একজন মুখস্ত তোতার মত ডায়ালগ দেয় ঐ ইংরেজিতে কয়না ইসলাম ইজ দা কমপ্লিট কোট অব লাইফ।
অন্যরা সায় দেয় হ হ হ কই ইসলাম আর কই অন্য ধর্ম। কই রাজরানী কই চাকরানী।
মনু এমন সময় বলে ঐ আমি কাসেমি হুজুরের কামরায় গেলাম আপনেরা প্যাপার পড়েন।
অন্যরা প্যাপারে ভাগ পেয়েই প্যাপারের পেইজের ভাগ নিয়ে টানাটানি করে। এই টানাটানিতে সব পেইজ ঠিক থাকলেও রঙিন পেইজটা কিছুটা ছিরে যায়। এতে প্রায় সবায় বিরক্ত হয়।
দিলেন তো ছিঁড়া। মিয়া একজন একজন করে পড়েন।ছিঁড়লেন তো একেবারে শাবনুরের মুখের উপর বুকের উপর দিয়া। হালায় আর মানুষ হইলেননা।
মনু কামরা থেকে বেড় হয়ে লম্বা বারান্দা দিয়ে এগিয়ে যেতেই ওসমানের সাথে দেখা হয়।
ওসমানকে মনু জিজ্ঞাস করে কই ওসমান ভাই গত দুইদিন কই ছিলেন?
বাসায়। ভাবতাছি হুজুররে কি বলুম।
মনু বলে আর কি কইবেন জ্বর হইছিল কইয়েন তয় পেট ব্যাথা কইয়েননা তাইলে হুজুরে মজা নিবো।
ওসমান হেসে বলে তাইলে সেলিমের মত কই আমার চাচা মারা গেছে।
ধুর মিয়া সেলিমের তো মরা চাচারে বারবার মারছে আপনিও মারবেন?
ওসমান বলে আরে না আমার তো আপনা চাচাই নাই।
দুজনেই হেসে উঠে এই সব কথায়।
ওসমান বলে কই যান মনু ভাই?
ঐ চার তলায় কাসেমি হুজুরের কাছে যাই।
চার তলায় তো কাসেমি হুজুর না কারী মুজাম্মেল সাহেব!
মনু অবাক হয়। ও মোর খোদা ঐ মিয়া আপনি তো দুদিন হইলো আহেননা আর কারী সাব গেছে তো আইজ দুই সপ্তাহ।
দুই সপ্তাহ কন কি! কন কি! কোন ফাঁকে গেল? ক্যামনে গেল?
নিচ তলায় দুটো ওজুখানা একটি মসজিদ সংলগ্ন আরেকটি মাদ্রাসার দপ্তর লাগোয়া।দপ্তরে বসে হুজুরেরা আড্ডা দিচ্ছে আর মনোয়ার ও ওসমান ওজু করা বাদ দিয়ে কান খাড়া করে হুজুরদের আলাপ শুনছে।
দপ্তর লাগোয়া ওজুখানাটা বেশ ছোট কারন এটা শুধু মাদ্রাসা ছাত্রদের ২৪ ঘণ্টা ব্যবহারের জন্য।
মসজিদের ওজুখানায় নামাজের সময় ছাত্ররা ওজু করতে গেলে কোন কোন মাতব্বর ঘরানার মুসুল্লি জিজ্ঞেস করে কি নামাজের সময় মুসুল্লি গো ওজু করবার দিবা না, নিজেরাই ওজু খানা দখল কইরা রাখবা, আগে কই আছিলা কিতাব কি ওজু ছাড়াই পড়, ঐ মাসালাডা কও দেহি, কি মাসালাডা জানো না,
মাদ্রাসায় কি পড় যে মাসালা জানো না, মাদ্রাসায় ও কি আজকাল ফাঁকিবাজি কাম কারবার চালু হইলো নি, দাড়াও তোমাগোর বড় হুজুররে জিগাইতাছি, ইত্যাদি।
এমন সময় এক সাহসী ছাত্র বলে উঠে আপনি যারে মাসালা জিগাইছেন ও ছোড ক্লাসের, ও সব মাসালা জানবো কই থিকা, আমারে কন আমি কই।
মুরুব্বী হাজী তো ক্ষেপে যায় ওর কথায়। সবে মাত্র সবাইকে জানান দেয়া শুরু করেছিল যে সে মসজিদ মাদ্রাসার একজন কর্তৃপক্ষ, কমেটি মেম্বার আর এই ছাত্র নি টান মাইরা কতা কয়।
বেয়াদব মুরুব্বীদের সাথে ক্যামনে কতা কয়তে হয় জানো না?
আমি বেয়াদবি করলাম কই আমি কইলাম ও ছোড ক্লাসে পড়ে ও জানেনা আমারে কন।
তুমি আমারে চেন?
জি চিনি আপনে এই পাশের বাড়ির মালিক (ওজু খানার পাশে ৬ তলা বিল্ডিং দেখিয়ে বলে/ওজু খানা আর তার বাড়ির ফারাক মাত্র এক দেড় হাত)
আমরা তোমাগো সব খোঁজ খবর রাখি আর তোমরা লিল্লা বোর্ডিং এ খাইয়া তর্ক কর?!
এবার অনেক দিন ধরে পোষা ক্ষোভ স্থান কাল পাত্র ভুলে ছাত্রটির মুখ থেকে খুৎবার মত ঝড়তে থাকে
হ কত খবর রাখেন প্রতি ফজরের অক্তে মসজিদের ওজু খানায় আইলে দেহি আপনের বাড়ি থিকা পেলাসটিকের টুপি মুজা উপর থিকা ফালাইয়া রাখছে……………………
চলবে