জঙ্গিবাদ সিম্পটম, মূল সমস্যায় শাসক নিরব, কিন্তু কেন?

গোটা বিশ্বেই সাম্প্রদায়িক ভাবে খুবই খারাপ সময় চলছে। ঠিক এমন সময়ে হত্যা-গুমের সংবাদ বাংলাদেশকেও তটস্থ করে তুলেছে। সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব ইস্যুতে একজন শিক্ষককেও হত্যার হুমকি দেয়া হল। এর আগে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘনের মারাত্মক অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা চলছিলো। ঐ হত্যার হুমকি শৃংখলাপূর্ণ সামাজিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে স্যাবোটাজের সুযোগ করে দিয়েছে। পুরো দৃশ্য পাল্টে গেছে। ভিক্টিম গোষ্ঠীই এখন জঙ্গি হিসেবে ট্রিটেড হতে শুরু করেছে। অধিকার আদায়ে শৃংখলাবদ্ধ সাধারন মানুষ যাবে কোথায়? কিছুদিন আগেও আরেকজন ব্লগার খুন হলেন। এইসব খুনের ঘটনা ব্যাক্তির অপরাধের মাত্রাকে গৌণ করে দিয়েছে। ফলে একদিকে ধর্মীয় ভাবে আঘাতপ্রাপ্তরা ভীত হয়ে নিশ্চুপ অবস্থানে চলে যাচ্ছেন। অন্যদিকে ধর্মীয় ভাবে নোংরা কায়দায় সমালোচিত সম্প্রদায়টি নতুন করে সমালোচনার শিকারে পরিনত হচ্ছে।
অপদস্ত-খুন-অপদস্ত-… -এই সাইকেলে চলছে অপরাধ পরিক্রমা। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট বিপরীত মূখী দুইটি উগ্র মতাবলম্বী গোষ্ঠী! অথচ, এই সাইকেলের পুরো ভিক্টিম হলেন সাধারন মানুষ, বিশেষত সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়!
অথচ, খুব সহজে জঙ্গিগুলোকে সামাজিক ভাবেই দমন করা সম্ভব। বাংলাদেশের মত উদার মানসিকতার দেশে জঙ্গিবাদ আমদানী ভাবাই যেতনা। সেখানে জঙ্গিদের কাজে নিরব দর্শক হয়ে গেছে নিপীড়িত মানুষ।
রাষ্ট্রের আইনে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান আছে। সকল সম্প্রদায়ের সমান ও স্বাধীন ধর্মীয় অধিকার স্বীকৃত হয়েছে সংবিধানে। এই দিকগুলো মেন্টেন করা হলেই ষড়যন্ত্রকারী জঙ্গিরা অস্থিরতার ‘সুযোগ নিতে পারতো না’। রাষ্ট্রের নিরবতার কারনেই মানুষের মনে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। আর জঙ্গিরা এই ক্ষোভকে পুঁজি করে মানুষের আবেগকে অবৈধ একশনের দিকে প্রভাবিত করতে তৎপর হয়েছে।
অথচ, যে ক্রিমিনালিটি থেকে এইসব হত্যাকান্ডের পথ সৃষ্টি ও প্রশস্ত হচ্ছে ঐ ক্রিমিনালরা সহজেই আইনের হাতে আটক হতে পারতো। তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা মুখস্ত করিয়ে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের ওয়াদা নিয়ে ছেড়ে দেয়া যেত। এতে এই ধরনের ক্রিমিনালরা রাষ্ট্রীয় আনুগত্য প্রকাশে বাধ্য থাকত। অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হতে পারত। সমাজের মানুষ অনাকাংখিত আঘাত থেকে রক্ষা পেত। সরকারও সাধারন নাগরিকদের নিকট প্রশংসিত হতে পারতো। অথচ বাক স্বাধীনতাকে অপব্যবহার করে যা ইচ্ছা যেমন ইচ্ছা সেভাবে সম্প্রদায়গত আঘাত ও কটুক্তি করা হচ্ছে। স্বাধীনতা মানে ব্যাক্তিকে আঘাত করা নয়, এখানে মানহানির মত অপরাধ সাব্যস্তের বিধান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের চালক, তার সমালোচনারও একটা সীমা আছে। এখানেও স্পষ্ট ভাবেই প্রতিরোধী বিধান কার্যকরের বিষয়টি প্রজোয্য। একই ভাবে কোন সম্প্রদায়, দল, জাতিসত্বাকে মানহানিও গ্রহনযোগ্য নয়।
ব্যাক্তি ও প্রধানমন্ত্রীর মান সংরক্ষনের বিধান যেভাবে কার্যকর হয়েছে একই ভাবে সম্প্রদায়গত মান রক্ষার সাংবিধানিক বিধানও কার্যকর করা সময়ের গুরুত্বপূর্ণ দাবি।

You may also like...

Read previous post:
আওয়ামীলীগ থেকে একশ হাত দুরে থাকুন

আওয়ামীলীগ নামক পশুলীগ দলটা মানবতার জন্য হুমকি, কুকুরকে বিশ্বাস করলেও এদেরকে কেউ বিশ্বাস করবেন না কুকুর অনেক সময় ঘেউ ঘেউ...

Close