যাক, শেষ পর্যন্ত সাকা নামের এই পাশবিক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলো। সকল মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সকলের প্রতি রইলো অভিনন্দন। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে। এভাবেই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তি দিয়ে কলঙ্কমোচনের পথে আরেকধাপ এগিয়ে গেলো আমাদের এই বাংলাদেশ।
স্বাভাবিক ভাবেই বিএনপি ও জামাতের লোকজন অনলাইনে বিভিন্ন প্রচারনা চালাচ্ছে যে সাকা চৌধুরী ছিলো নির্দোষ, নিরীহ ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই আজ আপনাদের জন্য নিয়ে আসলাম সাকা নামের এই পশুটির অপরাধের ঝুলি থেকে অল্প কিছু তথ্য।
প্রকৃতপক্ষে সাকা চৌধুরী একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কাজ করতো পাকবাহিনীর সহযোগী হিসেবে। এমনকি তার বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরীও বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে কাজ করেছে, অত্যাচার করেছে আমাদের এই বাংলাদেশের মানুষদের ওপর, অমানুষিক কষ্ট দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের। বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় ফজলুল কাদেরের স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার অন্যতম অংশীদার ছিলেন তাঁর ছেলে সাকা চৌধুরী। বাবার নির্দেশ পালন করতে একাত্তরের ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রামের রাউজানে কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নূতন চন্দ্র সিংহকে পাকিস্তানি সেনাদের সহায়তায় হত্যা করে। এটি সহ আরও চারটি অভিযোগে ২০১৩ সালে সাকা চৌধুরীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। এর প্রতিটি অভিযোগে ফাঁসির রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। পুনর্বিবেচনার আবেদনও খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সাকা চৌধুরীর অপরাধসমূহঃ
এই সেই দালাল, যে ৭১ সালে আমাদের দেশ ও দেশের মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে পাক-হানাদার বাহিনীর সাথে আতাত করে খুন করেছে অসংখ্য মানুষকে, ধর্ষণ করেছে আমাদের মেয়ে, বোন, মায়েদের। অগ্নিসংযোগ করেছে স্বাধীনকামী মানুষের বাসা-বাড়িতে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে চালিয়েছে ব্যাপক কার্যক্রম, বিভিন্ন হত্যাযজ্ঞে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেছিলো পাকিস্তানি সেনাবাহিনিদের। মূলত চট্টগ্রামেই এই সাকা নামের এই নরঘাতক চালিয়েছে তার যতো কুকর্ম। এই সাকা চৌধুরীর চট্টগ্রামের বাসভবন গুডসহিলের সম্পর্কে মোটামোটি সবাই অবগত আছেন। অনেক স্থানীয়রা এখনো গুডসহিলের নাম শুনলে ভয়ে শিউরে ওঠেন। নৃশংসভাবে হত্যাজজ্ঞ চালাতো তার এই গুডসহিলে। কোন এক বইতে পড়েছিলাম,
সাকার সাঙ্গোপাঙ্গরা ১৯৭১ সালের ৫ই এপ্রিল চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানার রামজয় মহাজন লেনের বাসভবন থেকে শান্তি কুসুম ও মতিলাল চৌধুরী, মতিলালের কর্মচারী সুনীল সহ আরও ৬ জনকে ধরে নিয়ে যায় সাকার গুডসহিলে। প্রচন্ড আহত অবস্থায় সুনীলকে ছেড়ে দেয় কিন্তু কখনো খোঁজ মেলেনি মতিলাল চৌধুরী, শান্তি কুসুম কিংবা সাথের বাকি লোকদের।
