কিশোরের জবানবন্দি পড়ে যারা আতংকিত হচ্ছেন তাদের বলছি। যাদের এভাবে তুলে নেয়া হয়েছে সবার ভাগ্যেই কী এই ঘটনা ঘটেনি? কিশোর টয়লেটে গিয়ে যে রক্ত দেখেছে সেটাতো অন্য কারো গা থেকেই ঝরেছে। যেই যন্ত্র দিয়ে মুশতাকের যৌনাঙ্গে ইলেক্ট্রিক শক দেয়া হয়েছে সেই যন্ত্র তো শুধু মুশতাকের উপরেই ব্যবহার করা হয়নি। শুধু মুশতাকই পিটানি খেয়ে প্যান্টে হাগুমুতু করে দেয়নি সকলেই দেয়। এই যন্ত্রাদি এই নির্যাতনের পদ্ধতি এইসব কিছুই সকলের জন্য সমান। শাসক এই ক্ষেত্রে সাম্যবাদী। এই ঘটনা কি জামায়াত, বিএনপির কর্মীদের ক্ষেত্রে ঘটে নাই? জঙ্গি নাম দিয়া যেইসব ইসলামপন্থীদের রিমান্ডে নিয়া নির্যাতন করা হইছে তাদের ক্ষেত্রে ঘটে নাই? ঘটছে। কিন্তু তাদের কথা কোনদিন ডেইলি স্টার বা প্রথম আলো ছাপে নাই।
এইসব কিছুই করতে শেখানো হয় পুলিশ স্কুলে। হ্যা, এসব আমার আপনার টাকাতেই। দেশের নাগরিককে এইভাবে ট্রিট করার জন্য তাদের ইনিডেমনিটি দেয়া আছে আইন করে।
আপনাদের প্রিয় বুদ্ধিজীবী বিশিষ্ট কমিউনিস্ট এম এম আকাশ এইসব যন্ত্রকে এইসব নীপিড়নকে বৈধতা দিতেই আওয়ামী লীগকে আহবান জানিয়ে বলেছিলো, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে যদি স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন বা দুর্বল করতে পারে তাতে আমাদের বাগড়া না দেয়া উচিৎ। উনারা আনন্দে বগল বাজাইতেছিলেন যে জামায়তকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। বগল বাজাইতেছিলেন যে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। উনারা বগল বাজাইতেছিলেন যে তাদের নেতা মনি সিংহ, খোকা রায় যেই জমিদারি হারাইছিলেন মুসলমান প্রজার কাছে। সেই বেদনায় ইসলামের উপরে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে গিয়া কমিউনিস্ট সাজছিলেন, সেই নেতাদের আজন্ম লালিত স্বপ্ন “ইসলাম কুপায়ে” তাদের স্বপ্ন সার্থক করবেন।
এই ইসলাম কুপানির বদ আকাঙ্খা থিকা যেই ফ্যাসিস্ট দানব বাংলাদেশের সো কল্ড বাম সুশীল স্যেকুলারেরা তৈরি করছে। রাষ্ট্র নামের প্রতিষ্ঠান যেভাবে ধ্বংস করছে সেই দানব সবাইরেই ধ্বংস করবে।
প্রতিহিংসা রাজনীতি না। মুসলমান প্রজার কাছে জমিদারি হারানোর প্রতিহিংসা আর তার সাথে ১৯৭৫ এর পনোরোই আগষ্ট ঘটার প্রতিহিংসা মিলে তৈরি হয়েছে এই ফ্যাসিস্ট দানব। এই দুই প্রতিহিংসাই একসাথে মিলে বাংলাদেশের রাজনীতিকে আজকের গন্তব্যে দাড় করিয়েছে।
এই প্রতিহিংসা একটা সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রকে একটা লড়াকু রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে তারপরে থামবে।
তবে মুশতাকের মৃত্যুতে দৃশ্যতঃ শাসক পিছু হটছে। কিশোরের জবানবন্দি দুই পত্রিকাতে প্রকাশই তার প্রমাণ। পত্রিকাগুলো ভয় ঝেরে ফেলতে শুরু করেছে। যারা মাঠে আছে তাদের উপরে আগের মতো নির্মম হচ্ছেনা পুলিশ। এই ফ্যাসিবাদের অবসানে জনশক্তির উত্থান ছাড়া আর কোন বিকল্প নাই। নিজদের রাষ্ট্রের উপরে নিজেদের অধিকার পুণঃ প্রতিষ্ঠাতেই আমাদের মুক্তি। কেউ আমাদের উদ্ধার করে দেবেনা। আমরা নিজেরা যদি এই দানবকে পরাস্ত করতে না পারি তাহলে আমাদের আশেপাশে মুশতাক কিশোরেরা এই ভয়ংকর গল্প শোনাতে থাকবে। তারপর একদিন হয়তো মুশতাক বা কিশোর হয়ে নিজের গল্প বলবেন।