আওয়ামী সেনাবাহিনী-ই হত্যা করেছে তনুকে

কুমিলা ভিক্টোরিয়া কলেজের মেধাবী ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুকে হত্যা করেছে বাংলাদেশের গর্বিত সেনাবাহিনী। এই কথা-ই এখন টক অফ দা টাউন। জন সাধারণের মনে আর কোনো সন্দেহই নেই যে এই খুন্টা করা হয়েছে সেনাবাহিনীর নির্দেশে এবং তাদের প্রত্যক্ষ্য ও পরোক্ষ মদদে। তাই খুনের এতদিন পরেও সেনাবাহিনীর ভয়ে বাংলাদেশের সরকার থেকে শুরু করে পুলিশ কিংবা র‍্যাব সবাই-ই বলা যায় চুপ।

সোহাগী জাহান তনুকে দরজা বন্ধ করে খুন করা হয় বলে দাবি করে তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তনু সেনানিবাসে পড়াশুনা করেছে। তাকে সবাই চিনত।’ তার অভিযোগ ‘সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠানে গান না গেয়ে পিকনিকে যাওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার চুল কেটে দেওয়া হয়েছে।’

মঙ্গলবার বিকালে তনুর পরিবারকে সিআইডি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ফাঁকে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। সেসময় তিনি আরো বলেন, ‘আমার মেয়েকে কারা খুন করেছে সেনাবাহিনীর সবাই জানে তবু কেউ কিছু বলছে না। আমরা এতদিন চুপ ছিলাম প্রশাসনের আশ্বাসে কিন্তু হত্যাকাণ্ডের দেড় মাসের বেশি হয়ে যাওয়ায় প্রশাসনের উপর আস্থা রাখতে পারছি না।’

তনুর মা আনোয়ারা বেগম আরো বলেন, আমার তনু বলতো আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করবেন না, তেমনি আমি আজ আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করি না । তাই বলছি সেনাবাহিনীর সদস্যরা তনুকে হত্যা করেছে। তনুর শরীর ক্ষত-বিক্ষত ছিল। এ কথা মনে পড়লে আমি অসুস্থ হয়ে যাই, প্রতি রাতে ঘুমের ওষুধ না খেলে ঘুম হয় না।

এদিকে তনুর বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘তনু হত্যাকাণ্ডের পর কেউ আমাকে একটু শান্তনা ও দেয়নি কিন্তু এখনো আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। সেনানিবাসে প্রবেশের পরিচয়পত্রের কার্ড থাকার পরও নানা কথা শুনতে হচ্ছে । আত্মীয়-স্বজন আসলে তাদের ঘন্টাব্যাপী বসিয়ে রাখা হয়। গ্রামের বাড়িতে আমাদের থাকতে দেওয়া হয় না। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এখনো আমাদের অনেকে সন্দেহ করছে। যাদের বাসায় গিয়ে আমার মেয়ে আর ফিরে নাই তারা জানে আর আল্লাহ জানে আমার তনুকে কারা হত্যা করেছে। ’

মঙ্গলবার বিকাল ৪ টা থেকে সিআইডি ঢাকার সিনিয়র বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দের নেতৃত্বে সিআইডি’র ঢাকার একটি টিম তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম, ভাই আনোয়ার হোসেন রুবেল, খালাতো বোন লাইজু জাহানকে সিআইডি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর আগে তনুর বান্ধবী সঙ্গীত শিল্পী শান্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিআইডি কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রনব কুমার রায় বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তনুর মা-বাবা সহ তাদের পরিবারকে জিজ্ঞসাবাদ করার জন্য সিআইডি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।

এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সকাল এগারোটায় ডেকে আনা হয়েছে তনুর স্কুল ও কলেজ জীবনের দুই সহপাঠি শামীম ও মাহমুদুলকে।তবে এখনও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।

উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের অলিপুর এলাকার কালো ট্যাংকি সংলগ্ন জঙ্গল থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ৫০ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

 

আমার লেখা এই রিপোর্টটি পোর্টাল বাংলাদেশে পূর্বে প্রকাশিত।

You may also like...

Read previous post:
রাজশাহীতে শিক্ষক খুন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়গুলো আগে অনেক বিচলিত করতো, এখন করে না। ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে...

Close