নারীর প্রতি সহিংসতার একটা অন্যতম উদাহরণ হচ্ছে বৈবাহিক ধর্ষণ। উন্নত দেশে এই সহিংসতার বিরুদ্ধে আইন এবং এক্টিভিজম আছে, বাংলাদেশে নাই।
বাংলাদেশে প্রগতিশীল সমাজের বড় একটা failure হচ্ছে নিজেদের আলোচনাকে খুব বেশি কোয়ালিফাইড করে ফেলা। নারীবাদি এক্টিভিস্টরা যখন আলাপ করেন মেরি ওলস্টনক্রাফট, শিমন দ্য বোভেয়ার ইত্যাদিকে উক্তি করেন। কিন্তু তারা যাদের জন্যে কাজ করেন বলে দাবি করেন তারা কজন মেরি আর শিমনের ব্যাপারে জানেন?
তাত্ত্বিক জ্ঞানেরও প্রয়োজন আছে। কিন্তু প্রায়োগিক ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক জ্ঞানের ভাষায় আলাপ করলে আপনি যাদের সাহায্য করতে চাচ্ছেন তারা খুব একটা উপকৃত হবে না। এই ব্যাপারটা কি তারা না বুঝে করেন, না জ্ঞানের গরিমায় অন্ধ, সেটা বুঝার কোনো উপায় নাই।
তো, বৈবাহিক ধর্ষণ। সামাজিক পরিমন্ডলে বৈবাহিক ধর্ষণের কারণ হিসাবে অনেক তাত্ত্বিক আলোচনা করা যাবে। পাওয়ার ডায়নামিক্স আসলেই অনেক বড় একটা কারণ। পুরুষরা তাদের কর্তৃত্ব ফলানোর জন্য স্ত্রীর না-কে না হিসাবে মেনে নেয় না। তবে এর পেছনে ধর্মীয় কারণটা অনেকেই ইগ্নোর করে বসেন। হাদীসে এসেছে-
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৭/ বিয়ে (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৩
৬৭/৮৬. কোন মহিলা তার স্বামীর বিছানা ছেড়ে রাত কাটালে।
৫১৯৩. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে তার সঙ্গে একই বিছানায় শোয়ার জন্য ডাকে, আর সে আসতে অস্বীকার করে, তাহলে সকাল পর্যন্ত ফেরেশতাগণ ঐ মহিলার ওপর লা‘নত বর্ষণ করতে থাকে। [৩২৩৭](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
অর্থাৎ আল্লাহই বলে দিয়েছে নারীর না বলার অধিকার নেই। তাদের যখন খুশি, যে ভাবে খুশি “গমন” করা যাবে।
দেন মোহর দিয়ে পুরুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের exclusive অধিকার কিনে নিতে পারে। আরেকটি হাদীস-
গ্রন্থের নামঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
হাদিস নম্বরঃ [3610]
অধ্যায়ঃ ২০/ লি’আন
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৩৬১০। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লি’আনকারীদ্বয়ের (লি’আন বাক্য পাঠের ব্যাপারে) হিসাব আল্লাহর দায়িত্ব। তোমাদের দু’জনের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী তার (তোমার স্ত্রীর) উপর তোমার কোন অধিকার নেই। লোকটি বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মালের (প্রদত্ত মাহর) কি হবে? তিনি বললেন, তুমি তোমার মাল পাবে না। যদি তুমি তার ব্যাপারে সত্যবাদী হও তাহলে তোমার দেওয়া সস্পদ ঐ বস্তুর বিনিময়ে বলে গণ্য হবে যা দ্বারা তুমি তার লজ্জাস্থান হালাল করেছ। আর যদি তুমি তার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে থাক তাহলে তার থেকে মাল ফেরত পাওয়া তো আরো দুরের কথা।
যুহায়র (রহঃ) তার বর্ণনায় বলেছেন যে, সুফিয়ান (রহঃ) সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) এর সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বলতে শুনেছেন।
ইসলামে বৈবাহিক ধর্ষণের কোনো বিধান বা শাস্তি নাই। এ কারণে মুসলিম দেশে বৈবাহিক ধর্ষণ কোনো অপরাধ না, আর নারীর প্রতি এ সহিংসতা কখনোই কমবে না।