এই নরপিশাচের ভয়াল থাবার হাত থেকে বাচার জন্য তৎকালীন সময়ের চট্টগ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পালিয়ে পালিয়ে বেড়াতেন। একদিন হঠাত সাকা ও তার সহচর আবু মাবুদ রাউজানের জগৎমল্লপাড়ায় কিরণ বিকাশ চৌধুরীর বাসায় শান্তি কমিটির মিটিং বলে আশেপাশের সকল হিন্দুদের জড়ো করলো এবং সবাই জড়ো হলে কিছুক্ষনের মধ্যেই সাকা পাকিস্তানি হানাদারদের নিয়ে অতর্কিতে সবার ওপর ব্রাশফায়ার করে এবং তাতে ঘটনাস্থলেই তেজেন্দ্র লাল নন্দী, সমির কান্তি চৌধুরী, কিরণ বিকাশ চৌধুরীসহ ৩২ জন নিহত হন। ঠিক ওই দিনই বিকেল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে রাউজানের ঊনসত্তরপাড়ায় গণহত্যা চালায় সাকাচৌ। সাকার উপস্থিতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ব্রাশফায়ারে চরণ পাল, বাবুল মালীসহ ৭০ জনকে হত্যা করে। একই এলাকার ক্ষিতিশ চন্দ্র মহাজনের বাড়ির পেছনে পুকুরপাড়েও ডাকা হয় শান্তি কমিটির সভা। ওই সভায় হত্যা করা হয় ৭০ জনের বেশি ব্যক্তিকে।
একই সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মোজাফফর আহমেদ ও তাঁর ছেলে শেখ আলমগীরকে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কের হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড থেকে ধরে স্থানীয় সেনাক্যাম্পে নিয়ে যায় সাকা চৌধুরী ও তার সহচররা। নৃশংসভাবে নির্যাতন চালিয়ে তাঁদেরকে হত্যা করে এই নরঘাতকের দল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র পাঁচ মাসে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৪৩৭ জন ব্যক্তিকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হত্যা করে সাকা চৌধুরী। শুধু রাউজানেই ৯টি গণহত্যা চালানো হয়েছে। সাকা চৌধুরীর উপস্থিতি ও নির্দেশে তাঁর সহযোগীরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে এসব গণহত্যা চালাতো। মূলত হিন্দু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের নিশ্চিহ্ন করার জন্যই এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলেই ধারনা করেন স্থানীয়রা।
‘৭১ সালের ২০শে এপ্রিল কনভেনশন মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরী, সাকা চৌধুরী, তার অনুসারী, মুসলিম লীগ সমর্থক রাজাকার খয়রাতি, জহির, জসিজ ও পাকবাহিনী যোগসাজশ করে চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালি থানার হিন্দু অধ্যুষিত শাকপুরা গ্রামে সশস্ত্র অভিযান চালিয়ে সেখানকার হিন্দুদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে নির্বিচারে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে।
স্বাধীনতা পরবর্তীকালে শাকপুরা প্রাইমারি স্কুলের রাস্তার পাশে শাকপুরা গ্রামের নিহতদের স্মরণে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। সেখানে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং তার সহযোগীদের হাতে শহীদ ৭৬ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। এরা হলেন – ফয়েজ আহম্মদ, জালাল আহম্মদ, হাবিলদার সেকেন্দার আলী, আমীর হামজা, আবুল হাশিম, আব্দুল মতিন, হাবিবুর রহমান (লেদু), আহাম্মদ ছফা, অরবিন্দ রায়, নিকুঞ্জ রায়, ধীরেন্দ্র লাল দে, ফণীন্দ্র লাল শীল, নিকুঞ্জ শীল, প্রাণহরি শীল, নগেন্দ্র লাল শীল, দেবেশ চৌধুরী, গৌরাঙ্গ প্রসাদ চৌধুরী, বিশু চৌধুরী, গৌরাঙ্গ নন্দী, তপন নন্দী, ডাক্তার মধুসূদন চৌধুরী, রঘুনন্দন চৌধুরী, নিরঞ্জন চৌধুরী, সুখেন্দ্র বিকাশ নাগ, রবীন্দ্র লাল চৌধুরী, উপেন্দ্র লাল চৌধুরী, নিরঞ্জন চৌধুরী, বিশ্বেশ্বর