প্রসঙ্গ আমাদের ব্যর্থ সরকারের ব্যর্থ ও চরম দুর্নীতিবাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অমূল্য রতন, রাজপুত্র জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়। এই ব্যক্তিকে এতো বড়ো বড়ো উপাধি দেওয়ার যথেষ্ট কারন রয়েছে। সে যথাক্রমে একজন লুটেরা ,ব্যাভিচারি, মদ্যপ সন্ত্রাসী। জয় আমাদের দেশের একজন বড়ো শত্রু। সে পর্দার অন্তরালে একজন মস্ত দুর্নীতিবাজ। তার সারাজীবন ভরা রয়েছে অপরাধ, অপসংস্কৃতি, উচ্ছৃংখলতা ও উম্মত্ততা, অস্ত্রবহন, মদ্যপান সহ একের পর এক মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি বিনাশ করার মত ভয়াভয় ঘটনা।
তার দুর্নীতি সে শুরু করেছে বাংলাদেশেই, কিন্তু কেউ টের ও পায়নি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জয়ের মাতা হাসিনা যখন সরকার প্রধান, তখন তিনি আমাদের দেশের ট্যাক্সপেয়ার এর টাকা মেরে ৮ মিলিয়ন ইউএস ডলার দিয়ে দেন জয়কে, ব্যবসা করার জন্য। তারই ধারাবাহিকতায় জয় আমেরিকাতে ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু সেখানেও সে শুধু দুর্নীতিই করে গেছে। তার এই ব্যবসা গুলো আসলে দুর্নীতিরই ফসল। দুর্নীতি করে দেশের টাকা মেরে আমেরিকাতে ব্যবসা খুলে বসেছে এসব দুর্নীতি ঢাকার জন্য।
এদিকে আমেরিকা সরকার জয়ের বিরুদ্ধে ৮৬২ মিলিয়ন ডলারের সম্পদের খোঁজ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং তাতেই বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য। শুধু বাংলাদেশ না, খোদ যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন জয়ের এই বিশাল সম্পদের বহর দেখে চমকে উঠেছে। এসব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে জয় সবাইকে জানায় এসব সম্পত্তি নাকি তার নিজের করা, তার যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ওয়াজেদ কন্সাল্টিং ও সিম গ্লোবাল সার্ভিস নামক দুইটি প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ দিয়ে। কিন্তু মজার ব্যপার হচ্ছে এ দুটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ২০০৫ সালের মার্চে। এবং এই দুটো কোম্পানির বার্ষিক বিক্রয়ের পরিমাণ দেখানো হয়েছিল মাত্র ৬১ হাজার ও ৩৫ হাজার ডলার! আবার ইন্টারনেটে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম ওয়াল্ড ইকোনোমি ফোরামে জয় বার্ষিক ৯০ মিলিয়ন ডলার ইনকাম দেখিয়ে সত্যায়নপত্র জমা দিয়েছে। তো খুব সহজে প্রশ্ন এসেই যায়, বাকি টাকা কোত্থেকে আসলো?
আমার জানামতে জয়ের বাবা ওয়াজেদ সাহেব নাকি ছিলেন একজন সৎ ব্যক্তি। তাঁর মৃত্যুকালে মাত্র ৩০ লাখ টাকা রেখে গেছেন পরিবারের জন্য যা একজন সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সদুপায়ের উপার্জনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। এবার আসি জয়ের মা শেখ হাসিনার সম্পদের হিসাবের ব্যপারে। ২০০৮ সালের নির্বাচনকালে জয়ের মাতা শেখ হাসিনা তার সম্পত্তির যে হিসাব দিয়েছেন, তাতে ৩,৬৫,০২,৯০৪ টাকার সম্পদের বিপরীতে ২০০৭-০৮ বছরে পারিবারিক খরচ ছিল ২ লাখ টাকা। এতে করে শেখ হাসিনার স্থায়ী সম্পত্তি ও অপারপর হিসেব বিবেচনা করেও জয়ের এ সব অর্থের উৎস খুঁজে পাওয়া যায় না। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারী বেতন সর্বমোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মত। এর আগের বারে বেতন আরও কিছু কম ছিল বলেই জানি আমরা।
কিন্তু ওয়াজেদ সাহেব ও হাসিনার রাজপুত্র জয়ের জীবনযাপন ও তার অর্থ সম্পত্তি বিষয়ক পাওয়া তথ্যের সাথে এগুলোর সামান্যতম মিলও নেই। এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে এতো টাকা সে পেলো কিভাবে, কি তার অর্থ-সম্পত্তির উৎস?
