এখনো যে বেঁচে আছি – এটাকেই জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া মনে হয়। সরকারী চাকরী, কালো স্যুট পরে কালো গাড়ি চালিয়ে অফিসে যাওয়া আর নদীর পাড়ে ফ্ল্যাট কিনে থাকার স্বপ্নকেই একসময় সবচেয়ে বড় স্বপ্ন মনে হতো। সে স্বপ্নে কত পরিশ্রমই না করেছি গত ষোলটা বছর। অভিজিৎদা খুন হবার পর থেকে আর কোনো বৈষয়িক স্বপ্নই যেনো টানেনা। কি অসাধারণ সংগ্রাম আর ক্যারিয়ারই না ছিলো অভিজিৎদার। সারাটা জীবন বই পড়েই কাটিয়ে দিলো অনন্ত। বই ছাপিয়ে সমাজকে আলোকিত করার দায়িত্ব নিয়েছিলো দীপনদা। নিজের বাবা আর প্রেমিকাকে সুখী করার জন্য প্রতিদিন যুদ্ধ করেছে বাবু আর নিলয়। একটা স্বাধীন জীবনের জন্য জীবন দিলো জুলহাস আর তনয়। আমিওতো সেই একই সমাজের তরুণ। সেই একই দেশের ইসলাম-ত্যাগী নাস্তিক। ইসলামের সমালোচনাও জীবনে কম করিনি। অথচ আমি এখনো বেঁচে আছি!
ইসলাম ত্যাগের শাস্তি মৃত্যুদন্ড, কিংবা ইসলামের সমালোচনা করলে তাকে খুন করা ওয়াজিব,- এ মতাদর্শের মুসলমান এখন ইয়োরোপেও লক্ষ লক্ষ। নিজের আশে পাশেই, নিজের কমিউনিটিতে কিংবা কর্মক্ষেত্রেও কোট-টাই পরা এমন জিহাদী মুসলমানের এখন অভাব নেই। এদের সঙ্গে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কিংবা মানুষের অধিকার নিয়ে কিছুক্ষণ কথা বললেই ভয় লাগে। মনে হয়- এখনো বেঁচে থাকাটাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া। মন খুলে কথা বলার পরও এখনো বেঁচে আছি- মাঝে মাঝে আশ্চর্য লাগে।