আচার্য, দয়াল হরি আচার্য, কামিনী শুক্ল দাস, যোগেন্দ্র লাল শুক্ল দাস, দেবেন্দ্র শর্মা, যতীন্দ্র লাল সেন, ধুর্জ্জটি বড়ুয়া, পন্ডিত রমেশচন্দ্র বড়ুয়া, রতন চৌধুরী, প্রিয়তোষ চৌধুরী, চন্দন চৌধুরী, নিরজ্ঞন চৌধুরী, হরিরঞ্জন চৌধুরী, দীলিপ চৌধুরী, মিলন বিশ্বাস, সুবল বিশ্বাস, ব্রজেন্দ্র লাল চৌধুরী, গোপাল চৌধুরী, ধীরেন্দ্র চৌধুরী, রমণী চৌধুরী, গৌরাঙ্গ চৌধুরী, দয়াল নাথ, রাখাল সিংহ, মনমোহন চক্রবর্তী, শশাঙ্ক ঘোষ, সুখেন্দ্র বিকাশ চৌধুরী, ধীরেন্দ্র লাল চৌধুরী, বরদা চরন চৌধুরী, মণীন্দ্র লাল খাস্তগীর, বঙ্কিমচন্দ্র সেন, সাধন ঘোষ, গৌরাঙ্গ চৌধুরী, ধনঞ্জয় কৈবত্য, নলিনী কৈবত্য, সমিত রঞ্জন বড়ুয়া, নারায়ণ চৌধুরী, যতীন্দ্র লাল দাস, মণীন্দ্র লাল দাস, রমেশ চৌধুরী, ডাক্তার সুখেন্দু বিকাশ দত্ত, প্রদীপ কান্তি দাস, রায় মোহন চৌধুরী, হরিপদ চৌধুরী, অমল চৌধুরী, ডাক্তার পূর্ণ চরণ, মদন কুমার দাস।
আরও একটি ঘটনা বলি, ‘৭১ সালের ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রামের কৃতী পুরম্নষ নতুন চন্দ্র সিংহ তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠিত রাউজানের কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ে কাজ করেছিলেন, হঠাত করে হত্যাযজ্ঞ করতে সেখানে ঢুকে পড়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর লোকজন। কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য নতুন সিংহের কল্যাণকর্মের কার্যক্রম দেখেশুনে ফিরে যায় পাকসেনা ক্যাপ্টেন বালুচ। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই সাকা চৌধুরী ও তার বাবা ফকা চৌধুরীর নেতৃত্বে ফিরে আসে সেই বাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে মন্দিরে আশ্রয় নেন সৃষ্টিকর্তার কাছে, প্রার্থনা শুরু করেন। রাজাকারের দল মন্দির থেকে নতুন সিংহকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে টেনেহিঁচড়ে পাকবাহিনীর পায়ের কাছে ফেলে দেয়। পাকবাহিনী গুলি করতে বিলম্ব করলে, সাকা নিজেই নতুন চন্দ্র সিংহের বুকের পাঁজরে, বাম চোখের নিচে ও বাহুতে উপর্যুপরি গুলি করে হত্যা করে।
সাকার গুডসহিলের নির্যাতন থেকে বাঁচতে পারেননি তৎকালীন রয়টারের সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন ও। তাঁকে গুডসহিলের বাসায় আটকে রেখে টানা ১৪ চালানো হয় নির্মম অত্যাচার। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, একাত্তরের জুলাইয়ে মিরাজনগরের হাজারী লেনে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বৈঠককালে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা এসে আমাদের ঘিরে ফেলে এবং গুডস হিলের বাড়িতে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে ১৪ দিন বন্দী করে রেখে চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন। গুডসহিলে অসংখ্য বন্দী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত তখন ওরা বাপ-বেটা মিলে প্রস্রাব করে মুক্তিযোদ্ধাদের পান করতে বাধ্য করত। তিনি আরও বলেন, সাকার গুডসহিলের বাসভবনে নির্যাতনের জন্য একটি কক্ষ ছিলো এবং সেই কক্ষে একটি টেবিলে গাঁথা ছিল তিন ইঞ্চি মাপের অনেকগুলো পেরেক (লোহা)। মুক্তিযোদ্ধাদের সেই পেরেকের ওপর শুইয়ে ওপর থেকে তক্তা দিয়ে চেপে ধরা হতো এবং এতে বন্দী মৃক্তিযোদ্ধাদের সারা শরীর হয়ে যেতো ক্ষতবিক্ষত।
যে ৪ টি অভিযোগে মৃত্যুদন্ড দিলেন আদালতঃ
