মানুষ চিরকাল অন্ধকারে থাকতে পারেনা। মানুষকে আলোতে আসতেই হয়। মানুষকে সামনে হাঁটতেই হয়। কয়দিন আগেও আরববিশ্বে যা নিষিদ্ধ ছিলো, তা এখন সেখানে বৈধতা পাচ্ছে। আরবের নারীরা এখন গাড়ি চালায়। আরবের নারীরা স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখে। আরব নারীদের বোরখা পরার বাধ্যবাধকতাও শিথিল করার ফতোয়া নাজিল হয়েছে। আরবের চলচ্চিত্র শিল্প আবার উন্মুক্ত হচ্ছে। আরবে মাইকে আজান দেবার প্রথা বন্ধ হবার আলোচনাও সামনে এসেছে।- এসবই আরবে বিশ্বের সাম্প্রতিক আলোচিত কিছু খবর- যা সারা বিশ্বের গণমাধ্যমে সাড়া জাগাচ্ছে।
কিন্তু, এসব খবরের পেছনের যে খবরটি চাপা থেকে যাচ্ছে, তা হলো- আরবের আসলে তেল ফুরিয়ে যাচ্ছে। তাই আরবরাও ধীরে ধীরে আলোতে আসতে শুরু করেছে। তারা বুঝতে পেরেছে, নিজেদের তেল ফুরালে আরব জনগণকে গণতন্ত্র আর মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা থেকে ফেরানো যাবেনা। আর আরবের তেল ফুরানোর সঙ্গে সঙ্গে ফুরিয়ে যাবে সারা বিশ্বে ওহাবি ইসলাম প্রতিষ্ঠা আর জিহাদের নামে ইসলামী সন্ত্রাস কায়েমের সকল প্রকল্প। আরবের তেল ফুরালে বাংলাদেশের মতো দরিদ্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগুলোও তখন আলোতে আসতে শুরু করবে। সেদিন আর বেশী দূরে নয়, যেদিন দরিদ্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রগুলো আর তাদের সমাজে ইসলাম কায়েমের জন্য আরবের অর্থ আসা বন্ধ হবে; জামাতি ইসলাম আর হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বে প্রতিষ্ঠিত লক্ষ লক্ষ কওমি মাদ্রাসাগুলো যেদিন বন্ধ হবে; দেশের নাস্তিক, লেখক, ব্লগার হত্যার জন্য যেদিন আর আরবের তেলবেচা অনুদান আসবে না; সেদিন সারাবিশ্বের দরিদ্র মুসলমানরাও সভ্য আর মানবিক হতে শুরু করবে।
অভিজিৎ রায়রা সেদিন আজকের মতোই মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকবে। অন্ধ, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, অমানবিক আর সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধদেরকে সেদিন আলোর পথ দেখাবে অভিজিৎ রায়দের আজকের লেখা। সেদিন তোমরা দেখে নিও,- অভিজিৎদেরকে এই পৃথিবী থেকে নিঃশেষ করা যায় না। অভিজিৎ রায়কে হত্যা- আজকের জন্মান্ধদের আলোতে আসার ভয় আর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এক মূর্খতা ছিলো।