আমেরিকার রাজনীতিতে কর্পোরেটদের প্রভাব অত্যন্ত বেশী। বড় বড় টেক ফার্ম, ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানদের অনুদানে চলা আমেরিকার রাজনীতিবিদেরা তাদের দাতাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নেন না।
বাংলাদেশে এই ব্যাপারটি ছিল না কখনোই। বাংলাদেশে একটা ব্যালেন্স ছিল। কিছু শিল্পপতির হাতে ক্ষমতা ন্যস্ত ছিল না ব্যাপারটা পুরোপুরি সত্য না। ছিল। বসুন্ধরা গ্রুপ এসব কর্পোরেট লবিস্টদের একটি।
তবে শ্রমজীবী মানুষের সংগঠনগুলো মোটামুটি আদর্শবাদীই ছিল। ধরা যাক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কথা। পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ ছিল আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামায়াত, সমাজতান্ত্রিকদের মিলে মিশে বানানো একটা সংগঠন। এর কারণ হচ্ছে শ্রমিকরা কেউ কোনো একক দলের সমর্থক না। এরা সবাই মিলে শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে সোচ্চার ছিল।
২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপির হরতাল অবরোধ কর্মসূচীকে প্রতিহত করতে সরকার এই শ্রমিকদের ব্যবহার করে। বিনিময়ে তাদের নেতা শাহাজান খানকে মন্ত্রীত্ব দেয়া হয়।
তারেক মাসুদ হত্যার রায়ের পর ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে who is calling the shots here! সারা দেশ অচল করে দেয়া হয় এক খুনি চালকের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে। মন্ত্রী শাজাহান তখন এই সংগঠনকে ব্যবহার করে তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ আদায় করে নেয়। সরকারের বিভিন্ন নেতা তার সাথে দফায় দফায় আলোচনা করে এই অচলাবস্থা কাঁটায়।
এর পর থেকে এই শ্রমিকরা বেপরোয়া। দিনের পর দিন মানুষ হত্যা করার পরও তাদের কোনো শাস্তি হয় না।
পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন শ্রমিকদের লাভের জন্য কিছুই করে নি। চালকদের এবং শ্রমিকদের কোনো প্রকার চুক্তি ছাড়া, কমিশন বেইসড চুক্তিতে মালিকের গাড়ি চালানোর সুযোগ করে দেয়া হয়। এতে করে রাস্তায় কম্পিটিশন বাড়ে, যাত্রীর আশায় প্রতিযোগিতামূলক ভাবে গাড়ি চালায় শ্রমিকেরা। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে শিশুদের বিপক্ষে এদের লেলিয়ে দেয়া হয়।
দেশের অন্য মালিক হচ্ছে বেক্সিমকো। সালমান এফ রহমানকে শেয়ার বাজারে চুরি করার সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। সর্বশেষ টিকা নিয়ে বেক্সিমকোকে লাভ করার সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। ভারত থেকে কেনা টিকায় বেক্সিমকো টিকা-প্রতি ৭০টাকা লাভ করেছে সরকার থেকে।
টিকা কেনায় অন্য কাউকে সুযোগ না দেয়ায় বাংলাদেশ টিকা সংকটে পরেছে ভারতে করোনার প্রাদুর্ভাব বাডার সাথে সাথে। টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি আমরা। চীন, রাশিয়া বিনামূল্যে টিকা দিতে চেয়েছিল। সরকার ভারতের কাছ থেকেই টিকা কিনবে বলে জেদ ধরেছে, মানে বেক্সিমকো জেদ ধরেছে আর কি।
কর্পোরেটদের সুবিধা দিতে সরকার সালমান এফ রহমানকে কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই মন্ত্রী হবার সুযোগ করে দিয়েছে। সরকার নিজের ওয়াদা পালনে বদ্ধ পরিকর।