২০২০ সালে মুজিব বর্ষ ঘোষণা করেছিল আওয়ামীলীগ সরকার। শেখ মুজিবের জন্মের ১০০তম বছর ছিল ২০২০। এ বছর আওয়ামীলীগ মুজিবকে উদযাপন করবে, ২০২১ সাল পর্যন্ত।
বছরের শুরু থেকেই দেশ উত্তাল ছিল মুজিব বর্ষের উদ্বোধনে নরেন্দ্র মোদির আগমন নিয়ে। হেফাজতে ইসলাম শুরু থেকেই মাঠে ছিল যেন কোনো ভাবেই গুজরাটের কসাই নরেন্দ্র মোদি দেশে না আসতে পারে।
প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠনেরা বললো মোদির সাথে মুজিবের রাজনৈতিক আদর্শ, দর্শন বা শিক্ষার কোনো মিল নাই। এ কথাটা কতটা সত্য তা তারা জানে কি না সন্দেহ। মুজিবের ৪০ এর দশকের রাজনীতি দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যায় আরএসএসের সাথে মুজিবের রাজনৈতিক দর্শন আর শিক্ষার প্রচুর মিল আছে। আরএসএস হিন্দুদের জন্য ভারত, মুসলিমদের জন্য পাকিস্তান চেয়েছিল। আরএসএসের গোলওয়ালকার, সাভারকারদের লেখায় এর প্রমাণ পরিষ্কার। সাভারকার গ্রেফতার হবার পর সে মুচলেকা দিতে ইচ্ছুক বলে চিঠি দিয়েছিল ব্রিটিশদের যে তাকে মুক্তি দেয়া হলে সে দেশ ভাগের স্বপ্ন ভুলে যাবে, উলটা ব্রিটিশদের পক্ষে প্রচারণা করবে। আর সে করেছিলও তা-ই। সাভারকার, গোলওয়ালকারদের গান্ধীর প্রতি ঘৃণা এবং গান্ধী হত্যায় তাদের সম্পৃক্ততা সর্বজন বিদিত সত্য।
মুজিবও হিন্দুদের জন্য ভারত আর মুসলমানদের জন্য পাকিস্তান চেয়েছিলেন। জিন্নাহ আর সোহরাওয়ার্দীর মুসলিমলীগের কর্মী মুজিব কোলকাতা দাঙ্গায় সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহণ করেছিল। অখণ্ড ভারতে হিন্দুদের হাতে সংখ্যালঘু মুসলমানরা নিরাপদ না সেটা প্রমাণ করে কলকাতার দাঙ্গা লাগানো হয়েছিল যাতে অংশ নিতে মুজিব নিজেও কলকাতায় গিয়েছিল।
অবশ্য আওয়ামিলীগ মুজিবকে যে রূপে চিত্রিত করে, মুজিবের যে মিথ্যা রূপ তারা বানায় সেটার সাথে মোদির রূপের মিল নাই। তাদের মিথ্যাকে বাঁচাতে তারা কোনো চেষ্টাও করে নাই।
তারা ২০২১সালে মোদিকে এনেই ছাড়লো। কারণ? কারণ মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তাকে আনতেই হবে কারণ ভারত আমাদের বন্ধু দেশ। মোদি যেমন লোকই হোক, সে বিজেপির লোক হিসাবে আসছে না, ইত্যকার গোঁজামিল দিতে লাগলো তারা।
তবে এতে পানি ঢেলে দিয়েছে মোদি নিজেই। সে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে গেছে! সে নাকি সত্যাগ্রহ করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিল। ইতিহাসের মতে ভারতের সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল। তবে কি কারণে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করা মোদিকে গ্রেফতার হতে হবে? তারা কি করেছিল?
অনেকে বলেন ভারতের ডানপন্থীরা পাকিস্তানের সাথে যোগ সাজশ করে ইন্দিরা গান্ধীকে অপ্রস্তুত অবস্থায় যুদ্ধে যাওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিল যেন যুদ্ধে ভারত হেরে যায়। স্যাম মানেকশর মতে ইন্দিরা গান্ধী মার্চেই যুদ্ধ শুরু করতে চেয়েছিলেন। মানেকশর নিষেধে তিনি সঠিক সময়ের অপেক্ষা করেন।
এই যদি সত্য হয় তবে মোদিকে আসলে কি বলা যায়? আমাদের দেশে পাকিস্তানের যোগ সাজশে কাজ করাদের রাজাকার বলে। ভারতে বলে দেশদ্রোহী।