মোহাম্মদের সাথে আয়েশার বিয়ে কি বৈধ?

কবুল’ বললেই বিয়ে হয়ে যায় আর ‘তালাক’ বললেই বিয়ে ভেঙে যায়। ইসলামে বিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ যদি হয়, তাহলে এই সম্পর্কে একটাও আয়াত নেই কেন? কোনোমতে “কবুল” বলেই মেয়েদের নিয়ে বিছানাতে যাওয়া ইসলামী পদ্ধতিতে বিয়ের উদ্দেশ্য। তাই মন্ত্র-ফন্ত্র পড়ে সময় নষ্ট করার কথা মোহাম্মদ ভাবেনি। ঘর থেকে পুরোন একটা জড় পদার্থ বের করে ফেলে দিতে যতোটা সময় লাগে, মুসলমান পুরুষের ক্ষেত্রে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে ততটুকু সময়ও লাগে না ধর্মীয় বিধান মতে।
আমাদের দেশে বিয়ে নিয়ে যে সমস্ত অনুষ্ঠানাদি হয়, তা সবই ইসলাম-পূর্ব যুগের ধর্ম বা সামাজিক প্রথা থেকে নেয়া। বিয়েকে কেন্দ্র করে ইসলাম ধর্মে আনন্দ করার সুযোগ নেই। যেখানে-সেখানে যখন তখন কবুল বলেই বিয়ে হয়ে যায়। শুধু প্রয়োজন দু’জন পুরুষ সাক্ষী বা একজন পুরুষ ও দু’জন নারী সাক্ষী। হরদম যেহেতু বিয়ে করা চলতেই থাকে, তাই বিয়ে করা জীবনের কোনো বিশেষ ঘটনা নয়। ইসলামী মতে, নারী-অঙ্গ পুরুষের কাছে বিক্রি করে দেয়াটাই বিয়ে। তাও আবার মূল্য নির্ভর করে ক্রেতার সামর্থ্যের ওপর। বিক্রয়ের এই চুক্তিটি যখন সম্পন্ন হয়, তখন ক্রেতার সুবিধা-অসুবিধার দিকটি একমাত্র বিবেচনার বিষয়।
সমমনা হওয়া, বা মনের মিল হওয়া বা ভালোবাসা, প্রেম এসবের কোনোই প্রয়োজন নেই। বিয়ের উদ্দেশ্য – যৌনতা আর সন্তান পয়দা করা। যয়নবকে বিয়ে করার পর মোহাম্মদের বিয়ের গাড়ি থামেনি, আয়েশাকে বিয়ে করার পরও নয়। ৬৩ বছরে পৃথিবী থেকে বিদায় না নিয়ে যদি ৮৩ বছর পর্যন্ত সে বেঁচে থাকতো, তাহলে পৃথিবীর যে কী হাল হতো, তা কল্পনাও করা যায় না। আরও এক কুড়ি বিবি আর শতাধিক দাসী অবশ্যই তার প্রয়োজন হতো। তার সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য জিবরাইল ৪০০ পুরুষের শক্তিসম্পন্ন আরক নিয়ে হাজির হতো।
মহানবীর একটি হাদিসে আছে: “যখন কোনো বান্দা বিবাহ করলো, তখন যে তার অর্ধেক ঈমান পূর্ণ করল। আর বাকী অর্ধেকের জন্য সে যেন তাকওয়া অবলম্বন করে” – বায়হাকী। খাদিজার মৃত্যুর পর যখন সে বিপুল বিক্রমে একের পর এক বিয়ে করা শুরু করলো, তখন কি তাঁর ঈমান ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়েছিল? বারবার বিয়ে করেও ক্ষয় পূরণ হচ্ছিলো না তাই।
কোরআনে আছে, “তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে…” [সূরা আর-রোম, আয়াত-২১]।
এখন আল্লা সবকিছু সৃষ্টিরও পূর্বে তার নূর দিয়ে মোহাম্মদকে সৃষ্টি করেছে। মোহাম্মদের থেকে তার বিবিরা সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে মোহাম্মদের বিবিরাও কি আল্লার নূরের সৃষ্টি? “এলেন করা” কাকে বলে, জানি আমরা? বিয়ের সময় কনের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক নয়। বিয়ের পর ঘোষণা করে বা অন্য যে কোনো পন্থায় সামাজিকভাবে তা জানিয়ে দিতে হবে, যাকে “এলান করা” বলা হয়।
আরও একটি হাদিস দেখুন: “আয়িশা (রাঃ) একবার নবীজী (সাঃ) কে প্রশ্ন করেছিলেন, একজন যুবতী নারীর ক্ষেত্রে যখন তাকে তার পিতা-মাতা বিবাহ দেয়,তার অনুমতি নেয়া উচিত কি? রাসূল (সাঃ) উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, অবশ্যই তাকে (কনেকে) তার (নিজের) মতামত দিতে হবে; আয়িশা (রাঃ) আবার প্রশ্ন করলেন, কিন্তু একজন কুমারী তো লাজুক থাকে, হে আল্লাহর রাসূল? রাসূল (সাঃ) উত্তর দিলেন, তার নীরবতাই সম্মতি বলে বিবেচিত হবে।”  – বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য।
মোহাম্মদ যখন আয়েশাকে বিয়ে করে, তখন কি সে সম্মতি দেয়ার মত পরিণত হয়েছিল? তাহলে মোহাম্মদের সাথে আয়েশার বিয়ে বৈধ হয় কীভাবে?

You may also like...

Read previous post:
ইসলামে বাধ্য নারীর সদাচরণই বেহেস্তি সুখের বীমা!

মেয়েদের আপন অঙ্গসমূহ ঠিকঠাক মত আবৃত না করা, ছেলেদের মত খোলামেলা পোশাক পরা, আপন উপস্থিতি সরবে জাহির করা; মোট কথা...

Close