আমরা সকলেই হাসিনাপুত্র জয়ের বিলাসবহুল জীবনযাপন নিয়ে অনেক কিছুই বিভিন্ন খবরের কাগজ মারফতে জেনেছি। তার কেলেঙ্কারির কথা কারোই অজানা নয়। জয় যে একজন সুপ্ত দুর্নীতিবাজ, যাকে নিয়ে আওয়ামী সমর্থকরা দিবারাত্রি স্বপ্ন দেখেন, তাদের জন্য নিচে কিছু তথ্য তুলে ধরলামঃ
১৪ জুন ১৯৯৮, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের টারান্ট কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখা ও মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ১২০ দিনের কারাবাস, ২৪ মাসের প্রোবেশন এবং ৫০০ ডলার জরিমানার আদেশ দেয়।
১৯ মার্চ ২০০০, ভার্জিনিয়ার ফেয়ারপ্যাক্স কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। বিচারে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদালত তাকে ৩০ দিনের সাসপেন্ডেড কারাবাস সঙ্গে ১২ মাসের প্রোবেশন ও ৪০০ ডলার জরিমানা করা হয়।
এছাড়া ২৯ এপ্রিল ২০০১, ভার্জিনিয়ার রাপাহ্যানোক কাউন্টিতে এবং ২০ মে ২০০৪, আরলিংটন কাউন্টিতে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চলানোর দায়ে অভিযুক্ত হন জয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আদালতের খরচও জয়কেই বহন করতে হয়েছে।
৬ ফেব্র“য়ারি ২০০৬, ভার্জিনিয়ার হ্যানোভার কাউন্টিতে গ্রেফতার হন জয়। তার বিরুদ্ধে বেপরোয়া গাড়িচালানো এবং বেআইনিভাবে রাডার ডিটেকটর সঙ্গে রাখার অভিযোগ আনা হয়। সাজা একদিনের হাজতবাস এবং জরিমানা।
এবার আসা যাক উনার লেখাপড়ার বিষয়ে-
Harvard University Kennedy School of Government
MPA, Public Administration
2007 – 2008
The University of Texas at Arlington
B.Sc., Computer Engineering
1994 – 1997
Bangalore University
B.Sc., Computer Science, Physics, Mathematics
1990 – 1993
এসব ইউনিভার্সিটিতে পড়তে কি পরিমাণ টাকা লাগে তা আমরা সবাই কমবেশি আন্দাজ করতে পারি। আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে নিছে ছোট একটি নমুনা- (থাকা-খাওয়ার কথা না হয় বাদই দিলাম,১০-১২ লক্ষ টাকা তো হাতের ময়লা)
টেক্সাস ও হার্ভার্ডের একটা খরচের হিসাব বের করা যাক। টেক্সাস ইউনিভার্সিটির মোটামুটি খরচ প্রতি বছর ১৩৫২০-২৪৬০৯ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৯-১৭ লাখ টাকার সমান। অন্যদিকে হার্ভাডের এমসি/এমপিএ প্রোগামে এক বছরের খরচ ৭৬৪১১ মার্কিন ডলার যা প্রায় ৫২ লক্ষ টাকার সমান। অর্থাৎ গ্রাজুয়েজন ও মাষ্টার্স মিলিয়ে খরচ বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি টাকার মত হবে।
বাসস্থানের বিবরণ না দিলেই নয়: –
জয়ের প্রথম বাড়ির ছবি এটি। ঠিকানা 3817 Bell Manor Ct, Falls Church, Virginia 22041। ৪ বেডরুমের এই বাসার মূল্য প্রায় ১ মিলিয়ন ইউএসডি ( বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭ কোটি টাকা)
এটি সজীব ওয়াজেদ জয়ের দ্বিতীয় বাড়ির ছবি ঠিকানা হলো 4823 Martin Street, Alexandria, Virginia 22312 এর মূল্য প্রায় ৭৫০ হাজার ডলার ( বাংলাদেশি টাকায় ৫ কোটি টাকার বেশী)
কি আরামদায়ক বিলাসবহুল বাসস্থান তার। আর যে দেশের ট্যাক্সপেয়ার এর টাকা চুরি করে এ বিলাসবহুল জীবনযাপন, সে দেশের মানুষ না খেয়ে মারা যায়। ঘটনাটা অনেকটা পরের ধনে পোদ্দারি’র মত।
ব্যবসার কথা কিছু বলি:
২০০৫-এর মার্চে জয় ওয়াজেদ কনসাল্টিং ও সিম গোবাল সার্ভিস নামের আরও দুটো কম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মজার বিষয় হল, এ দুটো কোম্পানির বার্ষিক বিক্রয়ের পরিমাণ দেখানো হয়েছিল ৬১ হাজার ও ৩৫ হাজার ডলার।
বর্তমানে কর্মরত-
President
Wazed Consulting, Inc.
যার দৌড় Business Consulting Service এই গাল ভরা নাম পর্যন্তই।
Customer Service Manager
Ecom Systems, Inc.
এটা কোম্পানীর খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ পদ না।
Co-Founder
Mvion, Inc.
হে হে এমনি কোম্পানী যাদের কোন সাইটই খুজে পেলাম না।
Computer Lab Manager
University of Texas at Arlington
১০০০ চাকরিজিবীর একজন।
Technical Representative
Intelligent Trade Systems Ltd.
নামমাত্র।
এবার আপনারাই বলেন এইসব থেকে উনার মাসিক ইনকাম কত হতে পারে,খুব বেশি ১০-১৫ হাজার ডলার। কিন্তু না –
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ওয়াল্ড ইকোনোমি ফোরামে জয় বার্ষিক ৯০ মিলিয়ন ডলার ইনকাম দেখিয়ে সত্যায়নপত্র জমা দিয়েছেন।
উনার বাবা ওয়াজেদ সাহেব একজন সৎ সরকারি কর্মচারী ছিলেন – তার মা হাসিনার সম্পদের হিসেবের দিকে খেয়াল করি-
ওয়াজেদ সাহেব মৃত্যুকালে ৩০ লাখ টাকা রেখে গেছেন, যা একজন সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সদুপায়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
২০০৮ সালের নির্বাচনকালে জয়ের মাতা শেখ হাসিনা তার সম্পত্তির যে হিসাব দিয়েছেন, তাতে ৩,৬৫,০২,৯০৪ টাকার সম্পদের বিপরীতে ২০০৭-০৮ বছরে পারিবারিক খরচ ছিল ২ লাখ টাকা। এতে করে শেখ হাসিনার স্থায়ী সম্পত্তি ও অপারপর হিসেব বিবেচনা করেও জয়ের এ সব শিক্ষাখরচের অর্থের উৎস খুঁজে পাওয়া যায় না।
বর্তমানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বেতন পান সবসহ প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মত।এগের টার্মে আরও কম পেতেন।
কিন্তু বাংলাদেশের প্রিন্স জয় ভাইয়ের লাইফ স্টাইলের সাথে এগুলোর সামান্যতম মিলও নেই।
সবার মতো আমারও প্রশ্ন জাগে এতো অর্থ কোত্থেকে আসে?