এবার আসি ওয়াজেদ কন্সাল্টিং এর বিষয়ে। যে ওয়াজেদ কন্সাল্টিং এর দোহাই দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে এই কোম্পানি থেকে, সেই ওয়াজেদ কন্সাল্টিং এর নাম সার্চ করে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। আপনারা বিশ্বাস করতে পারবেন না, এই কোম্পানিটির একটি ওয়েব সাইট পর্যন্ত নেই। হাস্যকর তাইনা? বিশেষ করে এই যুগে এসে, একটা উন্নত দেশের উন্নত কোম্পানি যা মিলিয়ন ডলার রোজগার করে থাকে, তার কোন নিজস্ব ওয়েবসাইট নেই! আমাদের দেশের পাড়ার ছেলেপেলেরা যারা ছোটখাটো ব্যবসা করে, তাদেরও নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে, কিন্তু এতো বড়ো ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেট কোম্পানির একটি সামান্য ওয়েবসাইট নেই।
গুগলে ওয়াজেদ কন্সাল্টিং সম্পর্কে সার্চ করে যে তথ্য পেলাম তা হলো-
WAZED CONSULTING, INC is a company categorized under Business Consulting Services।
Sajeeb Wazed
President
Address
3817 BELL MANOR CT Falls church, Virginia, USA ,22041
Phone Number ঃ(703) 914-0140
Company Website: information not available
Estimated Number Of Employees : 1
Estimated Yearly Revenue : $54,000
SIC Code : 8748
Registration Number: 06339808
Status: Active
Date of Formation: 2005-03-17
Stock Ownership: 1500
বাইরের দেশের বড়ো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত নিজস্ব বিল্ডিং কিংবা বিজনেস পার্ক বা বিজনেস সেন্টার গুলো থেকে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো এই ঠিকানা গুগল ম্যাপে সার্চ করে দেখি যে, ঠিকানাটি একটি রেসিডেন্সিয়াল এলাকার একটি ব্যক্তিগত বাড়ির। যা কোনভাবেই মিলিয়ন ডলার উপার্জনকারী কোন কোম্পানির বলে মনে হয়নি।
আরেকটু খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম যে আসলে সেই ঠিকানা জয়ের নিজস্ব বাসভবনের! এত বড়ো কোম্পানি, কিন্তু বাসা থেকে পরিচালনা করে? এদেশে দেখা যায় ছোটখাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হয়তো ফান্ডিং এর অভাবে নিজস্ব বাসা থেকে শুরু করে এবং অল্প লাভের মুখ দেখতে পেলেই তখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কিংবা ভাড়া করা বিল্ডিং থেকে পরিচালনা শুরু করে। কিন্তু জয়ের ওয়াজেদ কন্সাল্টিং এর মতো এতো বড়ো কোম্পানি কেন নিজের বাসা থেকে চালাতে তাই বুঝতে পারলাম না।
তাছাড়া গুগল ম্যাপের স্ট্রিট ভিউ-এ এই ঠিকানার বাসা দেখলাম। ভার্জিনিয়ার একটি বিলাসবহুল এলাকায় বাসাটি অবস্থিত যার বাজার মূল্য ১ মিলিয়ন ডলার কিংবা তারও বেশি হতে পারে বলে আমার ধারনা। কিন্তু এখন কথা হলো, জয়ের নিজের দেওয়া তথ্য অনুজায় তার কোম্পানির বার্ষিক আয় মাত্র ৫৪ হাজার ডলার। তো সে কিভাবে এতো বিলাসবহুল জায়গায় প্রাসাদসম বাড়ির মালিক হলো? এর উত্তর একটাই। চুরি করে দেশের জনগণের ট্যাক্স এর টাকা বিদেশে পাচার করে দিয়ে অভিজাত জীবনযাপন করেছেন দীর্ঘকাল। কিন্তু এর একটা বিহিত হওয়া দরকার, আওয়ামীলীগের সকল দুর্নীতিবাজদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।