২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ছিল বিডিআর বিদ্রোহ। ২৫শে ফেব্রুয়ারী, ২০০৯ সাল বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন ছিল। মোট ৭৪ জন সামরিক ও বেসামরিক লোক নিহত হয়েছিলেন সেদিন।
দিনটিকে বিডিআর বিদ্রোহ বলে অভিহিত করলে ইতিহাসের সাথে বেইমানি করা হয়। পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে বিডিআর বিদ্রোহ বললে ব্যাপারটা শোভনীয় আর সভ্য শোনায়। আসলে ব্যাপারটা তেমন না। ৭৪ জনকে হত্যা, নারীদের শ্লীলতাহানি, নির্যাতন, লাশ নালায় ভাসিয়ে দেয়া এসব কোনোকিছুই বিদ্রোহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না।
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর তারা নির্বাচিতভাবে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের হত্যা করেছে বিডিআর বিদ্রোহের নামে। এদের অনেকেই ছিলেন জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযান চালানো, চৌকস সেনা কর্মকর্তা।
ভারতের নির্দেশে আওয়ামীলীগ নির্বাচনের জেতার বিনিময়ে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী, বাংলাদেশ রাইফেলসকে পঙ্গু আর সেনাবাহিনীকে আওয়ামীলীগপন্থী অফিসার দিয়ে সাজাতেই এই হত্যাকান্ড ঘটেছে। হত্যাকান্ড শেষে হাজার হাজার জওয়ানের পরিত্যক্ত পোশাক পিলখানায় রাইফেলস সদর দপ্তরে পাওয়া যায়। ভারত থেকে আসা এসব খুনীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় এসব পোশাক ফেলে যায়।
তথাকথিত বিদ্রোহের বিচার নিয়েও আছে অনেক প্রশ্ন। সেনা বা রাইফেলসের কাউকে তদন্ত করতে না দিয়ে আওয়ামীলীগ পন্থী পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহহার আকন্দকে দিয়ে। তার তদন্ত রিপোর্টে মূল হোতাদের কিছুই হয় নি। খুচরা অপরাধে পাইকারী শাস্তি দিয়ে দেয়া হয় সবাইকে।
ঘটনার দিন শেখ হাসিনার বিডিআর সদর দপ্তরে যাওয়ার কথা থাকলেও কেন যান নি তিনি? তিনি কি আগে থেকেই জানতেন এমন কিছু হবে? তিনি কি ইন্টিলিজেন্সের কোনো রিপোর্ট পেয়েছিলেন? পেয়ে থাকলে তিনি কিছু করেন নি কেন? বিদ্রোহের খবর পাওয়ার পর তারা কেন হার্ড লাইনে গেলেন না? কেন আলোচনার নামে সময় নষ্ট করলেন তারা? কেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী “বিদ্রোহী” জওয়ানদের সাথে বারবার আলোচনার চেষ্টা করলেন?
আব্দুল কাহহার আকন্দের রিপোর্টে এসবের কোনো তথ্যই আসে নি!
আমরা সবাই জানি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতি সেনাবাহিনীর খুব গাঢ় টান রয়েছে। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের খবরদারির বিরুদ্ধে সবার আগে ঢাল হয়ে দাঁড়াতো বলেই শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীকে cleansing করেছেন?
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় বলে সত্য প্রকাশ হচ্ছে না। কিন্তু একদিন সত্য প্রকাশ হবে। সূর্যের মত। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের হারানো গৌরব ফিরে পাবে।