“বিয়ের আরেক নাম যখন আতংক”

কয়েকদিন আগে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়েছিলাম বেড়াতে। তার বাসায় এক দম্পতি ভাড়া থাকে।আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সেই আত্মীয়া ভাড়াটিয়া ঘর থেকে এলো, সঙ্গে ভাড়াটিয়া  বউটিও আছে। অল্পবয়সী এক মেয়ে, অবিরাম কেঁদে চলেছে। সে নাকি সুইসাইড করতে গিয়েছিল।কারণ জানতে চাওয়া হলে সে তার স্বামী সম্পর্কে যা বললো, তা এ যুগে দাঁড়িয়ে বিশ্বাস করতে সত্যিই কষ্ট হয়।

তার স্বামী তাকে সবসময় সন্দেহ করে, সন্দেহের মাত্রা এতটাই বেশি যে এ যুগেও মেয়েটির কোন মোবাইল ফোন নেই,তাকে তার বাড়ির কারো সাথে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়না,বাসা থেকে বের হওয়া বারণ।ভাবতে অবাক লাগে তার স্বামী ভদ্রলোকটি একটি নামকরা স্কুলের শিক্ষক!! তিনি যে কি শিক্ষা দিতে পারেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।মেয়েটি এবার মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছে কিন্তু সব সার্টিফিকেট তার স্বামীর কাছে যেন সে কোথাও চাকরীর আবেদন করতে না পারে!!!

শুনলাম, মেয়েটি একবার তার ভাইয়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে বাপের বাড়ি যাবে,যাওয়ার আগে তার স্বামী ভদ্রলোক তাকে নগ্ন করে সার্চ করেছে কোন টাকা পয়সা আছে কিনা! তাদের তিন বছরের সংসার! মেয়েটি এর আগে আরও কয়েক সুইসাইড করতে গিয়েছিল।

সত্যিই এমন একটা  অমানুষের সাথে তিন বছর তো দূরের কথা, তিন দিনও থাকা সম্ভব না। কিন্তু নিজের জীবনকে শেষ করে দেয়া কোন সমাধান হতে পারে না।

ভাবতে অবাক লাগে এই যুগেও এমন স্বামীরা থাকে যারা বিয়ের সংজ্ঞাই পালটে দেয়, আতংকে পরিণত করে “বিয়ে” শব্দটিকে। আরো অবাক লাগে যখন দেখি, এ যুগেও মেয়েদের কি অসীম সহ্য ক্ষমতা, হোক সে শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত, অবাক লাগে যখন দেখি তাদের কাছে এ সবকিছুর একমাত্র সমাধান হয় “মৃত্যু”।

আর কবে বুঝবে তুমি মেয়ে? কবে প্রতিবাদ করবে? কবে নিজেকে মানুষ ভাবতে শিখবে?কবে? আরো কতটা লাঞ্ছিত হলে তুমি রুখে দাঁড়াবে, ঠিক কতটা!!

You may also like...

Read previous post:
কাঠমোল্লা সমাজের চক্ষুশূল যখন অভিনেতা মোশারফ করিম

‘অন্যান্য অপরাধের মতো ধর্ষনও একটা অপরাধ এবং অনেক জঘন্য অপরাধ’ এই সামান্য শিক্ষা যার ভেতর নেই তার দ্বারাই ধর্ষন নামক...

Close