বছর খানেক আগে নিরাপদ সড়কের দাবীতে বাংলাদেশে এক অভাবনীয় অভিনব শক্তিশালী ছাত্র আন্দোলনের জন্ম হয়েছিলো। স্কুলের ছাত্ররা স্কুল ব্যাগ কাঁধে-পিঠে নিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তাদের দুই সহপাঠীর হত্যার বিচার চাইতে রাজপথে নেমে আসে।
এই আন্দোলন তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ফ্যাসিস্ট শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দেয়। ছাত্ররা রাস্তায় রাস্তায় ড্রাইভারদের লাইসেন্স চেক করতে শুরু করে। অবাক হয়ে সবাই দেখতে পায় পুলিশের বড় কর্তা, এমপি, মন্ত্রী ও সামরিক বাহিনীর অফিসাররা কীভাবে লাইসেন্স ছাড়া রাস্তায় যানবাহন চালায়। ছোট ছোট বাচ্চারা এই বিস্ময়কর সত্য আবিস্কার করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা এই রাষ্ট্রের মেরামতের দাবীও তোলে। সারা দুনিয়ায় এই আন্দোলনের খবর ছড়িয়ে পড়ে সংবাদ মাধ্যমের মধ্য দিয়ে।
স্কুল ছাত্রদের এই অহিংস শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নেয়া স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের নির্মমভাবে পুলিশ এবং ছাত্রলীগের গুণ্ডাবাহিনী পিটিয়ে রক্তাক্ত করে আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেয়।
এই আন্দোলন নিয়ে আল জাজিরায় সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য নন্দিত ফটোগ্রাফার শহীদুল আলমকে গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশেরা পিটিয়ে রক্তাক্ত করে।
আমাকেও ৫ আগস্ট ঢাকাতে ডিজিএফ আই অফিসে দেখা করতে যাওয়ার জন্য ফোন কল করে চাপ দেয়া হয়। সেদিন থেকেই আমি আমার স্বাভাবিক জীবন হারাই।
ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন গত বছর থেমে গেলেও পরাজিত হয়নি। ঝরা পাতা মাটিতে মিশে যেমন ভবিষ্যতের মহীরুহের জন্য অযাচিত সার রেখে যায়, ঠিক তেমনি এই নিরাপদ সড়কের আন্দোলন সারা দুনিয়ার কর্তৃত্ববাদী শাসকদের বিরুদ্ধে জনগণের নুতন লড়াইয়ে প্রেরণা যোগাবে।