ম্যাডাম জিয়ার বিরুদ্ধে রাস্ট্রদ্রোহী মামলা প্রসঙ্গে

আমরা সবাই স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকার ও তাদের কুকীর্তির কথা জানি। তাঁরা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ‘লাইনে’ রাখতে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা, জেল-জুলুম ইত্যাদি কম করেননি, এখনও করছেন। আমরা এতে এক ধরনের অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তাই আমাদের সবার প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে “রাস্ট্রদ্রোহী মামলা” করায় আমরা এক বিন্দু বিচলিত হইনি। বরং এই মামলা হতে পারে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সঠিক পরিসংখ্যান লিপিবদ্ধ করার একটা মাইল ফলক।

বেগম জিয়া বলেছেন – “মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়েও বিতর্ক হচ্ছে”। কিন্তু তিনি কোন সংখ্যা উল্লেখ করেন নি। একবারও বলেননি মুক্তিযুদ্ধের সংখ্যা কম বা বেশি। কিন্তু তারপরও বিএনপির রাজনীতি আরেকবার প্রশ্নবিদ্ধ করতেই স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকার বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র দ্রোহিতার মামলা করেছে।

মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা যা আমরা নিয়মিত শুনে থাকি, সেই সংখ্যা নিয়ে নানান সময়েই নানান ব্যক্তি নানা ধরনের তথ্য দিয়েছেন, বিশ্লেষণ করেছেন। কেউ বলেছেন অনেক কম, কেউ বলেছেন জে সংখ্যাটা আমরা জানি, তার বেশিও হতে পারে। এতে শুধু আমাদের দেশের ব্যক্তিই না, বিদেশি অনেক ব্যক্তিও এধরনের অনেক প্রশ্ন তুলেছেন।

আমার কাছে বিষয়টি একদম খারাপ মনে হয়নি। কারন সংখ্যা কম বা বেশি দিয়ে গণহত্যার সত্যতা তো কেউ মুছে ফেলতে পারবেনা। সে সময় আমাদের দেশে পাকিস্তান গণহত্যা চালিয়েছিল এটি একটি ধ্রুব সত্য। ত্রিশ লক্ষ কেন, ৩০ জন লোক ও যদি তারা হত্যা করে থাকে, তবুও তারা সমানভাবে দোষী। তাছাড়া সংখ্যাতত্বে শহীদানের মর্যাদা বাড়েনা, কিংবা কমেওনা।যেমন,বৃটিশ ভারতে স্বাধীনতাকামী একজন তিতুমীর, মাস্টারদা সূর্য্যসেন,প্রীতিলতা, ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকী, বিনয়-বাদল-দীনেশ,ভগত সিং দের আমরা শ্রদ্ধাভরে শরণ করি, আয়ারল্যান্ডের স্বাধীনতাকামী একজন ববি স্যান্ড সকল স্বাধীনতাকামীদের অন্তরজুড়ে আছেন আর বিপ্লবী চে গুয়েভারাতো আজও সকল তুনুনের আদর্শ হয়ে আমাদেরকে উজ্জিবীত করছেন।সেখানে কেন আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ শহীদানের নাম ঠিকানা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে লিপিবদ্ধ থাকবেনা!

শহীদদের তালিকা করা মোটেই কঠিন কাজ নয়। আমি যেমন বলতে পারি-আমি যে এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ করেছি সেই থানা এবং প্রতিবেশী আরো দুইটি থানায় স্বাধীনতা যুদ্ধে কতজন শহীদ হয়েছিলেন তেমনি দেশের ৬৫ হাজার গ্রামের অনেক সিনিয়র সিটিজেনই বলতে পারবেন তাঁদের নিজ নিজ এলাকায় কে কোথায় শহীদ হয়েছিলেন।একান্তই যদি সরকার আমজনতার উপর ভরসা করতে নাপারে তাহলে বর্তমান সরকারের অন্ধঅনুগত, একান্ত বাধ্যগত বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মাধ্যমেই এই কাজটা করা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল যদি দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটকে নির্দেশ দেয়-নিজ নিজ এলাকার “শহীদদের নাম ঠিকানা” সংগ্রহ করে পাঠানোর জন্য সেটা করতেও এক মাসের বেশী সময় লাগবেনা। এমনতো হতে পারে সেই তালিকায় শহীদের সংখ্যা আরো কয়েকগুন বেশী হতে পারে! তবুও আমরা চাই মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, শহীদ বুদ্ধিজিবীদের তালিকারমত মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদানের তালিকা হোক।এমনকি স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা করে তাঁদের যথযথ বিচার করা হোক।

জীবিত মুক্তিযোদ্ধাগন মাসিক ভাতা পাচ্ছেন, যেসব মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যু বরণ করছেন তাঁদের উত্তরসুরীরাও ভাতা পাচ্ছেন-যা অত্যন্ত সম্মানের। আমরা আশা করবো স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল শহীদানের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে তাঁদের পরিবার পরিজনকেও সম্মানী দেওয়া হোক।

You may also like...

Read previous post:
Thoughts on Bangladeshi blogger Murder-1

The behavior of the police and the government is debatable and suspicious indeed, regarding the serial blogger murders in Bangladesh....

Close