বাঁচাও পর্ব ০১
http://likhalikhi.com/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%93/
মনোয়ার ক্লাসে বসে প্যাপার পড়ছে। প্যাপারের ভিন দেশ পাতায় মুখ গুজে আছে। মাদ্রাসায় ছাত্ররা সাধারণত যেই রুমে ঘুমায় সেই রুমেই খাওয়া দাওয়া সারে আবার সেই রুমেই ক্লাস হয়। মনোয়ার ক্লাসের সেকেন্ড বয়। কিন্তু তার নিজের ক্লাস তো বটেই পুরো মাদ্রাসাতেই ওর চোটপাট অনেক বেশী।
এর কারন হল মনোয়ার হুজুরদের মাথার চুল বড় হলে তা ছেঁটে দেয়। মাদ্রাসার দেয়ালিকায় লেখা আলপনা আকা এক সময় ও নিজেই করতো। এখন ওর তত্ত্বাবধানে হয়। মাদ্রাসার বাইরে যেতে হলে সবার হুজুরের অনুমতি নিতে হলেও মনোয়ারের নিতে হয়না। গেটের দারোয়ান আফজল মিয়া ফারাক্কা বাধের মত গেট সামলে রাখে। এক ফোটা বা এক পিছ ছাত্র ভুলেও গেটের ফাক ফুটো গলে বেড় হতে পারেনা। আর সেই দারোয়ান মনোয়ারকে দেখলে একগাল হেসে কেচিগেট এক ধাক্কা দিয়ে যথেষ্ট ফাক করে দেয়। ফাক দিয়ে মনোয়ার গলে যাওয়ার আগে আফজল মিয়ার সাথে একটু দিল খোঁচা গল্প করে যায়।
আফজল ভাই আজকে কি দেখলেন, কয়ডা গুনলেন?
আর কইয়েননা আজকে এক দল হুর যাইতাছিল।
কোন যায়গার?
ফজলুল হক কলেজের।
হুর কই দেখলেন? কন ছিলকা ছাড়া কলা।
হ খোলা কলাগুলি যাইতাছে, একটা পোলা এক সিটের একটা সাইকেলে কইরা আস্তে আস্তে যায়।কলাগুলা হাসে। সাইকেলডা আস্তে আস্তে চালানের লিগা সারা রাস্তায় সাপের মত মোচরাইয়া চালায়। একবার রাস্তার এই সাইডে তো অন্যবার রাস্তার ঐ সাইডে। এরপর কি হইলো জানেন।
কন কন না কইলে শুনুম ক্যামনে?
তো একটা হুণ্ডা ওয়ালা পিছন দিক দিয়া আইয়া কলাগুলানরে জানান দেয়ার লিগা দেল হরন। আর ঐ সাইকেল ওয়ালা তহন সাপের লাহান মোচরাইতে মোচরাইতে রাস্তার ঐ পাশে গেছে আর হরণের আওয়াজে পোলা নি চইমকা গিয়া সাইকেল নিয়া পরলো পাশের ডেরেনে। আর যায় কই যেই কলাগুলান এতক্ষণ পোলাডারে দেইখা মুচকি মুচকি হাসি দিতাছিল এহন পোলার এই অবস্থা দেইখা দিল হাইসা।
হায়রে হাসি! হাসির দমকা বাতাসে হেগো বুকের ওড়নাই উইরা যায়।
হায় হায় কন কি একটা ছবি তুইলা নিতেন।
ক্যামনে নিম আমার কেমেরা মোবাইল তো নষ্ট।
মোবাইলের মেমোরি কই?
আছে
আছে? মনোয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলে।
ও হ আছে আছে আপনে নিবেন?
নতুন না পুরান?
নতুন হেইদিন মোবাইলের দোকানে গিয়া সাইদির অয়াজ আর কিছু গরম মসলা নিছিলাম।
আপনেরে কত কইলাম সাইদির অয়াজ শুইনেননা অলিপুরি হুজুরেরটা শুইনেন। সাইদি তো হালায় মৌদুদী।
এই প্রথম কিছু না বলে আফজল মিয়া হাসে তার মানে হল সাইদির অয়াজ শুনুমনা এইডা কিছু হইলো।
মনোয়ারের ক্লাসে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল যে ফাস্ট বয় হল শাহজাহান কিন্তু কেউ ওকে পোছেওনা।
সবায় বলে মনোয়ার যদি সেকেন্ড না শুধু মাত্র পাসও করে যায় এই ক্লাসের প্রধান থাকবে মনু ভাই।
হটাত মনু সবার দৃষ্টি কারে দেখছেন! দেখেন!
সবায় মনুর কাছে এসে ভিনদেশে পাসপোর্ট ছাড়াই উকি দেয়।
মিয়া খৃষ্টানদের গির্জায় যাজক যাজিকারা ব্যাভিচার করে বাচ্চা পয়দা করে পরে মাটিতে চাপা দিয়ে ফেলে।
কেউ কেউ বলে দেখছোনি কাণ্ড। মনু বলে এই হল ধর্ম। বুজলেন এরেই কয় বাতিল ধর্ম।
চলবে……