আমি গত কয়েকদিন ধরে নিরবে সামাজিক গণমাধ্যমের চলমান বিষয় গুল দেখছিলাম। প্রচণ্ড পরিমানে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেছি। রাতে ঠিক মতো ঘুমাতে পারি নি। অন্ধকার রাত আরও ভয়াল হয়ে উঠেছিল। সকালের সূর্য ওঠার অপেক্ষা করেছি আর রাতে ঘরের মধ্যে ৩ টা লাইট জ্বালিয়ে সকাল হয়ার অপেক্ষা করেছি। জানালার পর্দা গুল সরিয়ে, চোখ ঝলসানো আলোর মধ্যে ঘুমাবার চেষ্টা করেছি। কেন জানি বার বার মনে হচ্ছিল রাতের অন্ধকারে কেউ যদি টেনে হিচ্রে নিয়ে যায়? গায়ের উপর থেকে একটা একটা করে কাপড় ছিঁড়ে ফেলে আমাকে খুঁড়ে খুঁড়ে খায়? তার পর খাওয়া শেষ হলে ছুরি দিয়ে গলাটা বুকটা কেটে ফেলে যায়? কেমন হবে?
আমি সাম্প্রতিক ইস্যু গুল নিয়ে কথা বলি লেখালেখি করি বলে আমার পরিবার থেকে স্পষ্ট ভাবে বলে দেয়া হয়েছে আমি যেন লেখা বন্ধ করে দেই। আমার অসহায় মা, বাবা আর ভাই টা আমাকে অনেক ভালবাসে, স্বপ্নও দেখে। তার উপরে মুসলিম নাগরিক দের মতে আমরা হলাম অমুসলিম সংখ্যালঘূ। মা আমার ভয় তো পাবেই। পাওয়াটা তাদের কাছে বেশ যৌক্তিক। কারন সংখ্যালঘু শব্দটা পরম যত্ন করে আমাদের বাংলাদেশের সম্মানিত মুসলমান জনগণ ঠাপ্পা মেরে জোরপূর্বক বসিয়ে দিয়েছেন । সেই সাথে স্কুল এর বেশ কিছু বন্ধুগণ আমাকে বন্ধু তালিকা থেকে বাতিল ঘোষণা করেছেন। অনেকে ভেবেছেন ঝামেলা এড়িয়ে চলাই ভাল। নান অফ মাই বিজনেস মতাদর্শে চলমান একেকজন সহপাঠী আমার। মুখোশ গুল চিন্তে আর কষ্ট হবে না। যাক গে, এবার মদ্দা কোথায় আসি।
বাংলাদেশের অবস্থা দিন দিন দেখে ভয়ে শিউরে উঠছি। আস্তে আস্তে ধর্মের নামে এক কথিন আগ্রাসন আমাদেরকে গিলে গিলে খেয়ে ফেলছে। আমরা অনুভুতি হিন হয়ে যাচ্ছি। মনুষ্যত্ব বোধ হারিয়ে যাচ্ছে। কি দিন ছিল আর আজকাল কি দিন দেখছি। সাগর রুনি হত্যা, রাজিব হত্যা, ওয়াশিকুর হত্যা, অভিজিৎ হত্যা, অনন্ত হত্যা, নিলাদ্রি হত্যা, রাজন হত্যা, শমিউল হত্যা, দিপন হত্যা, আদিবাসী মেয়েদের ধর্ষণ করে হত্যা, গৃহ কর্মীর রহস্য জনক ভাবে মরে যাওয়া, তনু হত্যা এইগুল আপনাদের মনে একটুও দাগ কাটে না তাইনা? অবশ্য না কাটাই স্বাভাবিক কারন এরা আপনাদের পরিবারের কেউ না। আপনাদের পরিবারের সবাই নিরাপদের আছে। এখন প্রশ্ন হল কতদিন থাকবে সবাই নিরাপদে? নিরাপত্তার সার্টিফিকেট দিতে পারবেন? তাহলে গলায় ঝুলিয়ে বেরিয়ে পরতাম। আর কেউ গায়ে হাত দিতে আসলে বলতাম নিরাপত্তা সার্টিফিকেট ঝুলিয়ে রেখেছি সুতরাং নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলুন। আমি নিরাপদ। ব্যাপারটা কি আসলেই তাই?
এই কুৎসিত সমাজ, বীভৎস পুরুষতন্ত্র আর আইনের শাসনহীন এই দেশ থেকে নতুন করে আর কি পাওয়ার আছে আমাদের? আমাদের শরীর ঢাকা থাকুক বা না থাকুক পুরুষদের যৌনাঙ্গটি সব সময় সটান হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। আর সুযোগ বুঝে রাতের অন্ধকারে নতুন নতুন যৌনাঙ্গ সামনে পেয়ে দিব্যি বীর্য ঝরিয়ে কুকর্মটি ঢেকে খুন করে আবার নতুন আর একটি যৌনাঙ্গের সন্ধানে রাতের অন্ধকারে বেরিয়ে পরে। দিনের পর দিন চলছে এই জঘন্য বীর্য ঝরানো প্রক্রিয়া। দেশ টা তো এদের বাপের তাই যা মরজি হয় তাই করে। কার বাপের কি। পারলে ঠেকা। পুরুষরা মনে করে,
নারী হইল সেই বস্তু ,যা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, হে কাপুরুষ, আমার শরীর শুধু তোমার ভোগের জন্য। হে হারামি, তোমার যখন ইচ্ছা হবে তুমি আমার কাছে আসবে। জোরপূর্বক আমার যৌনাঙ্গে তোমার বীর্যটি ফেলে যাও সাথে আমার স্তন যুগল কামড়ে কামড়ে ছিঁড়ে খাও। চেটে পুটে খাও। আমি প্রতিবাদ করব না কারন প্রতিবাদ করার জন্য প্রাণটাই থাকবে না আমার। কারন তুমি যখন আমায় ভক্ষন করিয়া ফেলে রাখিবে আমার যৌনাঙ্গ ঠাপাইয়া ঠাপাইয়া ফাটিয়া ফেলিবে তীব্র যন্ত্রণায় প্রান টা বাহির হইয়া যাইবে। তবুও তুমি ঠাপাইয়া যাইবে। কারন মৃত মানুষ কথা বলে না।
যে গণমাধ্যমরা আজকাল এই বিশেষ ক্ষমতাধর ধর্ষকদের লিঙ্গর জোর দেখে মুখে কুলুপ দিয়ে রাখে, ভয় পায় কখন এই বিশেষ ক্ষমতাবান ধর্ষকরা তাদের লিঙ্গ খানা মুখে ঠেসে ধরে। তাদের জন্য রইল আমার মতো হাজার হাজার মেয়েদের অভিশাপ। আমাদের দীর্ঘ নিঃশ্বাসের যে ভয়াবহ পরিনাম তোমাদের জন্য সযত্নে রইল। মনে রেখ এই দিন দিন না আর অনেক দিন আছে। হিসাব এখনও অনেক বাকি আছে।