সাংবাদিক সাগর রুনি হত্যাকান্ডের বিচার আজ পর্যন্ত হলো না। সাহারা খাতুন নিজেই গত হয়ে গেলেন, কিন্তু তার বেধে দেয়া ৪৮ ঘন্টা আর শেষ হচ্ছে না। ২০১২ থেকে ২০২১, এত বছরেও ৪৮ ঘন্টা পার হয় না আওয়ামীলীগের।
এটিএন বাংলায় চাকরি করা রুনি, আর মাছরাঙা টিভিতে কাজ করা সাগর এমন কোন অপরাধ করেছেন যার জন্যে আওয়ামিলীগ তিন মেয়াদ, আর তিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিলেও তার বিচার করতে পারে না?
তারা কি সরকারের কোনো দূর্নীতির গোমড় ফাঁস করতে চাচ্ছিলেন? না ভারতের সহায়তায় আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় বসার ব্যাপারে প্রমাণ সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন? কেন মামলার তদন্ত শুধু পেছায়?
কাকে বাঁচানোর ষড়যন্ত্র করছে সরকার? মানবাধিকার কমিশন কোনো কাজ করছে না কেন?
ডিবি ব্যর্থতা স্বীকার করার পর র্যাবকে তদন্তের ভার দেয়া হয়েছিল। সে থেকে আর তদন্ত আগায় নি! র্যাবকে সরকার তাদের গুন্ডাবাহিনী করে রেখেছে। শত্রুদের দিকে তাক করে কুকুরের মত তাদের লেলিয়ে দেয়, আর তারা গিয়ে শত্রুদের হত্যা করে আসে। অথচ বিএনপির আমলে র্যাব ছিল একটা এলিট, পেশাদার বাহিনী। তারা দেশে জঙ্গিবাদ নির্মুলে ভূমিকা রেখেছে তখন। আর এখন র্যাব র্যাপিড একশন লীগ হয়ে গেছে। র্যাবের প্রধান, সাবেক প্রধানদের কথা শুনলে মনে হয় রাষ্ট্রের কর্মচারী না, যেন আওয়ামীলীগের প্রেস কনফারেন্স চলছে!
আওয়ামীলীগের বিরোধীদের যেভাবে ইচ্ছা যখন ইচ্ছা ফোনে আড়িপাতা হয়। তাদের ব্যক্তিগত জীবন বলতে কিছুই নাই। তাদের বিব্রতকর ফোনালাপ কীভাবে জানি ফাঁস হয়ে যায়। কিন্তু এই তদন্ত হচ্ছে না?
নাগরিকের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ আওয়ামীলীগ সরকার। তারা শুধু নিজের নিরাপত্তা দিতে জানে! প্রধানমন্ত্রীর প্রোটোকল দেখলে মনে হয় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের প্রোটোকলের চেয়ে বেশি! আমেরিকার প্রেসিডেন্টরাও দোকানে গিয়ে হটডগ, আইসক্রিম খায়। আমাদের রাষ্ট্রনায়করা যেন রাজপরিবার। তাদের দেখা পাওয়া যায় না।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম গ্রামেগঞ্জে ঘুরে বেড়াতেন। জনগণের সাথে উনার সম্পৃক্ততা ছিল। তাকে ঘাতকরা হত্যা করার পরে তার জানাজায় বিশ্বরেকর্ড পরিমান লোক হয়েছে। অনেক নেতার জানাজার জন্য লোক খুজে পাওয়া যায় নি।
জনগণের সমর্থন ছাড়া কেউই ক্ষমতায় থাকতে পারে নি। সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ছাড়া জনগণের সমর্থন পায় নি কেউই। সাগর রুনির হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ন্যায়বিচারের উদাহরণ হয়ে থাকবে। কিন্তু আওয়ামীলীগ তাদের পিঠ বাঁচানোর জন্য এই বিচার শেষ করবে না।
জনগণের এই হত্যাকাণ্ড ভুলে যাওয়া সাগর রুনির আত্মাহুতির প্রতি বেইমানি হবে।