আমি তখন এতই বোকা ছিলাম যে জুতার ফিতাও বাধতে পারতাম না। আমার জুতার ফিতা খুলে গেলে কোচ আমার ফিতা বেধে দিত এবং আমি যেখানে যেভাবে খেলতে চাই সেভাবেই খেলতে দিত। এই সুবিধা অন্যরা পেত না। আমি ইচ্ছা করলেই অন্য খেলা যেমন ক্রিকেট, ফুটবল, বক্সিং ইত্যাদি দেখতে যেতে পারতাম। আমি ক্যান্টিন থেকে যা ইচ্ছা খেতে পারতাম। এককথায় এখানে আমার ১০০% সুবিধা ছিলো। সারাদিন ভালোই কাটতো কিন্তু রাত হলেই আমি বিছানাতে বসে বসে কান্না করতাম। কিছুতেই এখানে মন বসাতে পারতাম না। সব সময় বাড়ির কথা মনে হত। কিছুদিন পরে আমার খাতা কলমে’র পরীক্ষায় বসতে হলো। আমি তো কি বই পড়তে হবে তাই জানিনা এখন কি আর করব বসলাম পরীক্ষায়। প্রশ্ন দেওয়ার পর তো দেখি কিছুই বুঝি না। প্রশ্ন দেখেই আমি কাদতে শুরু করলাম। টীচার এসে আমাকে তখন বলল যা পার লিখ আর না পারলে খাতা রেখে দাও লিখার দরকার নেই। আমি কিছুই লিখিনি এভাবেই খাতা জমা দিলাম। তারপরেও আমি পাশ করলাম। আমি জানিনা কেন/কিভাবে আমি সব পাশ করতে লাগলাম। এরপর আমার ফিটনেস পরীক্ষা। এখানে সব কিছুই ঠিক ছিলো শুধু আমার উচ্চতা নিয়ে সমস্যা ছিলো। কারন তখন আমার উচ্চতা ছিলো অনেক কম। তারপরে সবাই কিভাবে যেন আমার উচ্চতাও বাড়িয়ে দিলো। (আমার উচ্চতা বাড়েনি, খাতা কলমে বেড়েছে।) যা হোক এখানেও আমি টিকে গেলাম। আর কোন পরীক্ষা নেই, সব পরীক্ষাতে আমি পাশ করেছি। এখন ট্রেনিং শেষ। সবাই বাড়িতে যাবে তারমানে আমিও যাবো। আমার তখন অনেক আনন্দ। প্রথম দিনেই অনেকের অভিভাবক এসে তাদের নিয়ে গেল। আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম। মনে করলাম আমার বাসায় খবর পায়নি তাই আমাকে কেউ নিতে আসবে না। পরেরদিন দুপুর হয়ে গেলো কেউ নিতে আসলো না। আমি বারান্দাতে দাঁড়িয়ে কাদতে লাগলাম। শেষ বিকালে আমাকে নিতে আসলো। আমি খুশিতে নাচতে নাচতে তাদের সাথে বাড়ি গেলাম। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম যে এই জীবনে আমি আর এদিকে আসবো না। প্রায় ১ মাস পর বি.কে.এস.পি থেকে চিঠি এসেছে। আমি নাকি সিলেক্ট হয়েছি। তখন আমি সবাই কে বললাম আমি আর যাবো না। এর পর আমাকে বুঝিয়েও আর ওখানে নিতে পারেনি।
আমি ওই জায়গাকে সবচেয়ে বেশি ভয় পেতাম ওই মিস কে। কেন ভয় পেতাম তা বলব না যদি কখনো তিনি এই লিখাটা পড়ে তাহোলে উনি হয়তো রাগ করবেন।