে এরা রাজনীতি করবে কি নিয়ে?)।এরা ক্ষমতার জন্য দেশের পতাকা পুড়িয়েছে,শহিদ মিনার ভেঙ্গেছে,মুসল্লিদের পিটিয়েছে,৫ ই মে মতিঝিলে গণহত্যা চালিয়েছে তখন একজন দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে চুপ করে থাকা যায় না।
তাই দেশের বৃহতর ঐক্কের জন্য দেশপ্রেমিক সব বাংলাদেশীর আওয়ামী লীগের বিপক্ষে দাঁড়ানো উচিৎ।তাই এখন সবার টার্গেট হওয়া উচিৎ দেশে কিভাবে আওয়ামী লীগের ভোট কমানো যায় সে দিকে মনোযোগ দেওয়া ।আমার ফ্যামিলি পরিবারগতভাবে আওয়ামী লীগ করে এবং আমি নিজেও ২০০৮ এর ৩১ শে ডিসেম্বর নির্বাচনের আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিলাম।এবারে আমি আমার আওয়ামী বিরোধী অভিযান আমার পরিবার থেকেই শুরু করেছি।আমার এইবারের টার্গেট আমার পরিবার থেকে যেন ১ টা ভোট ও আওয়ামী লীগ না পায় সেই বেবস্থা করা এবং আমি এই ক্ষেত্রে বেশ সফল হয়েছি।এখন দেশের সব জনগনের মাঝে উচিৎ আওয়ামী বিরোধী মনভাব তৈরি করা।এখন আদর্শগত লীগার আর স্থায়ী ভোট ব্যাংক নিয়া আমার বলার কিছু নাই।উনাদের ১৬% ভোট আওয়ামী লীগের জন্য বরাদ্দ।কিন্তু আমার খালি আফসোস সেই পৈতৃক সূত্রে আওয়ামী লীগারদের জন্য।যারা ফালতু কিছু কারনের জন্য আওয়ামী লীগ করে।তুমি বাবা বামপন্থী না,নাস্তিক না,ইসলাম বিদ্বেষী না কিংবা স্থায়ী ভোট ব্যাংকও না তাইলে আওয়ামী লীগ কর কেন?জাতীয় পার্টি,বিএনপি কিংবা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিও তো করতে পারে অথবা অন্য যে কোন দল।আমরা যদি এই পৈতৃক সূত্রে আওয়ামী লীগারদের বুঝাতে পারি সবার আগে দেশ,সবার আগে আমাদের ধর্ম ইসলাম তাহলে এই পৈতৃকসূত্রে আওয়ামী লীগারদের প্রাপ্ত ৭৮% ভোট আমরা ফেরাতে পারবো।একজন পৈতৃক সূত্রে আওয়ামী লীগার হিসেবে আমি দুঃখিত আওয়ামী লীগে ভোট দেবার জন্য,আমি দুঃখিত আমার ভোটের জন্য আজ আওয়ামী লীগ দেশের রাজধানীতে ইমামদের গণহত্যা চালাতে পেরেছে এই জন্য।আমার বিশ্বাস আওয়ামী লীগ যে পৈতৃক সূত্রে ৭৮% মানুষ ভোট দিয়েছে তারাও দুঃখিত।আমাদের সব আওয়ামী বিরোধী লোকের আজ এক হওয়া দরকার।দেশকে বিভক্তির হাত থেকে বাঁচাবার জন্য এক হওয়া দরকার।যে দল শুধুমাত্র ক্ষমতার জন্য নিষিদ্ধ করে না আমি চাই সে দল যেন বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ হয়ে যায়।আমি জামাতকে নিষিদ্ধের জন্য আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিলাম কিন্তু আওয়ামী লীগ জামাতকে নিষিদ্ধ করে নি কারন তারা জামাতের জুজুর ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়।তাই আমি চাই ভবিষ্যৎ এ বাংলাদেশে যেন আওয়ামী লীগ নামে কোন দল না থাকে।তারা যেন তাদের আম্মা দল মুসলিম লীগের মত চীরজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হয়ে যায়