বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ড ডাকাতির দুই বছর : সজীব ওয়াজেদ জয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তদন্তকারী সংস্থা

তথ্য প্রযুক্তির অপব্যাবহার করে বাংলাদেশ ব্যাংকার রিজার্ভ ফান্ডের ৮ শ ১০ কোটি টাকা (বৈদেশিক মুদ্রার হিসেবে আট কোটি ১০ লাখ ডলার) ডাকাতির দুবছর পূর্ণ হয়েছে। ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী এত শত কোটি টাকা লুট করা হলেও এনিয়ে রহস্যজনকভাবে নীরব ব্যাংক ডাকাত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা লুটের সঙ্গে তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের সংশ্লিষ্টতা ধরা পড়ে যাওয়ায় এ ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করছেন না শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা লোপাটের ঘটনা বিশ্বের ‘ব্যাংক ডাকাতি’র ইতিহাসে বড় ‘ডিজিটাল ব্যাংক ডাকাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার করে আটশ ১০ কোটি টাকা লোপাট হয়ে গেলেও ধরাছোয়ার বাইরে ব্যাংক ডাকাত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। শেখ হাসিনার অনিচ্ছাসত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এ ঘটনায় একটি মামলা হয়। মামলাটি সিআইডি তদন্ত করলেও গত দুই বছরেও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ড লুটের প্রধান সন্দেহভাজন আসামি সজীব ওয়াজেদ জয়কে সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ পায়নি তদন্তকারী কর্মকর্তারা। শুরু থেকেই এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন শেখ হাসিনা, তার ব্যাংক ডাকাত পুত্র জয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ডক্টর আতিয়ার রহমান। ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী ৮ শ ১০ কোটি টাকা লুট হলেও এ ঘটনা ২৯ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ধামাচাপা দিয়ে রাখতে সক্ষম হন শেখ হাসিনা। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা লুটের আলামত নষ্ট করতে কাউকে না জানিয়েই গোপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে দেয়া হয় ভারতীয় নাগরিক সজীব ওয়াজেদ জয়ের বন্ধু রাকেশ আস্তানার হাতে। কিন্তু ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রূয়ারি ফিলিপাইনের দ্যা এনকোয়েরার পত্রিকা এবং একটি টেলিভিশনে বাংলাদেশ ব্যাংক ডাকাতির ঘটনাটি নিয়ে ওইদেশে রিপোর্ট প্রকাশ করলে বাংলাদেশেও ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়।
দেশের একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা এ বিষয়ে একটি অতি গোপানীয় প্রতিবেদন তৈরী করে। একটি বিশেষ সূত্রে এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, ঠান্ডা মাথায় সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ডের ৮১০ কোটি টাকা লুটে নেয়া হয়। এ ঘটনা সাইবার হ্যাকিং ছিলোনা। এটি ছিল সুইপ্ট কোড ব্যবহার করে ঠান্ডা মাথায় ডিজিটাল উপায়ে ব্যাংক ডাকাতি। অত্যন্ত গোপনীয় এই কোড নাম্বার ছিল হাতে গোনা কয়েকজনের কাছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে এই কোড নাম্বার জানতেন সজীব ওয়াজেদ জয়। ফলে তৎকালীন গভর্নর ড. আতিয়ার রিজার্ভ লুটের ঘটনা নিজে জানার পরপরই অর্থমন্ত্রী আবুল মালকে না জানিয়ে তিনি প্রথমেই জানান শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনা এ নিয়ে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। বরং শেখ হাসিনা এ বিষয়ে ড. আতিয়ারকে চুপ থাকতে বলেন । এমনকি এ বিষয় অর্থমন্ত্রীকে না জানানোর জন্যও বলেন। ঘটনাটির সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয় জড়িত এই য়্যুহাতে এ ব্যাপারে জয়ের নির্দেশনা মতো কাজ করার জন্য ডক্টর আতিয়ারকে নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা । এরপরই অতি গোপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমের নিরাপত্তার নামে ব্যাংকের সবচেয়ে স্পর্শকাতর পদে নিয়োগ পায় সজীব ওয়াজেদ জয়ের বন্ধু রাকেশ আস্তানা।

You may also like...

Read previous post:
সত্য পল প্রকাশ ও সেই তরুনীর জবানবন্দীতে অসঙ্গতি (প্রথম-পর্ব)

টেররিস্ট অবজার্ভার এক্সক্লুসিভ গুলশান হামলায় জিম্মি দশা থেকে “বেঁচে” যাওয়া ভারতীয় নাগরিক সত্য পল প্রকাশ একজন “ভাগ্যবান” ব্যাক্তি। একই সাথে...

Close