অনগ্রসর জনপদে পিছিয়ে পড়া জনতার বৈষম্য

বড় করে কিছু লিখার মতো অবস্থায় নেই। আসলে কিছুটা লজ্জাও পাচ্ছি। অামি যৌক্তিক কারনে কোটা সংস্কার আন্দোলন সমর্থন করেছিলাম।অথচ আমি লক্ষ করেছি, মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানদের আন্দোলণের বিপক্ষে দাড় করানো হয়েছে। নানারকম লেখায়, ভাষায়, সমাবেশের ব্যানারে কথায়, এমন কিছু ‍উচ্চারিত হয়েছে, যা সম্মানজনক নয়।

কোটা নয়, স্বাধীনতার পর রাষ্ট্র চালানোর কথা মুক্তিযোদ্ধাদের। সেটা হয়নি। পরে কথা ছিল সেনাবাহিনীতে গ্রহন করা হবে, তারও বিরাধীতা হয়েছে, বাতিল করা হয়েছে। এর পর তাদের ‍উপর শারিরীক নিযাতন হয়েছে। পচাত্তরের পর তাদের হত্যা করা হয়, যারা সামরিকবাহিনীতে তাদের ফাসী দেয়া হযেছে । আর সিভিল সাভিসে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় গোপন করতে হত, হয়রানির ভয়ে।

এ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। দুভাগ্যজনক কারনে ঠিকমত মুক্তিযোদ্ধাও দেখেনি। উপজেলা সদরে যে সকল মুক্তিযোদ্ধারা ভাতা নিতে দাড়ায়। এখনও তাদের দেখলে মনেহবে, একদল ভিক্ষুক। তারা জীবনে দাড়াবার সযোগ পায়নি। তাদের সন্তানরা অন্তত রাজাকারদের সমপযায়ের জীবন অাশা করতে পারে। কিন্ত আমি এটা দেখেছি, গত কয়েক বছর ধরে ভাষা, সিম্বল, তথা সমগ্র সংস্কৃতি অনেকটাই মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে চলে গেছে। এখন তা আমি চাই না।

ঢাকাতেই শ খানেক বিশ্ববিদ্যালয়। অতএব, মেধাবি বাড়ছে বলতে হয়। মানুষ বাড়ছে কি না সন্দেহ আছে। সবচেয়ে বড় মেধাবী নো্বেল পুরস্কার পাওয়া লোকটার মুখেও যখন মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনা যায় না, তখন তো সন্দেহ করতেই হয়। কোটা গেলেই কি সমস্যা যাবে? দুণীতি,স্বজনপ্রীতি, দৃবৃত্তায়ন সমস্যা নয়? কিন্তু ওইসব মৌলিক অান্দোলনে লোক জড় হয় না। ইসু ভিত্তিক আন্দোলনে যেমন হয়। একটা প্রতিপক্ষ ছাড়া এখানে কিছুই জমে না।

মনে আছে, সোভিয়েত ইউনিয়নে তরুন প্রজন্ম বেকারত্ম ও দুভাগের জন্য দায়ী করে বসলো সমাজতন্ত্রকে । সেখানে জন্ম হয়েছিলো ইয়েলেৎসীনের । ট্যাংকের সামনে দাড়িয়ে বিল্পবের বক্তৃতা দিযেছিলেন। তার মাশুল দিচ্ছে সোভিয়েতের তরুণ প্রজন্ম, বেকারত্ম ঘুচেনি, জীবন ভালো হয়নি এখনো। হতে পারে, রাষ্ট্রুশাসকের কর্মকান্ডে অসন্তোষ্ট হয়ে মুক্তিযুদ্ধকে দায়ী করে, এখানে কোনো ইয়েলেৎসীন দাড়িয়ে যেতো পারে। ওই মাত্রার না হলেও কেউ কউ প্রস্তিতি নিচ্ছিলেণ। লন্ডনে , ঢাকায়।

কারো কারো ধারনা তাদের বাপ ইয়াহিয়া খান টিিকে থাকলে কাজকমের সুযোগ আরো ভালো হত। ফলে সাধারনেরা যে সঙ্গত ক্ষোভ থেকে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, অসৎ মহাপুরুষেরা সেই ক্ষোভ থেকে খই ভাজা খাওযার সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন। আপনারা সেসব জানেন। অতএব, সরকার ওই আন্দোলন পানি ঢেলে ঠান্ডা করা করা দরকার বোধ করলো। তাতে সংবিধান ভিজবে । অনগ্রসর জনপদে পিছিয়ে পড়া জনতার বৈষম্য দুর করার প্রয়াস নস্যাত হবে।

You may also like...

Read previous post:
কোটা সংস্কার আন্দোলন ও আমাদের দ্বিধাবিভক্ত সরকারী দল

কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রথম থেকে সরকারী দলের একটি অংশের বিরোধিতা ছিলো। তারা কোটার বিরুদ্ধে মিছিলও করেছেন। অথচ এই আন্দোলন সরকার...

Close