৩ নম্বর অভিযোগঃ ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নির্দেশে পাকিস্তানি সেনারা রাউজানের গহিরা শ্রী কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মালিক নূতন চন্দ্র সিংহকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এ সময় নিজে নূতন চন্দ্র সিংহকে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। সাজাঃ মৃত্যুদণ্ড।
৫ নম্বর অভিযোগঃ ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল বেলা ১টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী তাঁর অনুসারীদের নিয়ে চট্টগ্রাম জেলার রাউজানের সুলতানপুর গ্রামে হামলা চালায়। সেনাসদস্যরা বণিকপাড়ায় প্রবেশ করে ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে অভিযান চালিয়ে নেপাল চন্দ্র ধর, মণীন্দ্র লাল ধর, উপেন্দ্র লাল ধর ও অনিল বরণ ধরকে গুলি করে। এতে প্রথম তিনজন শহীদ ও শেষের জন আহত হন। হত্যাকাণ্ড শেষে বাড়িঘরে আগুন দিয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তাঁর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী তাঁদের অনুসারী ও পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে সুলতানপুর গ্রাম ত্যাগ করেন। সাজাঃ মৃত্যুদণ্ড।
৬ নম্বর অভিযোগঃ মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল বিকেল ৪টায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপস্থিতিতে রাউজানের ঊনসত্তরপাড়ায় ক্ষীতিশ মহাজনের বাড়ির পেছনে পুকুরপাড়ে শান্তি মিটিংয়ের নামে হিন্দু নর-নারীদের একত্র করে পাকিস্তানি সেনারা ব্রাশফায়ারে হত্যা করে। এ অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়। সাজাঃ মৃত্যুদণ্ড।
৮ নম্বর অভিযোগঃ মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোজাফফর আহম্মদ ও তাঁর ছেলে শেখ আলমগীরসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য প্রাইেভটকারযোগে চট্টগ্রামের রাউজান থেকে চট্টগ্রামে শহরে আসছিলেন। পথে হাটহাজারী থানার খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছামাত্র সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে থাকা পাকিস্তানি সেনারা শেখ মোজাফফর আহম্মেদ ও তাঁর ছেলে শেখ আলমগীরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে স্থানীয় পাকিস্তানি সেনাক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাঁদের আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সাজাঃ মৃত্যুদণ্ড।
রাষ্ট্রপক্ষ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মোট ২৩টি অভিযোগ দাখিল করেছিলেন যার সব গুলোই আদালতে প্রমাণিত হয় এবং ২৩টি অভিযোগের ৪ টি তে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে। সাকার বিরুদ্ধে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৪১ জন সাক্ষী দেন, আর সাকা চৌধুরীর পক্ষে সাক্ষী দেন মোট চারজন। তবে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের একটা বড়ো ধন্যবাদ দিতে হবে এই সাকা নামের পশুটির কালো অধ্যায় আইনি বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শেষ করার জন্য। বাকি সকল যুদ্ধাপরাধীর পতন এভাবেই দেখতে চাই। মনে হচ্ছে বাংলাদেশ যেনো আবারও স্বাধীন হয়েছে। সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়ায় আনার দাবি জানিয়ে আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি।