স্যাটেলাইট সমাচার

প্রথমত সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী এটাই বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট নয়। এর আগে বাংলাদেশের বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও এমনি একটি ন্যানো স্যাটেলাইট বানিয়ে ইতিমধ্যেই তা কক্ষপথে পাঠিয়েছে। বর্তমানে অন্য দেশকে স্যাটেলাইট বাবত ভাড়া দিতে হয় বছরে ৮০ কোটি টাকা। এখন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কারনে আমাদের বছরে ৮০ কোটি টাকা বেঁচে যাবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের আয়ু ১৫ বছর। তাহলে ১৫ বছরে বাঁচবে ১২ শ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের পিছনে খরচ হচ্ছে ৩ হাজার কোটি টাকা। তাহলে বাকি ১৮শ কোটি টাকা।?

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ক্ষমতা ৪০ ট্রান্সপন্ডার, আমাদের চাহিদা ২০ ট্রান্সপন্ডার। সরকার বলছে উৎক্ষেপিত কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ২০ ট্রান্সপন্ডার বাণিজ্যিক ভাবে ভাড়া দিয়ে মিলিয়ন-মিলিয়ন ডলার আয় করবে।

আমাদের স্যাটেলাইটটি বহন করে নিয়ে যাবে একটি রকেট। অপর দিকে কিছু দিন আগে ভারত এক রকেট দিয়ে একসাথে ১০৪টি স্যাটেলাইট মহাশূন্যে স্থাপন করেছে। ফলে আমাদের ট্রান্সপন্ডারের চেয়ে ভারতের ট্রান্সপন্ডারের ভাড়া হবে অনেক কম। তাহলে বেশি ভাড়ায় আমাদের ট্রান্সপন্ডার কে ভাড়া নিবে?

দ্বিতীয়ত সরকার বলছে,এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ফলে বাংলাদেশের সন্মান অনেক উচ্চতায় চলে যাবে। উল্যাখ্য যে, পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র দেশ ইথিওপিয়াও নিজেরা স্যাটেলাইট স্থাপন করে অনেক আগে ‘এই উচ্চতায়’ চলে গেছে। বর্তমান সময়ে প্রায় ১৭০০ স্যাটেলাইট পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরছে। বাংলাদেশের স্যাটেলাইট এখানে শুধু একটা সংখ্যা। 

শুনুন বাংলাদেশের এই স্যাটেলাইটের জন্য কোনো নিজস্ব অরবিট বরাদ্দ নাই। এর আগে আইটিইউ বাংলাদেশকে নিরক্ষ রেখার ১০২ ডিগ্রি স্লট বরাদ্দ দেয়। কিন্তু প্রভাবশালী দেশের বাধার মুখে তা বাতিল হয়। বিকল্প হিসেবে ৬৯ ডিগ্রিতে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রস্তাব দেওয়া হয় বাংলাদেশকে। কিন্তু তাতেও আপত্তি তোলে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন। পরে রাশিয়ান কোম্পানী ইন্টারস্পুটনিকের নিজস্ব ১১৯.১ ডিগ্রির স্লট প্রায় ২৮ মিলিয়ন ডলারে ১৫ বছরের
জন্য ভাড়া নেয় বাংলাদেশ।

চিন্তা করুন আমরা যখন স্যাটেলাইট পাঠানোর জন্য এতো ফাল পারতেছি সেই একই যুগে অন্য কেউ আমাদের কাছে মহাকাশ বিক্রি করছে !! তারা মহাকাশের মালিক হলো আর আমরা হলাম ক্রেতা তাই দেশ ব্যাপী ১৬ কোটি+ টাকার আতশবাজি ফুটানোর ব্যবস্থা করা হইতেছে…

এছাড়াও, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসি।

তথ্যসূত্র #উইকিপিডিয়া

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে শেয়ার বাজার ও ব্যাংকের লাখ কোটি টাকা উদ্ধার করতে পারলে আমাদের কোন প্রকার ঋণ গ্রহণ না করেই নিজেদের অর্থেই এমন ১০০ টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম হতাম,
এখন ২০০০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ও আমাদের ঋণ গ্রহণ করতে হচ্ছে।

You may also like...

Read previous post:
ফরহাদ মজহারের জুজু পলিটিক্স====

Close