বেশ কয়েকমাস আগে “ব্লাড ডায়মন্ড” ম্যুভিটা দেখেছিলাম। ডায়মন্ড কোম্পানীগুলো নিজেদের স্বার্থে কিভাবে স্থানীয় জনগনের মাঝে ভারী অস্ত্র তুলে দিয়ে তাদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করে কিভাবে কোম্পানীর স্বার্থ আদায় করে, একটি ডায়মন্ডের টুকরার জন্য কতগুলো মানুষের কলিজার টুকরো ঝরে পরে সেটাই হলো ম্যুভিটির প্রতিপাদ্য বিষয়। হয়ত ততকালীন ভারত বর্ষের ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী নিয়ে এমন একটি ম্যুভি তৈরী করা যাবে।
পশ্চিমারা কখনৈ নিজেদের স্বার্থ ছাড়া অন্য কোন মানুষ বা জাতির জন্য কিছু করেনি। বাহির থেকে দেখলে মনেহয় এদের মত মহামানব আর নেই। শুধু ঈমান থাকলে মনেহয় ভালো মুসলিম হয়ে যেত, অনেকেই বলেও তাই। আসলেই কি তাই??
একটু হিসেব করে, চিন্তা করে দেখলে দেখতে পারবেন, যতগুলো জায়গায় মুসলিম রা মারামারি করছে এর সবগুলোতেই পশ্চিমা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িত। আর প্রায় সবগুলো বিবাদমান দেশ, গোষ্ঠির মাঝে ভারী অস্ত্রের সরবরাহ করে মূলত এই খোলসধারী পশ্চিমারা। এরা নিজেদের প্রয়োজনে “আল কায়েদা” তৈরী করে তাদের অস্ত্র দিয়ে জংগী তৈরী করে, আবার এই জংগীদের নির্মূল করতে পাকিস্তান সহ অন্য আরব দেশে অস্ত্র বিক্রি করে, আবার এরাই অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করে অন্যায় চুক্তি করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ততপর হয়। যেখানে স্বার্থ নেই সেখানে এরা কখনই সময় নষ্ট করে না।
বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় পশ্চিমাদের বিবৃতি, উদ্বেগ প্রকাশ আমার কাছে আইওয়াশ ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না। চীনের উত্থানে যুক্তরাষ্ট্রের ভরসা তুলনামূলক ভারত। আবার ভারত সাগরে নজরদারী বাড়াতে এই অন্চলে প্রবেশ করার উপায় দুটি।
১) অনৈতিক চুক্তি
২) জংগী ইস্যু তৈরী করা।
অনৈতিক চুক্তির জন্য দরকার অস্থিতিশীল পরিবেশ। অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করে অনৈতিক সুবিধা আদায়ই হলো পশ্চিমাদের ভাষায় “দাতা গোষ্ঠির দান”। অস্থিতিশীল পরিবেশে দূর্বল ও জনসমর্থনহীন ক্ষমতালোভী সরকারগুলোই হয়ে পরে এদের উত্তম টার্গেট। স্বার্থন্বেষী পশ্চিমারা কখনই দেশপ্রেমিক, জাতিয়তাবাদী সরকার গুলোকে সহজে সমর্থন দিতে চায় না।
জংগী ইস্যুঃ জংগী ইস্যু তৈরীর জন্য বাংলাদেশ এখন খুবই উর্বর ভূমি। ইতোমধ্যে অভিজিত হত্যাকান্ডে আল কায়েদার নাম উঠে এসেছে সেটি আবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউজেও এসেছে। তারমানে হলো বাংলাদেশকে নিয়ে পশ্চিমাদের পরিকল্পনার দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়ে গেছে।
আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় থাকা যতটানা শেখ হাসিনার কৃতিত্ব তার চেয়ে বেশি কৃতিত্ব পশ্চিমা গোষ্ঠির অনৈতিক ততপরতা। ভারত এবং পশ্চিমাদের অনৈতিক দাবিগুলোকে বৈধ চুক্তির মাধ্যমে জায়েজ করে নেয়ার জন্য আওয়ামী সরকারের মত উপযুক্ত এই মুহুর্তে আর কেউ নেই। আওয়ামীলীগের চেয়েও যদি কোন পক্ষ আরো বেশি সুবিধা দিয়ে ক্ষমতা ভাগিয়ে নিতে পারে অথবা যদি আওয়ামী লীগ অনৈতিক কোন দাবি মেনে না নেয় তাহলে সেটি হতে পারে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার পরিবর্তনের একটি উপায় অন্যথায় এই মুহুর্তে বিবৃতি বলেন আর জাতিসংঘের দৌড়ঝাপ বলেন সবই হলো বিশেষ গোষ্ঠির স্বার্থে।
আওয়ামীলীগের বর্তমান চরিত্র চলমান থাকলে এমনও এক সময় হয়ত আসবে যখন আওয়ামীলীগের দেশপ্রেমিক অংশটুকু আর আওয়ামীলীগ কে বিশ্বাস করবেনা। তখন হয়ত পরিবর্তন আসতে পারে নতুবা যদি হুজুগে বাংগালী কখনও জেগে উঠে দৌড় দেয়।
সেই স্বপ্ন সত্যি হোক, এই কামনা করি।
অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে, আওয়ামীলীগই বলা শুরু করছে, “রাজাকার (?) ঈমানদার হতে পারে, দেশপ্রেমিক হতে পারে, দেশের আইনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশ ও ইসলামের জন্য মৃত্যুকে সাদরে গ্রহন করতে পারে, কিন্তু আওয়ামীলীগ কখনও গনতান্ত্রিক হতে পারে না”
আওয়ামীলীগ গনতান্ত্রিক হোক, রাজাকার দেশপ্রেমিক হোক, মেরুদন্ডহীন বিএনপি সোজা হোক, জামায়াতের বন্দী দশার অবসান হোক, এরশাদ সুস্থ হোক, দেশের মানুষের মানুষের জন্য সোনার বাংলার জমিন নিরাপদ হোক, সবাই মিলেমিশে একাকার হোক, শান্তিপ্রিয় মানুষের বিজয় হোক, এই কামনাই করি।